চিন সীমান্ত পর্যন্ত রেললাইন পেতে পর্যটনে জোয়ার আনার ভাবনা, কিন্তু পরিবেশের ভারসাম্যের কী হবে?

ভ্রমণ অনলাইনডেস্ক: ট্রেনে চড়ে পৌঁছোনো যাবে চিন সীমান্তে। পরিকল্পনা আগেই হয়েছিল। এ বার রেললাইন পাতার জন্য চূড়ান্ত পর্যায়ের সমীক্ষা শুরু করে দিয়েছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। অরুণাচল প্রদেশে রেললাইন পেতে তা চিনের সীমানা পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি ভুটানেও যাবে ট্রেন। আর সেটা হলেই পর্যটনের নতুন দিগন্ত খুলে যেতে পারে বলে মনে করছে রেল। যদিও পরিবেশবিদদের আশঙ্কা, এমনটা হলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে পুরোপুরি।

অরুণাচল প্রদেশে বেড়াতে যেতে যাঁরা আগ্রহী, তাঁদের জন্য বাড়তি সুবিধা এনে দেবে এই রেললাইন। চালু হয়ে গেলে ভালুকপং থেকে তাওয়াংয়ে চিন সীমান্তে যাওয়া যাবে ট্রেনে চেপেই। এর জন্য ইতিমধ্যেই অরুণাচলে জোরকদমে চলছে চূড়ান্ত সমীক্ষার কাজ। শুধু পর্যটন নয়, ট্রেনে দ্রুত সীমান্তে পৌঁছোনোর ব্যবস্থা হয়ে গেলে তার কৌশলগত সুবিধাও পাবে ভারত।

১০ হাজার ফুট উপরে এই ট্রেন চালু হলে পর্যটকরা অনেক সহজে এবং অনেক কম সময়ে তাওয়াং যেতে পারবেন। এখন ভালুকপং থেকে তাওয়াংয়ের সড়কপথের দৈর্ঘ্য ২৮৫ কিলোমিটার। কিন্তু রেলপথের দৈর্ঘ্য হবে ১৬৬ কিলোমিটার। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বিচারে সেই পথও হবে মনোরম। তবে ৮০ শতাংশ রেলপথই হবে টানেলের ভিতর দিয়ে। এর মধ্যে একটি সুড়ঙ্গেরই দৈর্ঘ্য হবে ২৯.৪৮ কিলোমিটার। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩০৪৮ ফুট উচ্চতায় তাওয়াং শুধু পর্যটনকেন্দ্রই নয়, বৌদ্ধ তীর্থও। এখানেই রয়েছে ৩৭ কিলোমিটার লম্বা ভারত-চিন সীমান্তের বুমলা পাস।

উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, শুধু অরুণাচলেই নয়, উত্তর-পূর্বে আরও কয়েকটি জায়গায় পরিষেবা দিতে উদ্যোগী হয়েছে রেল। তিনি বলেন, ‘‘ভালুকপং থেকে তাওয়াং এবং সিলাপাথার থেকে বামে হয়ে আলং যাওয়ার পরিষেবা চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। এ ছাড়াও মুরকংসেলেক থেকে পাসিঘাট যাওয়ার রেল পরিষেবা বিস্তৃত করার পরিকল্পনা রয়েছে।’’

এ ছাড়াও অসমের ডিমা হাসাও জেলার লঙ্কা থেকে চন্দ্রনাথপুর পর্যন্ত ট্রেন চালানোর পরিকল্পনাও রয়েছে রেলের। একই সঙ্গে সব্যসাচী জানিয়েছেন, পড়শি দেশ ভুটানেও যাবে ট্রেন। অসমের কোকড়াঝাড় থেকে ভুটানের গেলেফু পর্যন্ত ৫৮ কিলোমিটার রেললাইন তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে রেল।

কিন্তু পাহাড় কেটে একটার পর একটা সুড়ঙ্গ খুঁড়ে রেল লাইন বানিয়ে পর্যটনে জোয়ার আনা বা কৌশলগত সুবিধা থাকলেও পরিবেশের বারোটা যে বাজবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত পরিবেশবিদরা। ইতিমধ্যেই উত্তরাখণ্ডের কর্ণপ্রয়াগ পর্যন্ত বা সিকিমের রংপো পর্যন্ত রেল লাইন তৈরির কাজে যে পরিমাণ পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অনেকেই।

আরও পড়তে পারেন

চলুন ঘুরে আসি রাজস্থান ৪: মাউন্ট আবু-উদয়পুর-চিতোরগড়-বুন্দি-রনথম্ভোর  

চলুন ঘুরে আসি রাজস্থান ৩: বিকানের-জৈসলমের-বাড়মের-জোধপুর

চলুন ঘুরে আসি রাজস্থান ২: জয়পুর-ফতেপুর-বিকানের-অজমের

শান্তিপুরের রাস উৎসবকে পর্যটন মানচিত্রে তুলে আনার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

বেঙ্গল সাফারি পার্কে নতুন আকর্ষণ, বছর শেষের আগেই সিংহ সাফারি

বাঁকুড়ায় নতুন ট্রেক রুটের সন্ধানে অভিযান চালালেন ১৬ জন অভিযাত্রী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *