ভারতের অতীত ইতিহাস নানা দিক দিয়ে সমৃদ্ধ। এই দেশে এক সময় ছিল শত শত রাজারাজড়ার রাজত্ব। তারই ফলস্বরূপ দেশ জুড়ে গড়ে উঠেছে অসংখ্য প্রাসাদ। প্রতিটিরই কিছু না কিছু বিশেষত্ব আছে। বেশির ভাগ প্রাসাদই মিশ্র সংস্কৃতির নজির। বেশ কিছু প্রাসাদ রোমান স্থাপত্যশৈলীতে অনুপ্রাণিত। আবার বেশ কিছু প্রাসাদ ইসলামিক স্থাপত্যে প্রভাবিত। দেখে আসা যাক এ রকমই কিছু অনন্য প্রাসাদ। আজ চলুন গুজরাতের বডোদরায় তথা বরোদায়, দেখে নিন লক্ষ্মীবিলাস প্রাসাদ।
ইন্দো-সারাসেনিক স্থাপত্যশৈলীতে তৈরি লক্ষ্মীবিলাস প্রাসাদ আজও বরোদার রাজপরিবারের বাসভবন। ১৮৯০ সালে এই প্রাসাদ তৈরি করান বরোদার তৎকালীন শাসক মহারাজা সয়াজিরাও গায়কোয়াড় তৃতীয়। প্রাসাদের মূল স্থপতি ছিলেন মেজর চার্লস ম্যান্ট।
প্রাসাদ তৈরি করতে খরচ হয়েছিল ৬০ লক্ষ টাকা। ৫০০ একর জমির উপর নির্মিত এই প্রাসাদ আজও দেশের বৃহত্তম বেসরকারি বাসভবন। আয়তনে এই প্রাসাদ লন্ডনের বাকিংহাম প্যালেসের চার গুণ।
![](https://www.bhramononline.com/wp-content/uploads/2022/09/Laxmi-Bilas-Palace-2-15.09-1024x571.jpg)
ব্রিটিশ যুগের গুজরাতে সব চেয়ে আকর্ষণীয় প্রাসাদ এই লক্ষ্মীবিলাস প্যালেস। এর অভ্যন্তরীণ কারুকাজ মুগ্ধ করে। প্রাসাদের মোজাইক, শ্যান্ডেলিয়র ও নানা শিল্পকলা সুন্দর ভাবে রক্ষা করা হচ্ছে। মহারাজা সয়াজিরাও গায়কোয়াড়ের আমন্ত্রণে বিখ্যাত চিত্রশিল্পী রাজা রবি বর্মা প্রাসাদ অলংকরণের দায়িত্ব নেন। তাঁর অঙ্কিত নানা শিল্পকর্ম শোভা পাচ্ছে প্রাসাদে। অস্ত্রশস্ত্র ও শিল্পকলার বিপুল সংগ্রহ রয়েছে এই প্রাসাদে।
এই প্রাসাদের চত্বরে রয়েছে গল্ফ কোর্স। রয়েছে নবলখি স্টেপওয়েল। শুখা মরশুমে জলের বিকল্প ব্যবস্থা করার জন্য এই ধাপকুয়ো তৈরি করা হয়েছিল। অন্য যে সব ভবন এই প্রাসাদ চত্বরে রয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য এলভিপি ব্যাঙ্কোয়েট, মোতি বাগ প্যালেস এবং মহারাজ ফতে সিং মিউজিয়াম। এ ছাড়াও রয়েছে বরোদা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের অফিস, মোতি বাগ ক্রিকেট গ্রাউন্ড এবং ব্যাডমিন্টন কোর্ট ও টেনিস কোর্ট।
প্রাসাদ দর্শনের সময়
বডোদরার জে এন মার্গে অবস্থিত এই প্রাসাদ সোমবার ছাড়া বাকি সব দিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে। দুপুর ১টা থেকে ১.৩০ মধ্যাহ্নভোজের সময়। ওই সময়ে কখনোই যাবেন না।
![](https://www.bhramononline.com/wp-content/uploads/2022/09/Laxmi-Bilas-Palace-4-15.09.jpg)
দর্শনীর হার
প্রাসাদে ঢোকার জন্য জনপ্রতি ২০০ টাকা করে দিতে হয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন জায়গা দেখার জন্য আলাদা আলাদা দর্শনী লাগে।
কী ভাবে যাবেন
গুজরাত ভ্রমণে গেলে অবশ্যই যাবেন বডোদরার এই প্রাসাদ দেখতে। ৮ নম্বর জাতীয় সড়ক এই শহরের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। অমদাবাদ থেকে বডোদরার দূরুত্ব ১১২ কিমি। বাসে বা গাড়ি ভাড়া করে চলে আসতে পারেন। তা ছাড়া দেশের বেশির শহরের সঙ্গে ট্রেন ও বিমানপথে যুক্ত বডোদরা।
আরও পড়তে পারেন