ভ্রমণঅনলাইন ডেস্ক: করোনা-আবহে ভ্রমণ কার্যত থমকে গিয়েছিল। মানুষ ঘরবন্দি। ফলে পর্যটনের সমস্ত ক্রিয়াকলাপ বন্ধ। পর্যটনশিল্পের সঙ্গে যুক্ত যাঁরা, তাঁদের মাথায় হাত পড়েছিল। দেশে লকডাউনের পর আনলক পর্ব শুরু হতেই একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে পর্যটনশিল্প। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়েও থমকে যায়নি পর্যটন। মানুষ বুঝতে পেরেছেন, সব কিছু নিয়মনীতি মেনে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে যদি বেরিয়ে পড়া যায়, তা হলে আশঙ্কার কিছু নেই। বরং নিজেদের আশেপাশের ভিড়ভাট্টা থেকে যদি দিন কয়েক প্রকৃতির কোলে কাটিয়ে আসা যায়, তা হলে ভালো বই মন্দ হবে না।
তাই বেরিয়ে পড়তেই পারেন প্রকৃতি সন্দর্শনে। প্রকৃতি বলতে তো শুধু পাহাড়-সমুদ্র-জঙ্গল নয়, আদিগন্ত সবুজ শস্যশ্যামলা প্রকৃতিই বা কম কী! ধানগাছের ওপর দিয়ে বাতাস কী ভাবে ঢেউ খেলে যায়, তা যদি আপনি স্বচক্ষে দেখতে পান, তা হলে সেই দৃশ্য জীবনের সম্পদ হয়ে থাকে।
কিংবা সেই প্রকৃতি যদি হয় ফুলের উপত্যকা, নানা ধরনের ফুলের বাহার মন এক্কেবারে ভালো করে দেবে। ফুলের উপত্যকা বলতেই অবশ্য আমাদের মন চলে যায় উত্তরাখণ্ডের ‘ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স’-এ কিংবা সিকিমের ইয়ুমথাং ভ্যালিতে। কিন্তু আরও আছে। এই পর্বে থাকল দেশের পাঁচ ফুলের উপত্যকার সুলুকসন্ধান। আজ প্রথম পর্ব।

ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স যাওয়ার পথ।
ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তকমা পেয়েছে উত্তরাখণ্ডের ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স ন্যাশনাল পার্ক। চামোলি জেলায় ৩৬৫৮ মিটার (১২০০১ ফুট) উচ্চতায় অবস্থিত এই ফুলের উপত্যকা আদতে স্বর্গোদ্যান। ৫০০ রকমের ফুল ফোটে এই উপত্যকায়। শুধু তা-ই নয়, মাস্ক ডিয়ার আর রেড ফক্স-সহ বেশ কিছু প্রাণী ও নানা ধরনের পাখির দেখা মেলে এই উপত্যকায়। হিমালয়ের তুষারমণ্ডিত পর্বতমালার কোলে অবস্থিত এই ফুলের উপত্যকায় যেতে পারলে স্বর্গ দর্শনের অনুভূতি হয়।
যাওয়ার সব চেয়ে ভালো সময়
জুন থেকে সেপ্টেম্বর।
কী ভাবে যাবেন
ট্রেনে হরিদ্বার বা দেহরাদুন। কিংবা বিমানে দেহরাদুন। হরিদ্বার বা দেহরাদুন থেকে বাসে বা গাড়িতে গোবিন্দঘাট (দেহরাদুন থেকে ৩০৮ কিমি, হরিদ্বার থেকে ২৯২ কিমি)। গোবিন্দঘাট থেকে জিপে পুলনা, ৪ কিমি। সেখান থেকে হাঁটা শুরু। পুলনা থেকে ঘাংগারিয়া ১০ কিমি। সেখান থেকে ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স ৪ কিমি। গোবিন্দঘাট পৌঁছোতে পৌঁছোতে সন্ধে হয়ে যাবে। তার পরের দিন ভোর ভোর বেরিয়ে পড়ুন। পুলনা থেকে হাঁটা শুরু করুন।

ফুলের জলসা।
ক’ দিন থাকবেন
তিনটে রাত কাটান ঘাংগারিয়ায়। প্রথম দিন পৌঁছে বিশ্রাম নিন। দ্বিতীয় দিন চলুন ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স। সন্ধের আগে ঘাংগারিয়ায় ফিরুন। তৃতীয় দিন চলুন হেমকুণ্ড সাহেবে (৪৩২৯ মি, ১৪৪০২ ফুট), ঘাংগারিয়া থেকে ৬ কিমি। চতুর্থ দিন ঘাংগারিয়া থেকে পুলনা হয়ে ফিরে আসুন গোবিন্দঘাট। সেই দিনটা গোবিন্দঘাটে কাটিয়ে পরের দিন চলুন ঘরপানে।
কোথায় থাকবেন
ঘাংগারিয়ায় থাকার জন্য এখন বেশ কিছু বেসরকারি ব্যবস্থা হয়েছে। রয়েছে গুরুদ্বারও। তা ছাড়া জিএমভিএন-এর টুরিস্ট কমপ্লেক্স তো আছেই। অনলাইন বুকিং: gmvnonline.com। গোবিন্দঘাটেও বেশ কিছু হোটেল আছে। আছে গুরুদ্বারও।
আরও পড়ুন: চেনা ছকের বাইরে: দ্বারকা থেকে ঘুরে আসুন শিবরাজপুর সৈকত