যে দিকে চোখ যাবে শুধুই ময়ূর, মহারাষ্ট্রের এই গ্রাম যেন এক অপার বিস্ময়!

ভ্রমণ অনলাইনডেস্ক: শহুরে ব্যস্ততা থেকে বেরিয়ে পড়তে আমাদের কতই না ইচ্ছে করে। কংক্রিটের জীবন থেকে বেরিয়ে একটু অচেনা জায়গায় যেতে না পারলে যেন চোখ আর মনের আরাম হয় না। এই দু’-তিন দিনের জন্য নিরুদ্দেশ হওয়ার আদর্শ ঠিকানা হতে পারে মহারাষ্ট্রের মোরাচি চিনচোলি গ্রাম।

কিন্তু এত জায়গা থাকতে এই মোরাচি চিনচোলিতে কেন যাবেন? কারণ এই গ্রাম ময়ূরদের স্বর্গরাজ্য। অনেকেই এই গ্রামকে পিকক ভিলেজ বলেও ডাকেন। এক জায়গায় এত এত ময়ূর দেখা চোখেরও আরাম।

৩৫০ একর এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা এই গ্রামে যখন বিকেল নামে আর ফিরে আসতে থাকে ময়ূরের দল, গোধূলি বেলার আলো ঠিকরে পড়ে ময়ূরের নীল শরীর থেকে — তৈরি হয় অপূর্ব দৃশ্যকল্প! তেঁতুল গাছের ডালে, বাড়ির বেড়ায়, মেঠো রাস্তায় ময়ূরের শান্ত পদচারণা যেন তৈরি করে মোহময় পরিবেশ। গ্রামের নামও তৈরি হয়েছে ময়ূর আর তেঁতুল গাছ থেকেই। কারণ ‘মোর’ কথার অর্থ ময়ূর আর মারাঠিতে ‘চিঞ্চ’ শব্দের অর্থ তেঁতুল।

স্থানীয়দের কথায়, এলাকায় প্রায় ২৫০০-এর বেশি ময়ূর ও ময়ূরীর বাস। পেশোয়া রাজবংশের শাসনকালে হাজার হাজার তেঁতুলগাছ রোপণ করা হয়েছিল ময়ূরদের আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্যে। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়েও তেঁতুলগাছগুলির যথেষ্ট যত্ন নেওয়া হয়।

মোরাচি চিনচোলির বাসিন্দারা ময়ূর ও ময়ূরীদেরও অত্যন্ত সম্মান করেন। রাখেন খেয়ালও। আর এর ফলে গ্রামটি ময়ূর ও ময়ূরীদের নিশ্চিন্ত বিহারের স্থান হয়ে উঠেছে যা আবার একাধিক পর্যটকদের আকৃষ্ট করে এই গ্রামে। তবে শুধু ময়ূর নয়, এই গ্রাম দর্শনের অন্য আরও একটি কারণ রয়েছে। কৃষি পর্যটনও এই গ্রামের অন্যতম আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শীতকাল, অর্থাৎ ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস হল মোরাচি চিনচোলি দর্শনের সেরা সময়। সকালের কুয়াশায় মোড়া গ্রাম যেন রহস্যময় ময়ূরের লীলক্ষেত্র হয়ে ওঠে তখন। তা ছাড়া শীতকালে জমি থেকে তোলা হয় হুরডা নামে ফসল। হুরডা হল তাজা সবুজ জোয়ার। হুরডা দিয়ে তৈরি নানা টিফিন মাহারাষ্ট্র ও গুজরাতে অত্যন্ত জনপ্রিয়।

কী ভাবে যাবেন

পুণে থেকে মাত্র ৫৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই গ্রাম। অর্থাৎ, ট্রেন বা উড়ান যে ভাবেই হোক, আগে আপনাকে পুণে পৌঁছোতে হবে। সেখান থেকে দেড় ঘণ্টার পথ গাড়িতে পাড়ি দিয়ে পৌঁছে যাবেন মোরাচি চিনচোলি।

কোথায় থাকবেন?

পুণের কাছাকাছি অবস্থিত বলে মোরাচি চিনচোলিতে থাকার বিশেষ প্রয়োজন হয় না। পুণে থেকে একদম সক্কালে রওনা হয়ে সারা দিন থেকে সন্ধ্যায় পুণে ফিরে আসতে পারেন। তবে এই গ্রামে থাকার জন্য কিছু হোটেল এবং হোমস্টে রয়েছে। যেমন: (১) HOTEL MAHLAR GAD (09022194745); (২) Ashokvan (08766914536)।

আরও পড়তে পারেন

‘ব্লু-ফ্ল্যাগ’ তকমা পেল ভারতের আরও দুই সৈকত, মোট সংখ্যা হল ১২

চলুন ঘুরে আসি রাজস্থান ২: জয়পুর-ফতেপুর-বিকানের-অজমের

তামিলনাড়ুর স্বল্পচেনা গন্তব্য, সৈকত-মন্দিরের শহর তিরুচেন্দুর

হৈমন্তীপার্বণ: শঙ্খ নয়, হাওড়ার ভট্টাচার্যবাড়ির জগদ্ধাত্রীর বাঁ হাতে থাকে খড়্গ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *