জ্বর আছে কিনা দেখা হবে রোজ, হোটেলে চালু হতে পারে নয়া বিধি

ভ্রমণ অনলাইন ডেস্ক: পর্যটকদের ‘আরোগ্য সেতু’ অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে। রোজ অতিথি এবং কর্মীদের শারীরিক তাপমাত্রা মাপা হবে। পর্যটন মন্ত্রক যে খসড়া ‘যথাযথ কার্য-পরিচালন পদ্ধতি’ (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসেডিউরস, এসওপি) তৈরি করেছে, তা যদি চালু হয় তা হলে এগুলি বাধ্যতামূলক হচ্ছে। সংবাদসংস্থা আইএএনএস সূত্রে এ খবর জানা গিয়েছে।

করোনাভাইরাসের জেরে দেশ জুড়ে লকডাউন চললেও আগামী দিনগুলোতে তার নিষেধাজ্ঞা ক্রমশই শিথিল হবে এবং হোটেলগুলোও ধীরে ধীরে কাজ শুরু করবে। সে ক্ষেত্রে সরকারের বেঁধে দেওয়া ‘এসওপি’ মেনে চলতে হবে তাদের।

হোটেল, লজ, রিসর্ট বা পর্যটকদের অন্যান্য থাকার জায়গার জন্য খসড়া ‘এসওপি’ তৈরি হয়েছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে পোস্ট কোভিড-১৯ প্রোটোকলস্‌ ফর অ্যাকোমোডেশন ইউনিটস’। খসড়ায় বলা হয়েছে, কর্মীদেরও ‘আরোগ্য সেতু’ রাখতে হবে এবং অতিথিরা যখন চেক ইন করবেন তখন তা ব্যবহার করতে হবে। পর্যটনশিল্পের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট মহল মনে করে, সরকার যদি ‘আরোগ্য সেতু’ ব্যবহার আবশ্যিক না করে তা হলে সে ক্ষেত্রে অতিথিদের এই অ্যাপ রাখা থেকে রেহাই দেওয়া যেতে পারে।

আর খসড়া ‘এসওপি’-তে হোটেলে প্রত্যেক অতিথি এবং কর্মীর রোজ শারীরিক তাপমাত্রা মাপতে হবে। এর জন্য থার্মাল গান থার্মোমিটার ব্যবহার করা হবে খসড়ায় বলা হয়েছে, হোটেলে বা অতিথির ঘরে, কোথাও কোনো দর্শনপ্রার্থীকে আসতে অনুমতি দেওয়া হবে না।

আরও পড়ুন: এ বার অচেনা, অদেখা ডুয়ার্স, কোভিড-পরবর্তী সময়ে

খসড়া ‘এসওপি’-তে আরও বলা হয়েছে, লাইন দেওয়ার সময় অতিথিরা নিজেদের মধ্যে ২ মিটার করে দূরত্ব বজায় রাখবেন। শারীরিক দূরত্ব বিধি মেনে চলার জন্য মেঝেতে দাঁড়ানোর জায়গা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে।

হোটেলের রিসেপশনে যাতে ভিড় না জমে যায়, তার জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অতিথিদের ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে এবং অতিথিরাও অন্যকে যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলবেন। রিসেপশনে সব কিছু বিশদে জানাতে হবে – তাঁর বেড়ানোর খতিয়ান, শারীরিক অবস্থা, আইডি প্রমাণ। একটা সেলফ্‌ ডিক্লারেশন ফর্মও অতিথিকে পূরণ করতে হবে।

ঘর পরিষ্কার করার সময় হাউসকিপিং কর্মীকে মাস্ক পরতে হবে। প্রয়োজনে পিপিই (পার্সোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট) পরতে হতে পারে।

অতিথিদের চেক-আউটের ব্যাপারে খসড়া ‘এসওপি’-তে বলা হয়েছে, চেক-আউটের অন্তত এক ঘণ্টা আগে রিসেপশনে জানাতে হবে এবং এ ব্যাপারে রিসেপশন সবুজ সংকেত দেওয়ার পর অতিথিরা চেক আউট করবেন। অতিথিদের কত টাকা দিতে হবে তা আগাম জানাতে হবে এবং যতটা সম্ভব ডিজিটাল পদ্ধতিতে টাকা মেটানোর জন্য তাঁদের অনুরোধ করা হবে।

যদি সন্দেহ হয়, কোনো অতিথির কোভিড ১৯ সংক্রমণ হয়েছে, আর তিনি যদি হাঁচেন বা কাশেন তা হলেও তাঁকে চেক ইন করা থেকে আটকানো যাবে না। তবে তাঁকে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলা হবে। তাঁর শারীরিক অবস্থার ওপর হোটেল কর্তৃপক্ষকে নজর রাখতে হবে। যদি তাঁর অসুস্থতা জারি থাকে তা হলে সংশ্লিষ্ট ঘর বন্ধ করে দেওয়া হবে এবং পুরো ফ্লোর, রিসেপশন এবং সমস্ত কমন জায়গা ভালো করে ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

খসড়া ‘এসওপি’-তে বলা হয়েছে, এ ক্ষেত্রে হোটেল কর্তৃপক্ষ করোনা হেল্পলাইন নম্বরে যোগাযোগ করবেন। তবে পর্যটনশিল্প মহল চায়, শুধুমাত্র সক্রিয় কোভিড-১৯ রোগীর ক্ষেত্রে এটা করা উচিত।

আর সন্দেহভাজন অতিথি যদি পালিয়ে যান বা তাঁর যদি কোনো খোঁজ না মেলে তা হলে যত দ্রুত সম্ভব পুলিশে খবর দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে খসড়ায়। এখন দেখা যাক, এই খসড়া চূড়ান্ত হয় কিনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *