ভ্রমণঅনলাইন ডেস্ক: আর দিনতিনেক পরেই শুরু হচ্ছে শ্রাবণীমেলা। এ বছর শ্রাবণীমেলার দিনগুলোয় জল্পেশ মন্দিরের গর্ভগৃহে ঢুকতে পুণ্যার্থীদের কোনো বাধা থাকছে না। হাইকোর্টের নির্দেশেই ওই সময় মন্দিরের গর্ভগৃহ পুণ্যার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে জল্পেশ মন্দির ট্রাস্টি বোর্ড। আগামী ২১ জুলাই গুরুপূর্ণিমার দিন থেকে জল্পেশে শুরু হচ্ছে শ্রাবণীমেলা।
মন্দির ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক গিরিন্দ্রনাথ দেব জানিয়েছেন, এবার মেলার দিনগুলোয় গর্ভগৃহে ঢুকে শিবলিঙ্গে জল ঢালতে পারবেন পুণ্যার্থীরা। আদালতেরই নির্দেশে গত দু’ বছর শ্রাবণীমেলার সময় জল্পেশ মন্দিরের গর্ভগৃহে পুণ্যার্থীদের ঢোকা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
উত্তরবঙ্গের এক অতিপরিচিত পর্যটনকেন্দ্র এবং প্রসিদ্ধ তীর্থস্থান জল্পেশ মন্দির। জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি শহর থেকে এই মন্দিরের দূরত্ব ৯ কিমি, জলপাইগুড়ি সদর থেকে ২২ কিমি এবং গোরুমারা অভয়ারণ্য থেকে ৩৩ কিমি দূরে। শ্রাবণীমেলার সময় মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে, এই খবরে পর্যটন ব্যবসায়ী-সহ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা খুশি। তাঁদের আশা, এবার মেলার সময় মন্দিরকে ঘিরে তাঁদের ব্যাবসা বাড়বে।
শ্রাবণীমেলার সময় প্রতি বছরই প্রচণ্ড ভিড় হয় জল্পেশ মন্দিরে। ২০২২ সালেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ওই সময় মন্দিরের গর্ভগৃহে ঢুকতে গিয়ে ভিড়ের চাপে এক পুণ্যার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনিই আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন। তখন পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে জল্পেশ মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করে আদালত। মন্দিরের বাইরে থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে শিবলিঙ্গে জল ঢালার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেই ব্যবস্থা ২০২৩ সালেও চালু ছিল।
জল্পেশ মন্দির কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনার জন্য কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। হাইকোর্ট কিছু শর্তসাপেক্ষে শ্রাবণীমেলার সময় মন্দিরের ভেতর পুণ্যার্থীদের প্রবেশে অনুমতি দিয়েছে। আদালতের নির্দেশ মেনে মন্দির কমিটির তরফে এবার মন্দিরে প্রবেশের ক্ষেত্রে নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷
ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক গিরিন্দ্রনাথ দেব জানিয়েছেন, মন্দিরের ভেতর কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে অত্যাধুনিক যন্ত্র বসানো হয়েছে। পুণ্যার্থীদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে মন্দিরের বাইরে একাধিক জোন তৈরি করা হচ্ছে। সেই জোন থেকে প্রতিবারে ৫০ জন পুণ্যার্থীকে মন্দিরে ঢোকানো হবে। ৫০ জন মন্দিরে ঢুকে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গেট বন্ধ হয়ে যাবে। ওঁরা বাইরে বেরিয়ে এলে পরবর্তী ৫০ জনকে মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হবে। এভাবেই দফায় দফায় পুণ্যার্থীদের ঢোকানো হবে। এ সব কিছুই করা হচ্ছে হাইকোর্টের নির্দেশে।
এ ছাড়াও মন্দিরের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে প্রায় ১০০টি সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে। শ’পাঁচেক স্বেচ্ছাসেবক মন্দিরের ভেতরে ও বাইরে মোতায়েন থাকবেন। এ ছাড়াও থাকবে কুইক রেসপন্স টিম, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিম।
আরও পড়ুন