ভ্রমণ অনলাইন ডেস্ক: কোনো কোনো রাজ্যে করোনার সংক্রমণ কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের কোনো কোনো জায়গায় যাওয়ার জন্য পর্যটকদের কোভিড ১৯ নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে যেতে হচ্ছে। মহারাষ্ট্রে ইদানীং করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। এ ছাড়াও কেরলেও সংক্রমণ কমছে না। ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ ও পঞ্জাবের মতো রাজ্যেও সংক্রমণের সংখ্যাটা খুব বেশি না হলেও সেটা বাড়তির দিকে। তাই ভারতের বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে পর্যটকদের জন্য বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে।
কোথায় কী বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে তা একনজরে দেখে নেওয়া যাক –
পশ্চিমবঙ্গ
চার রাজ্যের বিমানযাত্রীদের জন্য পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ জারি করা হল। বুধবার রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব এইচ কে দ্বিবেদী এক নির্দেশিকায় জানিয়েছেন, মহারাষ্ট্র, কেরল, কর্নাটক ও তেলেঙ্গানা থেকে বিমানে আগত ব্যক্তিদের আরটি-পিসিআর পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট দেখানো বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এই নির্দেশ আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার বেলা ১২টা থেকে চালু হবে। বিমান ছাড়ার সময়ের থেকে পরীক্ষার রিপোর্ট ৭২ ঘণ্টার বেশি পুরোনো হলে চলবে না।
দিল্লি
দিল্লি সরকার ঘোষণা করেছে, মহারাষ্ট্র, কেরল, ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ ও পঞ্জাব থেকে যাঁরা আসবেন, তাঁরা তাঁদের অবশ্যই কোভিড ১৯ নেগেটিভ রিপোর্ট থাকতে হবে। ২৬ ফেব্রুয়ারি মাঝরাত থেকে এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হবে এবং ১৫ মার্চ পর্যন্ত বহাল থাকবে। দিল্লির উদ্দেশে যাঁরা উড়ান ধরবেন, তাঁদের কাছে যে রিপোর্ট থাকবে তা অবশ্যই ৭২ ঘণ্টার বেশি পুরোনো হলে চলবে না।
মুম্বই
কেরল, গোয়া, গুজরাত, দিল্লি-এনসিআর এবং রাজস্থান থেকে যাঁরা মুম্বইয়ে ঢুকবেন তাঁদের সঙ্গে আরটি-পিসিআর নেগেটিভ রিপোর্ট থাকতে হবে এবং সেই রিপোর্ট মুম্বই পৌঁছোনোর সময় থেকে ৯৬ ঘণ্টার বেশি পুরোনো হলে চলবে না। সরকারের জারি করা সোপ (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর) অনুযায়ী, উপসর্গহীন যাত্রীদের প্রবেশ করতে দেওয়া হবে এবং যাঁদের উপসর্গ থাকবে তাঁরা হয় ফিরে যাবেন আর না হয় তাঁদের অ্যান্টিজেন পরীক্ষা হবে। যদি রিপোর্ট নেগেটিভ আসে, তা হলে মহারাষ্ট্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে আর যদি পজিটিভ আসে তা হলে তৎক্ষণাৎ রাজ্যের কোভিড কেয়ার সেন্টারে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে সমস্ত খরচ সংশ্লিষ্ট যাত্রীকে বহন করতে হবে।
পুনে
কেরল থেকে যাঁরা আসবেন তাঁদের আগমনের সময় আরটি-পিসিআর পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করে পুনে মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন এক নির্দেশ জারি করেছে।
ছত্তীসগঢ়
ছত্তীসগঢ় নির্দেশিকা জারি করেছে, দিল্লি আর মুম্বই থেকে আগত যাত্রীদের জন্য। বলা হয়েছে, যাঁরা ওই দুই শহর থেকে আসবেন, তাঁদের ওপর নজর রাখার জন্য সরকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলেছেন। অন্য রাজ্য থেকে যাঁরা ছত্তীসগঢ়ে ঢুকবেন তাঁদের কোভিড ১৯ স্ক্রিনিং এবং কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং-এর জন্য সাধারণ প্রশাসনিক দফতরকে বলা হয়েছে।
কর্নাটক
কর্নাটক সরকারও জানিয়ে দিয়েছে, যাঁরা মহারাষ্ট্র থেকে আসবেন, তাঁদের সঙ্গে আরটি-পিসিআর নেগেটিভ রিপোর্ট রাখতে হবে এবং সেই রিপোর্ট যেন ৭২ ঘণ্টার বেশি পুরোনো না হয়। এই নিয়ম সব ধরনের পরিবহনের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, সে বিমান, ট্রেন, বাস বা নিজের গাড়ি, যা-ই হোক না কেন। বিমানের ক্ষেত্রে বিমানসংস্থার কর্মী আরটি-পিসিআর রিপোর্ট পরীক্ষা করবেন। বাসের ক্ষেত্রে টিকিট কাটার সময় আরটি-পিসিআর নেগেটিভ রিপোর্ট দেখাতে হবে। অনলাইনে টিকিট কাটা হলে, বাসে ওঠার সময় কন্ডাক্টর ওই রিপোর্ট পরীক্ষা করবেন। আর ট্রেনের ক্ষেত্রে এই দায়িত্ব টিটিই-র।
জম্মু ও কাশ্মীর
জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসন ২০ ফেব্রুয়ারি এক নির্দেশিকা জারি করে বলেছে, যে সব যাত্রী বাইরে থেকে উড়ানে এসে শ্রীনগর বিমানবন্দরে পৌঁছোবেন, যতক্ষণ না কর্তৃপক্ষ তাঁদের পরীক্ষার রিপোর্ট পাচ্ছেন, জতক্ষণ তাঁরা বিমানবন্দর ছেড়ে যেতে পারবেন না। জানা গিয়েছে, বিমানবন্দরেই রিপোর্ট ইস্যু করা হবে এবং যাঁদের রিপোর্ট পজিটিভ আসবে, তাঁদের আইসোলেশনে পাঠানো হবে। তবে যে সব যাত্রীর কাছে সর্বাধিক ৪৮ ঘণ্টার পুরোনো আরটি-পিসিআর নেগেটিভ রিপোর্ট থাকবে, তাঁরা বিমানবন্দরে পরীক্ষা নাও করাতে পারেন।
হরিদ্বার
কুম্ভমেলার পরিপ্রেক্ষিতে এখন যাঁরা হরিদ্বার যাবেন, তাঁদের কাছেও আরটি-পিসিআর নেগেটিভ রিপোর্ট থাকতে হবে। কেন্দ্রের জারি করা সোপ (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর) অনুযায়ী, ওই পরীক্ষা হরিদ্বারে আসার ৭২ ঘণ্টার আগের হলে চলবে না।
আরও পড়ুন: পদব্রজে কলকাতা: অরবিন্দ, যতীন দাস, ১১-এর বিজয়ী, নেতাজি, সত্যেন বসুকে প্রণাম করে ভগৎ সিংয়ের ডেরায়