ভ্রমণঅনলাইন ডেস্ক: করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে দীর্ঘ আড়াই মাসেরও বেশি সময় ধরে দেশ জুড়ে চলছে লকডাউন। যার ফলে দেশের অর্থনীতির মুখ থুবড়ে পড়ার মতো অবস্থা। সেই অর্থনীতির হাল কিছুটা ফেরাতে এখন শুরু হয়েছে আনলক পর্ব। বিভিন্ন ক্ষেত্রে কড়াকড়ি শিথিল করা হচ্ছে।
আনলক পর্বের সুযোগে পর্যটন শিল্পকে কিছুটা স্বমহিমায় ফেরাতে বিভিন্ন রাজ্য তাদের মতো করে ব্যবস্থা করছে। পিছিয়ে নেই পশ্চিমবঙ্গও। তারাও নানা ভাবে চেষ্টা করছে পর্যটন শিল্পকে একটু চাঙ্গা করতে। গত ৮ জুন থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে রাজ্য পর্যটনের পাঁচটি ট্যুরিস্ট লজ। গত সোমবার থেকে রাজ্য বন উন্নয়ন নিগমের অধীনে পাঁচটি রিসর্ট খুলে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের দরজাও খুলে গেছে পর্যটকদের জন্য। হোটেলে খুলেছে দিঘায়, হোটেল খুলেছে দার্জিলিঙে। ডুয়ার্সেও হোটেল-হোম স্টে খুলছে।
রাজ্য পর্যটনের যে পাঁচটি ট্যুরিস্ট লজ খুলেছে তার মধ্যে অন্যতম মাইথন। ট্যুরিস্ট লজ যখন খুলে গেছে, তখন এই আনলক পর্বেই চলুন না, সপ্তাহান্তে ঘুরে আসা যাক মাইথন থেকে।
উপভোগ করুন
পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ড সীমানায় বরাকর নদের উপর ১৫৭১২ ফুট দীর্ঘ ও ১৬৫ ফুট উঁচু ডিভিসির বাঁধ, ৬৬ বর্গ কিমি জুড়ে জলাধার। আশেপাশে অজস্র পাহাড় – লেকের মাঝে, লেককে ঘিরে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। ইচ্ছে হলে লেকে বোটিং করুন। আজ মাসতিনেক হল মাঝিদেরও রুটিরুজি বন্ধ। ওরাও আপনাদের আশায় নৌকা সাজিয়ে বসে আছে। লেকের জলে বোটিং করুন, মনোরম সূর্যাস্ত অবলোকন করুন।
কাছেই হ্যাংলা পাহাড়ে ৫০০ বছরের প্রাচীন কল্যাণেশ্বরী মাতার মন্দির। ইচ্ছে হলে ঘুরে আসুন ১৬ কিমি দূরে ডিভিসির আরেক বাঁধ পাঞ্চেত ড্যাম, পাঞ্চেত পাহাড় ও গড়পঞ্চকোট।
বাঁধের নীচে পাহাড়ের ১৩৫ ফুট অন্দরে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। ডিভিসির পিআরও-র অনুমোদন নিয়ে দেখে আসা যায় জলবিদ্যুৎ উৎপাদন। বাঁধের নীচে রয়েছে ডিয়ার পার্কও। শীতে পরিযায়ী পাখির মেলা বসে মাইথনের লেকে।
কী ভাবে যাবেন
বরাকর (৯ কিমি) বা কুমারডুবি (৬ কিমি) হয়ে ট্রেনে মাইথন যাওয়া যায়। কিন্তু এখনও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক নয়। তাই সড়কপথই ভরসা। কলকাতা থেকে মাইথন ২৩১ কিমি। দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণের (এসবিএসটিসি) বাস পাবেন আসানসোল পর্যন্ত। আসানসোল থেকে মাইথন ২২ কিমি, গাড়ি ভাড়া করে পৌঁছে যান। এসবিএসটিসি বাসের জন্য অনলাইন বুকিং https://online.sbstcbooking.co.in।
কলকাতা থেকে সরাসরি গাড়ি ভাড়া করেও চলে যেতে পারেন মাইথন।
কোথায় থাকবেন
পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন নিগমের মুক্তধারা ট্যুরিজম প্রপার্টিতে (আগেকার মাইথন ট্যুরিস্ট লজ) থাকুন। টিলার মাথায় এই ভবন। উপর থেকে পাহাড়ে ঘেরা মাইথন জলাধার দেখতে খুব সুন্দর লাগে। অনলাইন বুকিং https://wbtdcl.com/।
রয়েছে জলাধারের মাঝে দ্বীপের উপর ডিভিসির অতিথিভবন ‘মজুমদার নিবাস’। খোঁজ নিয়ে নিন খুলেছে কিনা – যোগাযোগ ০৬৫৪০২৫২৪৬৫, ০৬৫৪০২৫২৪৮৮।
এ ছাড়াও রয়েছে বেশ কিছু বেসরকারি হোটেল। আনলক ১.০ পর্বে সেগুলোও খুলেছে। নেট সার্চ করলে পেয়ে যাবেন তাদের সন্ধান।
মনে রাখুন
মাস্ক পরা, শারীরিক দূরত্ব রাখা ইত্যাদি সমস্ত রকম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। নিয়মকানুন মেনে ঘুরে আসা যেতেই পারে মাইথন থেকে। দীর্ঘ বন্দিদশা থেকে একটু মুক্তি পেলে মনটাও ভালো থাকবে। আর রাজ্যের পর্যটনভিত্তিক অর্থনীতিকে জোরদার করতে সাহায্য করাও হবে।