হরিদ্বার পূর্ণকুম্ভ ২০২১

করোনা-কালে হরিদ্বার পূর্ণকুম্ভে/শেষ পর্ব: বিদায় ব্রহ্মকুণ্ড, বিদায় হর কি পৌড়ী

অশোককুমার কুণ্ডু এমন সুযোগ কদাচ মেলে। সুবর্ণ সুযোগ। হ্যাঁ, একজন জৈন দিগম্বর দাঁড়িয়ে আছেন। আমজনতার স্নান দেখছেন। উদাস দৃষ্টি। জনস্রোত আর গঙ্গার স্রোত মিশে বয়ে চলেছে ব্রহ্মকুণ্ড থেকে অরূপকুণ্ডে। এই জৈন দিগম্বর মুনিজি মাস্কহীন, মুখ উন্মুক্ত। দক্ষিণ হস্তে ছোট্ট একটি মৃত্তিকাপাত্র। গায়ে একটি ছোট্ট শুভ্র চাদর। মুখে ধর্মীয় ঢাকনাও অনুপস্থিত। দিগম্বরের সঙ্গে বাক্যালাপ করে আমি […]

করোনা-কালে হরিদ্বার পূর্ণকুম্ভে/৮: সুদৃশ্য বর্ণময় জুলুস ধর্মীয় নেতাদের, দূরত্ববিধি শিকেয়

অশোককুমার কুণ্ডু কুম্ভমেলার অমৃত, স্নানমেলার পুণ্যডুবকি ঘেঁটে ‘ঘ’। ধনে-মানে নাগা (নাঙ্গা) সন্ন্যাসীরা (ফৌজ) সংখ্যায় (প্রাচীনতায় নয়, প্রাচীনতম হল শ্রীপঞ্চদশনাম আবাহন আখাড়া, প্রতিষ্ঠাবর্ষ ৫৪৭ খ্রিস্টাব্দ) গরিষ্ঠ। তারা হু-হুংকার ছাড়ছে করোনা-কুম্ভমেলা নিয়ে। দাবি বৈরাগীদের, মেলা চলবে মেলার স্থায়িত্ব রামনবমী অর্থাৎ ২১ এপ্রিল পর্যন্ত। শ্রীরামজি, রামমন্দির এখন কট্টর হিন্দু ভারতীয়দের নাভিকুণ্ড। সুতরাং রামনবমীর আগেই কুম্ভমেলা, কুম্ভস্নান রোধে কার

করোনা-কালে হরিদ্বার পূর্ণকুম্ভে/৭: সরকারি ঘোষণার পরে লেগে গেল স্নান-রাজনীতি

অশোককুমার কুণ্ডু কে আর হাঁটে এই চড়া রোদে। পঙ্গতে সম্মাননীয় অতিথি হয়ে ধর্মগুরুদের বিপরীতে লাইনে দূরত্ব রেখে বসেছিলাম। এটাই কানুন। এবং এ-ও কানুন, ভোজন শেষে সম্মানী-খাম সকলের হাতে দেন আয়োজক মঠপ্রধান। কিন্তু তা বলে এতটা! দু’টো কড়কড়ে পাঁচশোর নোট। চলো মুরারি, হিরো বন গয়া! “এই রিকশা, নীলধারা জায়েগা?” ম্যায় তো শাহা বন গয়া। একটু টিপে

করোনা-কালে হরিদ্বার পূর্ণকুম্ভে/৬: শামিল হলাম অগ্নি আখাড়ার পঙ্গতে

অশোককুমার কুণ্ডু সুপারস্প্রেডার করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত ২০২১-এর পূর্ণকুম্ভের হরিদ্বার ছিল বিশেষ সংকটের, অন্তত আমার কাছে। সকল পরিচিত-প্রিয়জনের নিষেধ না মেনে, অসুস্থ শরীরে, প্রায় সত্তর ছুঁই ছুঁই বয়সে আসা। ছিল তিনটে প্রধান সংকট। এক: এ বার কুম্ভ ঘুরতে প্রচুর ব্যয় হবে জানতাম। দুই: কোনো সংস্থার পরিচয়পত্র হাতে ছিল না। এক জন ফ্রিল্যান্সার হিসাবে তা দাবি

করোনা-কালে হরিদ্বার পূর্ণকুম্ভে/৫: ডুবকি লাগাও, বচন শোনো, করোনা ভাগ জায়েগা

অশোককুমার কুণ্ডু সকাল ৭টা-সাড়ে ৭টায় সংগীতানন্দজির আখাড়ায় গিয়ে লাভ নেই। বসে থাকতে হবে বা মূল গেটের বাইরে পায়চারি করতে হবে। করোনার কারণে সমস্ত আখাড়া-আশ্রমের মূল গেট বন্ধ। প্রহরী প্রহরায় নেই। থাকবেও না কেউ। অথচ কোভিড অতিমারি না থাকলে, আজ এই পর্বে, পূর্ণকুম্ভ পর্বে, দেবনগরী হরদুয়ার, বাঙালির হরিদ্বার, পুরোনো সন্ন্যাসীদের বরফানি কুম্ভ, মহাপ্রস্থানের পথে সমতলের শেষ

করোনা-কালে হরিদ্বার পূর্ণকুম্ভে/৪: হাঁটি বহতা গঙ্গার পাড় ধরে, ঘুরে আসি ভীমগোড়া, কনখল

অশোককুমার কুণ্ডু কুম্ভের পাঠকদের কষ্ট দিয়েছি। তিন সত্যি। তিনটি পর্বে তত্ত্বের আলোচনা। অমৃতকুম্ভের যাত্রা-বিবরণ ছিল সামান্যই। তত্ত্বমসি না হলে দুধে ছানা কাটবে না? কুম্ভ নিয়ে কত যে ভুলভ্রান্তি আম-জাম-রাধে-শ্যামদের। অথচ বাউলের রূপকাশ্রিত দেহতত্ত্বের গান তো মন-প্রাণ-হৃদয় দিয়ে শোনে পাঠক। তা হলে আমরা যারা কুম্ভমেলা নিয়ে লিখি, তাদের লিখনে কোথাও খামতি, ঘাটতি থেকে যাচ্ছে কি? বেশির

করোনা-কালে হরিদ্বার পূর্ণকুম্ভে/৩: তিনটি প্রশ্নের উত্তরের খোঁজে

অশোককুমার কুণ্ডু এ বার এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর খোঁজা যাক। প্রথমত, সুপার স্প্রেডার করোনা পৃথিবীকে গ্রাস করেছে। কুম্ভের হরিদ্বার তার বাইরে নয়। ভক্তি বড়ো, না ভক্তের জীবন বড়ো? করোনা কিন্তু চতুঃসম্প্রদায়, দশনামী, বৈরাগী (বৈষ্ণব), উদাসীন, গুরু-শিষ্য – কাউকেই ছাড়ছে না। না, ছাড়ছে না রাজা-উজির কাউকেই। তা হলে ধর্মগুরুকুল কেন এই কুম্ভস্নান বন্ধ রাখলেন না?

করোনা-কালে হরিদ্বার পূর্ণকুম্ভে/২: ‘থ্রি বেডেড উইথ অ্যাটাচড বাথ’-এ আমি একা

অশোককুমার কুণ্ডু জ্বালাপুরে নেমে সে কী কেচ্ছা, সীমাহীন! একে গন্তব্যচ্যুত মানুষ, তার ওপর মধ্যদুপুর এবং ক্ষুধার্ত। এর মধ্যে অনেকেরই দু’ ডোজের সার্টিফিকেটও রয়েছে। তা হলে কেন এমন হয়রানি করবে সরকার? মজার ব্যাপার, ভুল হিন্দিতে গজরাচ্ছে। টনটনে জ্ঞান। উত্তরাখণ্ড। রেগেমেগে বাঙালি ইংরেজি বলেনি। সকলের হিন্দি শুনে আমি বোবা। কারণ আমার হিন্দি ইহার চেয়েও খারাপ। মাথা গরম

নামতে হল জ্বালাপুরে।

করোনা-কালে হরিদ্বার পূর্ণকুম্ভে/১: হরিদ্বারে নয়, নামতে হল জ্বালাপুরে

অশোককুমার কুণ্ডু চলেছি হরিদ্বার পূর্ণকুম্ভের স্নানে। এই করোনা-কালে। আমার উদ্দেশ্য কিছু মহৎ না। পূর্ণকুম্ভে স্নানমেলা দেখা এবং মেলার ‘বিবরণ বেচা’ (বন্ধুর ব্যাঙ্গাত্মক শব্দবন্ধ) – একটি দৈনিক সংবাদপত্রের কাজ নিয়ে। চলো মন হরিদ্বার। “প্রথমেই ভুল করলেন। জায়গাটা হরিদ্বার না হরদ্বার। হরি তো মথুরা-বৃন্দাবনে থাকে। হরিদ্বার হইল মহাদেবের জায়গা। আচ্ছা যাউগ্গা…।” (ভানু এল কলকাতায়) হরি হরি। জয়গুরু।

Scroll to Top