কলকাতায় ঠাকুর দেখা: ঢাকুরিয়ার শহিদনগর সর্বজনীনের পুজোয় সম্মানিত হচ্ছেন অনামা শিল্পীরা

Shahidnagar Sarbojanin
প্রতিমায় চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার কাজ চলছে।

শহিদনগর সর্বজনীন পুজো কমিটি এ বছর এক সঙ্গে চলার, এক সঙ্গে বাঁচার বার্তা দিচ্ছে। এ বছর তাদের পুজোর থিম হল ‘চেনা শহর অচেনা মুখ’।

আমাদের এই রাজ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন বহু শিল্পী, যাঁরা আমাদের অচেনা। শিল্পের নানা ক্ষেত্রের সঙ্গে তাঁরা জড়িত। এঁদের মধ্যে কেউ হয়তো সুনিপুণ হস্তশিল্পী, কেউ বা বাউলশিল্পী, কেউ হয়তো আড়বাঁশি বাজান। আমাদের এই শহরে ঘুরে বেড়ান তাঁরা। অচেনা হস্তশিল্পীদের কাছ থেকে তাঁদের তৈরি জিনিস কিনে আমরা ঘর সাজাই। অথচ আমরা তাঁদের কোনো খোঁজ রাখি না। এঁরা কোথায় থাকেন, কী ভাবে জীবিকা নির্বাহ করেন, কেমন ভাবে জীবনযাপন করেন, তা আমরা জানি না। এঁদেরই জনসমক্ষে আনার ব্রত নিয়েছে শহিদনগরের পুজো।

শহিদনগরের দোতলা মণ্ডপ।

দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়ার এই পুজো এ বার ৭৩ বছরে পড়ল। বিশিষ্ট শিল্পী পার্থ জোয়ারদার এ বার শহিদনগরের পুজোয় প্রতিমা ও মণ্ডপসজ্জার দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি জানালেন, পশ্চিমবঙ্গের নানা শহর, গ্রামে করেন বহু শিল্পী যাঁদের শিল্পকীর্তি আমাদের নজরে এলেও শিল্পীরা নিজেরা থেকে যান আমাদের অন্তরালে। তাঁদেরই শিল্পকীর্তি এ বার তুলে ধরা হচ্ছে শহিদনগরের পুজোয়।

পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, দক্ষিণ ২৪ পরগনা-সহ রাজ্যের নানা জেলা থেকে এসেছেন শিল্পীরা। মাদুর, মাটি, টেরাকোটা, বাবুই ঘাস-সহ বিভিন্ন উপকরণে তৈরি নানা হস্তশিল্প প্রদর্শিত হবে শহিদনগরের মণ্ডপে।  শুধু তা-ই নয়, ওই সব শিল্পীরা তাঁদের তৈরি শিল্প বিক্রিও করতে পারবেন পুজোর ক’টা দিন।

তৈরি হয়েছে দোতলা মণ্ডপ। নীচে চলবে শিল্পীদের ওয়ার্কশপ আর উপরে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা। শহিদনগরের এ বারের পুজো প্রকৃতপক্ষে সেই সব অনামা শিল্পীদের পুজো হয়ে উঠবে।

পার্থবাবুর আশা, পুজোর ক’টা দিন ওই সব শিল্পী কিছু অর্থ উপার্জন করে বাড়ি ফিরবেন। পাশাপাশি হয়তো দর্শনার্থীদের সঙ্গে এই শিল্পীদের এমন যোগাযোগ হবে যাতে ভবিষ্যতে অর্থ উপার্জনের একটা রাস্তা তৈরি হবে।   

ছবি: রাজীব বসু         

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *