কলকাতা: গত দু’টো বছর সে ভাবে পুজোয় আনন্দ করে উঠতে পারেননি সাধারণ মানুষ। মাথায় করোনার খাঁড়া ঝুলছিল যে। এ বার করোনার আতংক নেই। তাই মানুষ চূড়ান্ত আনন্দে মেতে ওঠার অপেক্ষায়। কিন্তু সেখানেও চিন্তা যাচ্ছে না আবহাওয়ার জন্য। অনেকেই ভাবছেন, অক্টোবরের শুরু বলে এ বার হয়তো পুজো ভেসে যাবে বৃষ্টিতে।
কিন্তু স্বস্তির খবর হল, এ বার পুজোয় তুমুল বৃষ্টি হতে পারে, এমন কোনো তথ্য আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের কাছে এসে পৌঁছোয়নি। বরং যে তথ্য আপাতত আছে, তার থেকে মনে করা হচ্ছে যে পুজোয় এ বার বৃষ্টি কম, রোদের দেখা বেশি পাওয়া যাবে।
এমনিতে বর্তমান যুগের আবহাওয়া এতটাই খামখেয়ালিতে ভরা যে এক সপ্তাহ পরের আবহাওয়ার পূর্বাভাস করতেই কালঘাম ছুটে যায়। তাই নয়-দশ পর কী রকম আবহাওয়া থাকবে, সেটা নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা এত তাড়াতাড়ি সম্ভব নয়। কিন্তু প্রাথমিক ইঙ্গিত তো পাওয়াই যায়। সেই প্রাথমিক ইঙ্গিতাই বড়ো উৎসাহব্যঞ্জক।
এ বার উত্তর ভারত থেকে বর্ষার বিদায়যাত্রা গত পাঁচ-ছয় বছরের মধ্যে সব থেকে তাড়াতাড়ি শুরু হতে চলেছে। এখন রাজস্থান, পঞ্জাব এবং গুজরাতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে শুষ্ক উত্তুরে হাওয়া বইতে শুরু করেছে। আকাশ মেঘমুক্ত। ভোরের দিকে হালকা শিরশিরানি ভাব পাওয়া যাচ্ছে।
গত কয়েক বছরের ধারা বলছে, উত্তর ভারত থেকে বর্ষার বিদায়যাত্রা শুরু হওয়ার দিন দশেকের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ থেকেও পাত্তাড়ি গোটায় বর্ষা। এ বার সেই রকম কিছু হবে, নাকি বর্ষা আরও কিছুদিন থেকে যাবে, সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে একটা বিষয় আন্দাজ করা যাচ্ছে যে মহালয়ার পর থেকেই পশ্চিমবঙ্গেও মৌসুমি বায়ু দুর্বল হতে শুরু করবে।
এ বছরের বর্ষাটা দক্ষিণবঙ্গের জন্য বিশেষ ভালো যায়নি। জুন এবং জুলাই কার্যত অনাবৃষ্টিতে কেটেছে। আগস্ট এবং সেপ্টেম্বরে বৃষ্টির দাপট অনেকটা বাড়লেও এখনও রাজ্যের বেশ কিছু জেলায় বৃষ্টির অবস্থা খুবই শোচনীয়।
কিন্তু এটাও ঠিক যে পুজোর সময় কেউ চান না বৃষ্টি আনন্দটা মাটি করে দিক। কারণ পুজোর এই চারটে দিনের দিকে তাকিয়ে থাকেন অনেক ছোটোখাটো ব্যবসায়ী, অনেক গরিব মানুষ। বৃষ্টি পুজো ভাসিয়ে দিলে আমাদের হয়তো জীবনে বিশেষ কোনো প্রভাব পড়বে না, কিন্তু ওই মানুষগুলোর মাথায় হাত উঠবেই। তাই টুকটাক বৃষ্টি হলেও কখনই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া থাকা বাঞ্ছনীয় নয়।
তাই আনন্দের খবর হল, পুজো এ বার দুর্যোগহীনই থাকতে চলেছে। অল্পস্বল্প, বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতেই পারে। কিন্তু তা পুজোর আনন্দ মাটি করবে না। দু’বছর পর অবশেষে পুজোয় চূড়ান্ত হুল্লোড় করার সুযোগ এসেছে। এ বার সবাই চেটেপুটে সেই আনন্দ উপভোগ করুন। খুব ঘুরে বেড়ান। পুজোর আনন্দ একেবারে চেটেপুটে লুটে নিন।
ছবি: মধ্যরাতে কুমোরটুলি থেকে বালিগঞ্জ কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের মণ্ডপের পথে মা দুর্গা। রাজীব বসুর তোলা ছবি।
আরও পড়তে পারোর
পুজোয় ক’টা দিন নিরিবিলিতে কাটাতে চান? গন্তব্য হোক দরিয়াপুরের মৃন্ময়ী কুটির
পুজোয় অদূরে ৫ / দেওঘর-মধুপুর-গিরিডি