ভ্রমণঅনলাইন ডেস্ক: জলদাপাড়া বা গোরুমারা তো রয়েছেই, এ বার গন্ডার দেখতে চলুন পশ্চিমবঙ্গের তৃতীয় গন্ডার অভয়ারণ্য পাতলাখাওয়ায়।
অনেকে হয়তো এখনও পাতলাখাওয়ার নাম শোনেননি। কিন্তু আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই এটি উত্তরবঙ্গের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনকেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে। কোচবিহার জেলায় অবস্থিত হলেও, এই পাতলাখাওয়া জঙ্গলটি জলদাপাড়া অভয়ারণ্যের বিস্তৃত একটা অংশ। এক কালে এখানেও গন্ডারের দেখা মিলত। কোচবিহারের রাজা মহারাজারা এক সময় পাতলাখাওয়া রসমতি বনাঞ্চলে শিকারেও যেতেন। তার পর ধীরে ধীরে এখান থেকেও গন্ডাররা জলদাপাড়ার দিকে চলে যায়।
আগামী ৮ নভেম্বর থেকে পাতলাখাওয়ার রসমতী বনাঞ্চল রাজ্যের তৃতীয় গন্ডার আবাসস্থল হিসাবে আত্মপ্রকাশ করছে। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের তিনটি গন্ডার দিয়ে ওই নতুন গন্ডার আবাসস্থলের যাত্রা শুরু হচ্ছে।
সর্বশেষ গন্ডার শুমারি অনুসারে বর্তমানে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে গন্ডারের সংখ্যা ২৩১-২৩৭টি। মাঝেমধ্যে গন্ডারের মধ্যে লড়াইও বেঁধে যাচ্ছে। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে গন্ডারের এই অসম্ভব চাপ কমাতেই রসমতী বনাঞ্চলকে গন্ডার আবাসস্থল করা হচ্ছে। প্রথমে তিনটে গন্ডার নিয়ে আসা হবে। পরে ধীরে ধীরে সংখ্যা বাড়ানো হবে।
পাতলাখাওয়া জঙ্গলের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়েছে তোর্সা। গত তিন বছর ধরে এই জঙ্গলকে গন্ডারের আবাসস্থল হিসেবে উপযুক্ত করে তোলা হয়েছে। গন্ডারেরদের প্রিয় খাবার চাড্ডা, পুরুন্ডি, চেপটি ও মালসা ঘাস লাগানো হয়েছে। গন্ডারের ওপরে নজর রাখতে বসানো হয়েছে নজরমিনারও।
তবে শুধু গন্ডারই নয়, এই জঙ্গলে আগে থেকেই হরিণ, গাউর এবং চিতাবাঘ রয়েছে। ফলে পাতলাখাওয়াতে যদি আপনার গন্ডারদর্শন না-ও হয় তা হলেও হতাশ হওয়ার কিছু থাকবে না।
![](https://www.bhramononline.com/wp-content/uploads/2019/09/patlakhawa-torsha.jpg)
আরও পড়ুন স্বল্পচেনা উত্তরবঙ্গ: নির্জনতার স্বর্গরাজ্য বুনকুলুং
এই গন্ডারের জন্যই যে পাতলাখাওয়ায় পর্যটন ধীরে ধীরে গতিপ্রাপ্ত হবে তা বলাই বাহুল্য। ফলে কিছু দিনের মধ্যে সেখানে ভিড়ও বাড়বে। শুরু হবে জঙ্গল সাফারিও। মানুষের কোলাহলের আগেই একবার সুযোগ পেলে এই জঙ্গলটা ঘুরে আসতেই পারেন। জলদাপাড়া-গোরুমারার বাইরে আরও একটা জঙ্গল দর্শন আপনার হয়ে যাবে।
কী ভাবে যাবেন
কোচবিহার থেকে মাত্র ৩০ কিমি দূরে পাতলাখাওয়া। ট্রেনে আসতে চাইলে পৌঁছোতে হবে কোচবিহার বা নিউ কোচবিহার স্টেশন। erail.in থেকে ট্রেন সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য নিয়ে নিন। বিমানে আসতে হলে বাগডোগরাই ভরসা। সেখান থেকে বাসে বা ট্রেনে কোচবিহার এসে পাতলাখাওয়া পৌঁছোতে পারেন। কোচবিহার থেকে পাতলাখাওয়া পৌঁছোনোর জন্য গাড়ি ভাড়া করতে পারেন। পাতলাখাওয়ার সব থেকে কাছের স্টেশন ঘোকসাডাঙা। একমাত্র শিয়ালদহ-নিউ আলিপুরদুয়ার তিস্তা তোর্সা এক্সপ্রেস এই স্টেশনে থামে। স্টেশন থেকে অটো বা টোটো পাওয়া যাবে।
কোথায় থাকবেন
![](https://www.bhramononline.com/wp-content/uploads/2019/09/patlakhawa-cottage.jpg)
কোচবিহারের এত কাছে হওয়ার ফলে হয়তো অনেকেই পাতলাখাওয়ায় রাত্রিবাসের প্রয়োজন মনে করবেন না। কিন্তু জঙ্গলের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য এখানে একটা রাত কাটানো উচিত। ভবিষ্যতে হয়তো এখানে আরও রিসর্ট হবে, কিন্তু আপাতত এখানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বনোন্নয়ন এজেন্সির রসমতী কটেজ। সাধারণ দ্বিশয্যা ঘরের ভাড়া ১০০০ টাকা। অনলাইনে বুক করার জন্য লগ ইন করুন wbsfda.org-এই ওয়েবসাইটে।