ট্রেকিং-এর নতুন গন্তব্য: মুন্নারের কাছে মিসাপুলিমালা

মিসাপুলিমালায় ট্রেক। ছবি facebook থেকে নেওয়া।

মুন্নার (কেরল): আনাইমুদির পরেই পশ্চিমঘাট পর্বতমালার দ্বিতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ মিসাপুলিমালা। উচ্চতা ২৬৪০ মিটার অর্থাৎ ৮৬৬১ ফুট। ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত এই শৃঙ্গ ট্রেকিং-এর নতুন গন্তব্য হয়ে উঠেছে।

‘মিসাপুলিমালা’, এই মালায়ালম শব্দের অর্থ হল গোঁফযুক্ত বাঘের পাহাড়। ‘মিসা’র অর্থ গোঁফযুক্ত, ‘পুলি’র অর্থ বাঘ আর ‘মালা’ অর্থে পাহাড়। দক্ষিণপশ্চিম দিক থেকে যদি এই পাহাড়কে দেখা হয়, তা হলে সে রকমই মনে হয়। আনাইমালাই পাহাড় আর পালানি পাহাড়ের মধ্যে অবস্থিত মিসাপুলিমালা।

কেরলের শৈলশহর মুন্নার থেকে যেতে হয় এই পাহাড়ে। প্রথমে যেতে হয় এই পাহাড়ের বেস ক্যাম্পে। সেখান থেকে রোডো ভ্যালি এবং তার পর বাকিটা ট্রেকিং করে। রোডো ভ্যালি যাওয়ার পথে পড়বে পাণ্ডব গুহা। দেখে নিতে ভুলবেন না।

চিরসবুজ অরণ্য আপনার হাঁটাপথের সঙ্গী হবে। পথের সৌন্দর্য ভুলিয়ে দেবে পথের ক্লান্তি। শীর্ষদেশের কিছুটা অঞ্চল ছাড়া প্রায় গোটা পথটাই রডোডেনড্রোনে ছাওয়া।

শীর্ষে পৌঁছে গেলে মনে হবে আপনি স্বর্গে এলেন। সমস্ত মেঘ চলে যাবে নীচে আর বাতাস আপনার কানে কানে সব সময় গুনগুনিয়ে যাবে।

মিসাপুলিমালা শীর্ষ থেকে দেখা যাবে মুন্নার আর সূর্যনেল্লি শহর। নজরে পড়বে কেরল-তামিলনাড়ু সীমানা।

ছবি: facebook থেকে নেওয়া।

ট্রেকিং-এর মরশুম

বর্ষা এড়িয়ে যাওয়া ভালো। আর দক্ষিণ ভারতে গরমকালে পাহাড় অঞ্চলে তেমন গরম না পড়লেও ট্রেকিং-এর সময় প্রখর সূর্যের তাপে বেশ কষ্ট হতে পারে। তাই বর্ষার পরে অর্থাৎ অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি, এই পাঁচ মাস ট্রেকিং-এর আদর্শ সময়।           

কী ভাবে যাবেন

(১) মুন্নার থেকে মিসাপুলিমালার বেস ক্যাম্পে যাওয়া যায় দু’টি পথে। একটা পথ সূর্যনেল্লি-কোলুক্কুমালাই টি এস্টেটের মধ্য দিয়ে। এ পথে দূরত্ব পড়ে ৪০ কিমি। দ্বিতীয় পথটি হল আরুভিক্কাড়-মাট্টুপেট্টি হয়ে। এ পথে দূরত্ব ২৫ কিমি।

(২) গাড়িতে বেসক্যাম্পে পৌঁছোনোর পর ৪ কিমি যেতে হবে জিপে। পৌঁছে যাবেন রোডো ভ্যালি। এখানেই চার চাকার পথ শেষ।

(৩) এর পরই শুরু হবে হাঁটা। ৮ কিমি পথ ট্রেক করে পৌঁছে যাবেন মিসাপুলিমালাড় শীর্ষে।

কোথায় থাকবেন

মুন্নার থেকে রোডো ভ্যালি পৌঁছে, সেখান থেকে যাতায়াতে ১৬ কিমি ট্রেক করে ওই দিনই মুন্নার ফিরে আসা সম্ভব নয়। এই ট্রেক সারা দিনের। তাই বেস ক্যাম্পে একটা রাত থাকতে হবে। থাকার জন্য রয়েছে কেরলের বন দফতরের টেন্ট। যোগাযোগ: KFDC Ecotourism MUNNAR, Mattupetty Road, Munnar, Ph. 91 4865 230332, 91 8289821408, www.munnar.kfdcecotourism.com

এ ছাড়াও রোডো ভ্যালিতে রোডো ম্যানসন, ওই পথেই স্কাই কটেজে থাকতে পারেন। বিস্তারিত তথ্যের জন্য দেখুন: https://munnar.kfdcecotourism.com/

বেস ক্যাম্পে বন দফতরের টেন্ট। ছবি: munnar.kfdcecotourism.com/

ট্রেকারদের জন্য কিছু পরামর্শ

(১) ট্রেকিং-এর সময় এক জন গাইড সঙ্গে রাখা ভালো।

(২) মালায়ালম না জানা থাকলে গাইড বহুভাষী হলে ভালো হয়।

(৩) ট্রেকিং রুটে কোনো রকম জঞ্জাল বা প্লাস্টিক ফেলবেন না।

(৪) কোনো কোনো জায়গায় ট্রেকিংটা কিছুটা কষ্টকর। তাই ট্রেকিং-এর উপযুক্ত পোশাক ও জুতো পরা উচিত।

(৫) সঙ্গে কিছু খাবার আর জল রাখবেন।

আরও পড়তে পারেন

সেলফি নেওয়া, ছবি তোলা, ভিডিও করা মানা গঙ্গাসাগরে কপিলমুনি মন্দিরে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *