বর্ষায় অপরূপ মহারাষ্ট্র, ছোট্ট ছুটিতে ঘুরে নিন ভন্ডারদরা, মালশেজ ঘাট

ভ্রমণ অনলাইনডেস্ক: ‘Best Monsoon Destionations in India’ লিখে গুগলে সার্চ করুন। খুব ওপরের দিকেই থাকবে মহারাষ্ট্রের কয়েকটি জায়গার নাম। যেখানে বৃষ্টির ছটায় ঢেকে যায় পশ্চিমঘাটের সবুজ। শ্রাবণের আহ্বানে আকাশ যেন অলীক মেঘ-চাদরে ঢেকে যায় পাহাড়ের আঁকিবুকি। ভন্ডারদরা এবং মালশেজ ঘাটের বৃষ্টি আপনাকে অন্য এক জগতেই নিয়ে যাবে।

বৃষ্টি পুরোপুরি উপভোগ করতে হলে ভন্ডারদরা এক নিরিবিলি ঠেক। সমুদ্রতল থেকে আড়াই হাজার ফুট উচ্চতার এই পর্যটনকেন্দ্রের এক দিকে সহ্যাদ্রীর অনন্ত নিবিড়তা অন্য দিকে সুবজাভার বর্ণময়তা। পুরোদস্তুর বর্ষা, অর্থাৎ জুন থেকে সেপ্টেম্বরই হল ভন্ডারদরার পর্যটন মরশুম। এখানকার মূল নদী ও শাখা নদীগুলি, ছোটো বড়ো প্রপাতগুলি, যেন চমক দমকে ভরে থাকে।

অপরূপ রহস্যরোমাঞ্চে ভরা আমব্রেলা ফলস, রন্ধা ফলস- এ বলে আমায় দেখ ও বলে আমায় দেখ—এমনই প্রাণবন্ত। মরাঠিরা যাঁকে বলেন ‘মহারাষ্ট্রের এভারেস্ট’ সেই ‘কালসুবাঈ’ হল মহারাষ্ট্রের সহ্যাদ্রী পর্বতমালার উচ্চতম গিরিশিখর। ট্রেকারপ্রেমীদের পছন্দের জায়গা।

ভন্ডারদরার গর্বিত অহঙ্কার এখানকার আর্থার লেক। টলটলে নীল জলে রিমঝিম বৃষ্টি মেখে নৌবিহার-বিনোদনের ভাগীদার হতে দিই নিজেকে যথেচ্ছ ভাবে। রয়েছে ব্রিটিশ জমানায় স্থাপিত জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র। কালো মর্মরে সৃষ্ট অমৃতেশ্বর শিবমন্দিরটি ১১ শতকের সাক্ষী। গর্ভগৃহে শিবলিঙ্গ। পবিত্র এই মন্দিরচত্বরটি লাগোয়া জলাশয়ে উদয়াস্ত পরিযায়ী পাখিদের জটলা। পক্ষীপ্রেমীদের জন্য আদর্শ স্থান বলা যেতে পারে।

ভন্ডারদরায় রাত্রিবাস করেই এক দিনে ঘুরে নেওয়া যেতে পারে ত্র্যম্বকেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ এবং কুম্ভনগরী নাসিকের সব দ্রষ্টব্য স্থান। আরও এক দিন ঘুরে নেওয়া যেতে পারে শ্রী সত্যসাঁইবাবার শিরডি।

ভন্ডারদারা থেকে ঘণ্টা তিনেকের দূরত্বে আরও এক পাহাড়ি ঠেক মালশেজ ঘাট। ২,২০০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট বর্ষণসিক্ত মালশেজ ঘাটের রমণীয় প্রকৃতিতে কেবল সবুজেরই সমারোহ। মহারাষ্ট্রের পশ্চিমঘাট পাহাড়কোলে অপরূপ দিগন্ত ঘেরা নিসর্গ শোভা, ঘন জঙ্গলে বাতাবরণ, পরিযায়ী পাখি, বর্ষার মদতপুষ্ট অগণিত নদী-নালা-প্রপাত।

মালশেজ ঘাটের বর্ষা উপভোগ করার পাশাপাশি আরও একাধিক জায়গায় আপনাকে যেতেই হবে। তাদের মধ্যে অন্যতম ছত্রপতি শিবাজির জন্মস্থান শিবনেরি দুর্গ। এ ছাড়াও রয়েছে লেন্যাদ্রি বৌদ্ধ গুহা, নানেঘাট রিভার্স ওয়াটারফল্স — হাওয়ার দাপটে ঝরনার জল যেখানে উলটো দিকে প্রবাহিত হয়।

সব মিলিয়ে তিন রাত, চার দিনের একটা ট্যুরে এই দুটো স্থান খুব ভালো করেই ঘুরে নিতে পারেন আপনারা।

কী ভাবে যাবেন

কলকাতার দিক থেকে যেতে হলে আপনি প্রথমে পৌঁছোন নাসিক। হাওড়া/শালিমার থেকে সরাসরি ট্রেন আছে নাসিকের। বিমানে গেলে যেতে হবে মুম্বই। সেখান থেকে ট্রেনে বা গাড়ি ভাড়া করে চলে আসুন নাসিক। নাসিকের দ্রষ্টব্য স্থানগুলি ঘুরে গাড়ি ভাড়া করে চলে যান ভন্ডারদরা। নাসিক থেকে ভন্ডারদরার দূরত্ব ৭৩ কিমি। প্রথম দিন বিকেলে ঘুরে নিন ভন্ডারদরার দর্শনীয় স্থানগুলি। দ্বিতীয় দিন ভন্ডারদরা থেকে ঘুরে আসুন শিরডি। তৃতীয় দিন আপনার গন্তব্য ভন্ডারদরা থেকে মালশেজ ঘাট। ভন্ডারদরা থেকে মালশেজ ঘাটের দূরত্ব ৯৭ কিমি। মালশেজ ঘাটেমালশেজ ঘাটেমালশেজ ঘাটেমালশেজ ঘাটেমালশেজ ঘাটে সব কিছু ভালো করে ঘুরে চতুর্থ দিন বিকেলে পৌঁছে যান কল্যাণ রেলস্টেশনে। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার ট্রেন ধরুন।

কোথায় থাকবেন

মালশেজ ঘাট এবং ভন্ডারদরা, দুটো জায়গাতেই মহারাষ্ট্র পর্যটন উন্নয়ন নিগমের রিসর্ট রয়েছে। থাকার জন্য ওটাই সেরা। অনলাইনে এই রিসর্ট দুটি বুক করে নিতে পারেন। ওয়েবসাইটের লিঙ্ক: https://www.mtdc.co/en/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *