আর চার মাসও নেই পুজো শুরু হওয়ার। ইচ্ছে আছে, পুজোর ছুটিতে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার, অথচ প্ল্যান করে উঠতে পারেননি? খবর অনলাইন আপনাদের জন্য সাজিয়ে দিচ্ছে ভ্রমণ-ছক। শুরু হয়েছিল উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে। তার পর সিকিম। এর পর সাজিয়ে দেওয়া হয়েছে মহারাষ্ট্র-গোয়া ভ্রমণ ছক। এই পর্বে উত্তরপ্রদেশ।
বারাণসী-ইলাহাবাদ-লখনউ-আগরা
প্রথম দিন – বারাণসী পৌঁছোনো। সময় থাকলে বিশ্বনাথ-অন্নপূর্ণা দর্শন করুন, দেখে নিন আলমগীর মসজিদ ও বেণীমাধবের ধ্বজা, জ্ঞানের কূপ জ্ঞানভাপী। সম্ভব হলে সন্ধ্যায় গঙ্গা থেকে দশাশ্বমেধ ঘাটে গঙ্গারতি দর্শন করুন। রাত্রিবাস বারাণসী।দ্বিতীয় দিন – গতকাল সময়াভাবে দর্শন না হলে আজ করুন। সেই সঙ্গে দেখে নিন ১৮ শতকে বাংলার রানি ভবানীর তৈরি নাগারা শৈলীর দুর্গা মন্দির, অদূরে তুলসীদাসের স্মৃতিতে ১৯৬৪ সালে তৈরি শিখর-ধর্মী তুলসী মানস মন্দির, জয়পুররাজ জয় সিংহের তৈরি মানমন্দির, বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালিয় ইত্যাদি।
ঘাটের শহর বারাণসী তথা কাশী। ৩৬৫টি ঘাট আছে ৩ কিমি দৈর্ঘ্য জুড়ে। আর এই ঘাটগুলির মধ্যমণি দশাশ্বমেধ। বাকি ঘাট এর ডাইনে-বাঁয়ে ছড়ানো। ভোরে বা সন্ধ্যারতির আগে নৌকায় চেপে দেখে নিন দশাশ্বমেধের দক্ষিণে কেদারঘাট পর্যন্ত এবং উত্তরে মণিকর্ণিকা ঘাট পর্যন্ত। আগের দিন গঙ্গারতি দেখা না হলে এ দিন দেখুন। রাত্রিবাস বারাণসী।

তৃতীয় দিন – সকালে চলুন সারনাথ, দূরত্ব ১০ কিমি। দেখে নিন ধামেক স্তূপ, চৌখণ্ডী স্তূপ, ধর্মরাজিক স্তূপ, সম্রাট অশোকের কালে গড়ে ওঠা মূল বৌদ্ধবিহার, ২০ ফুট উঁচু অশোক পিলার, মহাবোধি সোসাইটির গড়া মূলগন্ধকুটী বিহার ও সোনার বুদ্ধ, চিনা মন্দির, থাই, তিব্বতীয় ও জাপানি মন্যাস্টেরি, বার্মিজ বিহার, মিউজিয়াম ও এক্সক্যাভেশন সাইট, ডিয়ার পার্ক ও তার দক্ষিণে ১৮২৪ সালে গড়া শ্রীদিগম্বর জৈন মন্দির।
দুপুরে বারাণসী ফিরে চলুন রামনগর, ১৮ কিমি। দেখে নিন কাশীর রাজবাড়ি, অস্ত্রাগার, সংগ্রহশালা, প্রাসাদের পিছে রাজা জৈত সিংহ নির্মিত দুর্গামন্দির এবং গঙ্গার পাড়ে ব্যাসদেবের মন্দিরে ব্যাসদেব, শূকদেব ও বিশ্বনাথের মূর্তি।

চতুর্থ দিন – গাড়ি ভাড়া করে বেরিয়ে পড়ুন সক্কালেই। প্রথমে চলুন লাখনিয়া দারি (পর্যটকের পা না-পড়া বন্য প্রকৃতির মাঝে ঝরনা, বারাণসী থেকে ৪৯ কিমি)। লাখনিয়া দারিতে খানিক সময় কাটিয়ে চলে আসুন চুনার (৩২ কিমি)। গঙ্গার তীরে বেলেপাথরের দুর্গ। উজ্জয়িনরাজ বিক্রমাদিত্যের গড়া। রয়েছে রাজার বড়োভাই ভর্তৃহরির সমাধি। এ ছাড়া বন্দিশালা, ফাঁসির মঞ্চ, পাতাল ঘর, গভীর ইঁদারা। শেরশাহের স্মৃতিবিজড়িত দুর্গের ছাদ থেকে গঙ্গা ও চুনার শহরের দৃশ্য। চুনার দেখে চলুন প্রকৃতির মাঝে আর এক রমণীয় ঝরনা সিদ্ধানাথ কি দারি, ২১ কিমি। এ বার চলুন উইন্ডোম ফলস্, ৪৪ কিমি। সেখান থেকে চলে আসুন মির্জাপুর, ১৬ কিমি। রাত্রিবাস মীর্জাপুর।
আরও পড়ুন পুজোয় চলুন / খবর অনলাইনের ভ্রমণ-ছক : গন্তব্য মহারাষ্ট্র-গোয়া
পঞ্চম দিন – সক্কালেই বেরিয়ে পড়ুন, চলুন বিন্ধ্যাচল, ৭ কিমি। দর্শন করুন বিন্ধ্যবাসিনী মন্দির (বাজারে ঘেরা বসতির মাঝে অনুচ্চ টিলায়), অষ্টভুজা মন্দির (বিন্ধ্যবাসিনী মন্দির থেকে ৩ কিমি ডুরে ৮৯ ধাপ সিঁড়ি ভেঙে), সীতাকুণ্ড (অদূরেই, সীতার তৃষ্ণা মেটাতে লক্ষ্মণ বাণ মেরে জল এনেছিলেন), কালী খো মন্দির (ডাকাত সর্দার মাধো সিং-এর), কঙ্কালি দেবী মন্দির ইত্যাদি। বিন্ধ্যাচল দর্শন করে চলুন ইলাহাবাদ, ৮৯ কিমি)। রাত্রিবাস ইলাহাবাদ।
ষষ্ঠ দিন – রাত্রিবাস ইলাহাবাদ।

ইলাহাবাদে দেখে নিন
ত্রিবেণী সঙ্গম, মোগল উদ্যান খসরু বাগ, আনন্দ ভবন (নেহরু পরিবারের বসতবাড়ি), মতিলাল নেহরু পার্ক, ইলাহাবাদ মিউজিয়াম, সুমিত্রা নন্দন পন্থ বাল উদ্যান, সরস্বতী ঘাটে মদন মালব্য পার্ক ইত্যাদি।
এক দিন চলুন ৫৭ কিমি দূরে বুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত কৌশাম্বি।
সপ্তম দিন – বাসে বা ট্রেনে সক্কালেই চলুন লখনউ, দূরত্ব ২০২ কিমি।

লখনউয়ে দেখে নিন
বড়া ইমামবাড়া, ভুলভুলাইয়া, রুমি দরওয়াজা, গোমতীর সঙ্গে যুক্ত পাঁচতলা শাহি বাওলি, ক্লক টাওয়ার, বরাদরি তথা পিকচার গ্যালারি, ছোটা ইমামবাড়া, জুমা মসজিদ, দি রেসিডেন্সি (গুলিগোলায় বিধ্বস্ত এই রেসিডেন্সি সিপাহি বিদ্রোহের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে), শহিদ মিনার, শাহনজাফ ইমামবাড়া, সিকান্দারবাগ, ছাত্তার মঞ্জি, কন্সটানশিয়া, কাইসারবাগ বরাদরি ইত্যাদি।
অষ্টম দিন – সারা দিন লখনউ কাটিয়ে রাতের ট্রেন ধরে আগরা।
নবম ও দশম দিন – আগরা।

আগরায় দেখে নিন
তাজমহল, আগরা ফোর্ট, ইতমদ-উদ-দৌলা (নুরজাহানের বাবা-মায়ের সমাধি), চিনি-কা রৌজা (শাহজাহানের প্রধানমন্ত্রী কবি আফজল খাঁ ও তাঁর বেগমের সমাধি), রামবাগ (যমুনার পাড়ে কন্যা জাহারার জন্য বাবরের হাতে গড়া উদ্যান), জামি মসজিদ (শাহজাহান, মতান্তরে কন্যা জাহানারার গড়া), দয়ালবাগ (তাজ থেকে ৮ কিমি দূরে, স্বামী বাগ মন্দির), সিকান্দ্রা (আগরা ফোর্ট থেকে ১৪ কিমি, এখানে আকবরের সমাধি ছাড়াও রয়েছে জাহাঙ্গিরের তৈরি কাচমহল, কোনো এক লোদির সমাধি ইত্যাদি), আকবরের গোয়ানিজ বেগম মরিয়মের সমাধি (আগরা-দিল্লি ১৩ কিমি দূরে) ও ফতেপুর সিক্রি (আগরা থেকে ৩৬ কিমি)।
একাদশ দিন – ঘরে ফেরা।
আরও পড়ুন পুজোয় চলুন / খবর অনলাইনের ভ্রমণ-ছক : গন্তব্য সিকিম
কী ভাবে যাবেন
(১) বারাণসী দেশের সমস্ত শহরের সঙ্গে ট্রেন ও বিমানপথে যুক্ত। ট্রেনের সময়ের জন্য দেখে নিন erail.in আর বিমানের সময়ের জন্য দেখে নিন makemytrip.com, yatra.com, cleartrip.com, goibibo.com, expedia.co.in, mapsofindia.com ইত্যাদি সাইটগুলি।
(২) বারাণসী থেকে গাড়ি ভাড়া করে চলুন চুনার- বিন্ধ্যাচল ঘুরে পরের দিন ইলাহাবাদ পৌঁছে গাড়ি ছেড়ে দিন।
(৩) অনেক বাস চললেও ইলাহাবাদ থেকে লখনউ যাওয়ার সব চেয়ে ভালো উপায় গঙ্গা-গোমতী এক্সপ্রেস। সকাল ৬টায় ইলাহাবাদ থেকে ছেড়ে সকাল ১০.১০ মিনিটে পৌঁছে যায় লখনউ।

(৪) যথারীতি লখনউ থেকে আগরা আসার রাতের বাস রয়েছে। কিন্তু সব চেয়ে ভালো উপায় রাত ১১.৫৫ মিনিটের পটনা-কোটা এক্সপ্রেস ধরা। ওই ট্রেন আগরা ক্যান্টনমেন্ট পৌঁছে দেয় ভোর ৫.৪০ মিনিটে। লখনউ-আগরা রাতের বাসের সময় পেয়ে যাবেন www.redbus.in সাইটে।
(৫) আগরাও দেশের সমস্ত শহরের সঙ্গে ট্রেনপথে যুক্ত। ট্রেনের সময়ের জন্য দেখে নিন erail.in ।
আরও পড়ুন পুজোয় চলুন / খবর অনলাইনের ভ্রমণ-ছক : উত্তর-পূর্ব / ২
কী ভাবে ঘুরবেন
বারাণসী, ইলাহাবাদ, লখনউ এবং আগরা, চার শহরেই সিটি ট্যুর করায় উত্তরপ্রদেশ পর্যটন। অনলাইন বুকিং uptourism.gov.in ।
বারাণসী শহর সিটি ট্যুরে নিয়ে যায় বেশ কিছু সংস্থা – স্বামী বাবা লোকনাথ ট্রাভেলস (০৮৭৩৮৯৭৯৭৬০), বিশাল ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস (০৫৪২-২৫০২৯৮১/০৯৭৯২০০২৪৫২), নব ট্রাভেলস (০৫৪২-২২০৮৩৬১/২২০৮৮০৩), মারকারি ট্রাভেলস (০৫৪২-২৫০৩৪৯৬), আইটিডিসি (ভারত সরকারের পর্যটন, ০৫৪২-২৫০৩৪৩২/০৯৪৫০৫৪৫৮৯০), ইউপিএসটিডিসি (উত্তরপ্রদেশ পর্যটন, ০৫৪২-২২০৮৫৪৫/২২০৮৪১৩) ইত্যাদি।
তবে নিজেদের উদ্যোগে সব শহরেই অটো করে বা গাড়ি ভাড়া করে ঘোরাই ভালো। ধীরেসুস্থে ঘুরতে পারবেন। অটো ও নৌকার ভাড়া নিয়ে একটু দরদস্তুর করুন। দশাশ্বমেধ থেকে নৌকায় গঙ্গা পেরিয়ে যেতে পারেন রামনগর। ইলাহাবাদে নৌকা ভাড়া করে দেখে নেবেন ত্রিবেণী সঙ্গম।
আরও পড়ুন পুজোয় চলুন / খবর অনলাইনের বাছাই : গন্তব্য উত্তর-পূর্ব / ১
কোথায় থাকবেন
বারাণসী, মীর্জাপুর, ইলাহাবাদ, লখনউ এবং আগরা – সব জায়গাতেই উত্তরপ্রদেশ পর্যটনের হোটেল আছে। অনলাইন বুকিং uptourism.gov.in ।
সব জায়গাতেই প্রচুর বেসরকারি হোটেল আছে। সন্ধান পাবেন সন্ধান পাবেন makemytrip, goibibo, trivago, cleartrip, holidayiq ইত্যাদি ওয়েবসাইট থেকে।

বারাণসীতে একটি বেসরকারি হোটেলের নাম করতেই হয়, দশাশ্বমেধ বোর্ডিং হাউস (০৫৪২-২৪০১৭০১, ০৯৪৫০৫২৭৮৭৫) । থাকা খুবই সাধারণ, কিন্তু অবস্থান গুণে অনবদ্য। খাওয়াও বেশ ভাল।
এ ছাড়া বারাণসীতে বেশ কিছু ধর্মশালা ও আশ্রম আছে, যেখানে কম খরচে বা নিখরচায় ভালো থাকা যায় – বীরেশ্বর পাঁড়ে ধর্মশালা (০৫৪২-২৪৫৫২৭৭), হরসুন্দরী ধর্মশালা (০৫৪২-২৪৫২৪৪৬), শেঠ আনন্দরাম জয়পুরিয়া স্মৃতি ভবন ধর্মশালা (০৫৪২-২৪১২৬৭৪), ভারত সেবাশ্রম সংঘ (০৫৪২-২২২১৬৩৯), ভোলাগিরি আশ্রম (০৫৪২-২৪৫০৯৫৭১), আনন্দময়ী মায়ের আশ্রম (০৫৪২-২৩১০০৫৪), শ্রীরামকৃষ্ণ মিশন গেস্ট হাউস (০৯৭৯৩২০৫৫৫১) ইত্যাদি।
ইলাহাবাদে বাঙালিদের পরিচালিত কালীমন্দিরে অতিথিশালা আছে। যোগাযোগ – সেক্রেটারি, কালীবাড়ি, ১০২৩ মুঠিগঞ্জ, ইলাহাবাদ ২১১০০৩।

মনে রাখবেন
(১) প্রথম দিন বারাণসী সকাল সকাল না পৌঁছোতে পারলে দ্বিতীয় দিন বারাণসী দর্শনে একটু চাপাচাপি হবে। সে ক্ষেত্রে সক্কালেই বিশ্বনাথ-অন্নপূর্ণা দর্শন করে দেখে নিন আলমগীর মসজিদ, বেণীমাধবের ধ্বজা, জ্ঞানভাপী ও মানমন্দির। এর পর শহরের অন্যান্য দ্রষ্টব্য দেখে নিন। পথেই কোথাও দুপুরের খাওয়া সেরে নিন। এর পর বিকেলে এমন সময়ে নৌকা চেপে ঘাট দর্শন করুন যে সেই নৌকায় চেপেই দশাশ্বমেধ ঘাটে গঙ্গারতি দেখে নিতে পারেন।
(২) সারনাথের মিউজিয়াম শুক্রবার ছাড়া সকাল ১০টা থেকে বিকেল পৌনে ৫টা পর্যন্ত খোলা।
(৩) লখনউয়ে এক টিকিটে দেখে নিতে পারেন বড়া ইমামবাড়া, ভুলভুলাইয়া, বাওলি, পিকচার গ্যালারি ও ছোটা ইমামবাড়া।
(৪) লখনউয়ের রেসিডেন্সি লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো দেখতে ভুলবেন না।

(৫) তাজ দর্শন – সূর্যোদয়ের আধ ঘণ্টা আগে খোলে এবং সূর্যাস্তের আধ ঘণ্টা আগে বন্ধ হয়। শুক্রবার বন্ধ। দর্শনী ৪০ টাকা। পূর্ণিমার আলোয় তাজ দর্শনের জন্য মাসে পাঁচ দিন তাজ রাতে খোলা থাকে। পূর্ণিমার দিন এবং আগের দু’ দিন ও পরের দু’ দিন। দর্শনী ৫১০ টাকা এবং ৩ থেকে ১৫ বছর বয়সিদের জন্য ৫০০ টাকা। রাত সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তাজ দর্শন চলে। প্রতি ব্যাচে সর্বাধিক ৫০ জন করে ৮টি ব্যাচে দর্শনার্থীদের ঢোকানো হয়। এক একটি ৩০ মিনিট করে তাজ দর্শনের সুযোগ পায়। রমজান মাসে রাতে তাজ দর্শন বন্ধ থাকে। রাতে তাজ দর্শনের টিকিট ২৪ ঘণ্টা আগে পাওয়া যায় আগরার ২২ মল রোডে এএসআই দফতরে (০৫৬২-২২২৭২৬১/২২২৭২৬৩)। টিকিটে তাজে প্রবেশের যে সময় দেওয়া থাকে তার আধ ঘণ্টা আগে তাজমহলের পূর্ব গেটের কাছে পৌঁছোতে হয় সিকিউরিটি চেকের জন্য।
(৬) আগরা ফোর্ট সকাল ৬টা থেকে সন্ধে ৬টা খোলা। লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো (সাড়ে ৬টায় হিন্দি, পৌনে ৮টায় ইংরিজি) দেখতে পারেন।
(৭) হাতে আরও সময় থাকলে আগরা থেকে দিল্লি গিয়ে (২১২ কিমি) সেখানে দিন দুয়েক কাটিয়ে ঘরে ফিরতে পারেন।