ভ্রমণ অনলাইন ডেস্ক : প্রতিবছর মাটি ধসে গিয়ে কান্তেশ্বর রাজার গড়ের উচ্চতা কমে যাচ্ছে। এরকম চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই হারিয়ে যাবে উত্তর-পূর্ব ভারতের ঐতিহাসিক নিদর্শন খেন রাজাদের তৈরি এই গড়।
মাথাভাঙার শীতলকুচিতে রয়েছে এই গড়। খেন রাজাদের কান্তেশ্বর উপাধি ছিল। তাঁরা নিজেদের রাজ্যকে শত্রুদের হাত থেকে সুরক্ষিত রাখতে রাজ্যের চারপাশে ৪০মিটার উঁচু এই সীমানাপ্রাচীর তৈরি করেছিলেন। যা কান্তেশ্বর গড় নামে পরিচিত। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এই গড়ের উচ্চতা ক্রমশ কমছে। ধসে যাচ্ছে মাটি।
গড়কে ধসের হাত থেকে বাঁচাতে প্রায় ২০ বছর আগে বনদফতর গাছ লাগিয়েছিল। এই গাছগুলির পরিচর্যার দায়িত্বে দেওয়া হয় শীতলকুচি ব্লকের গোঁসাইহাট, ছোটশালবাড়ি ও লালবাজার গ্রামপঞ্চায়েতকে। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ার ফলে অনেক গাছ মরে গিয়েছে। কিছু গাছ আবার চুরি হয়ে গিয়েছে।
গাছ না থাকায় প্রতিবছর বৃষ্টিতে ধসে যাচ্ছে গড়ের একাংশ। কমে যাচ্ছে গড়ের উচ্চতা। তাই স্থানীয়ও দাবি তুলেছেন গাছ লাগিয়ে বাড়ানো হোক গড়ের উচ্চতা।
স্থানীয় বাসিন্দা সুজিত চন্দ্র বর্মন জানিয়েছেন, ‘‘বয়স্কদের কাছে শুনেছি গড়ের উচ্চতা ৪০মিটারের বেশি ছিল। কিন্তু এখন এর উচ্চতা অনেকটাই কমে গিয়েছে। খুব শীঘ্রই গড়ের রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে প্রশাসনকে নজর দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’’
বনদফতর জানিয়েছে, গড়ের জমি তাদের আওতার মধ্যে পড়ে না। স্থানীয় প্রশাসন বললে তবে তারা গাছ লাগাতে পারবেন। শীতলকুচির বিডিও ওয়াংদি গ্যালপো ভুটিয়া আশ্বাস দিয়েছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
এই প্রচীরের ইতিহাস নিয়ে নানা গল্পকথা ছড়িয়ে আছে। একটি প্রচলিত আছে একটি উপকথা অনুযায়ী গোঁসানিদেবীর নির্দেশে বিশ্বকর্মা কান্তেশ্বর রাজের সুরক্ষায় রাতারাতি এই প্রাচীর গড়ে দেন। দেবীর কৃপাতেই নাকি তিনি রাজ হয়েছিলেন। গোঁসানীদেবীর মাহাত্ম্য বর্ণনার জন্যই পুরুষ চরিত্র কান্তেশ্বরের জন্ম।
পড়তে পারেন : চলো করি বিহার কোচবিহার
সূত্র : উত্তরবঙ্গ সংবাদ