ভ্রমণঅনলাইন ডেস্ক: করোনাভাইরাস জনিত লকডাউনের জেরে প্রায় ভেঙে পড়া পর্যটন শিল্পকে কিছুটা চাঙ্গা করতে উদ্যোগী হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। দেশ জুড়ে আনলক পর্ব শুরু হতেই গত ৮ জুন থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে রাজ্য পর্যটনের পাঁচটি ট্যুরিস্ট লজ। পাশাপাশি ১৫ জুন থেকে রাজ্য বন উন্নয়ন নিগমের পাঁচটি বনবাংলোও খুলে দেওয়া হয়েছে পর্যটকদের জন্য।
আপাতত যে বনবাংলোতে যাওয়ার সুযোগ পাবেন পর্যটকরা, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য মুকুটমণিপুরের সোনাঝুরি প্রকৃতি ভ্রমণ কেন্দ্র।
উপভোগ করুন
সপ্তাহান্তের ছুটি কাটানোর পক্ষে আদর্শ জায়গা কংসাবতী ও কুমারী নদীর সঙ্গমে অবস্থিত মুকুটমণিপুর। কুমারী আর কংসাবতীর জলে ৮৬ বর্গ কিলোমিটারের জলাধার। টলটলে জলে ছোটো ছোটো ঢেউ, তারই মাঝে ভেসে বেড়ায় নৌকা। বোটিং করার জন্য মাঝিদের আমন্ত্রণ উপেক্ষা করতে পারবেন না। দিকচক্রবাল ঢাকা পড়েছে নাতিউচ্চ পাহাড়ে। আঁকাবাঁকা পায়ে চলা পথ ধরে উঠে পড়ুন পাহাড়ের গা বেয়ে। দেখুন সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত, দুই-ই। আর জ্যোৎস্নারাত হলে তো কথাই নেই। এই ভ্রমণের স্মৃতি স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
ঘোরাঘুরি
(১) মেঠো পথে ৩ কিমি আর বাঁধ ধরে গেলে ৬ কিমি যেতেই পরেশনাথ পাহাড়ি টিলায় হিন্দুর দেবতা শিব ও জৈন তীর্থঙ্কর পার্শ্বনাথস্বামীর মন্দির। এ ছাড়াও মূর্তি রয়েছে নানান।

(২) নৌকায় নদী পেরিয়ে ও পারে আরও কিছুটা গেলে জলাধারে বেষ্টিত মহুয়া-কেন্দু-পলাশ-আমলকীতে ছাওয়া ছোট্ট সবুজ দ্বীপ বনপুকুরিয়া মৃগদাব।
(৪) ৪ কিমি দূরে গোরাবাড়ি পেরিয়ে অম্বিকানগর – অতীতের কীর্তিখ্যাত রাজা অনন্তধবল দেওর রাজধানী আজ বিধ্বস্ত বটে, তবে অম্বিকার মন্দিরে দেবী অম্বিকাকে দর্শন করে আসুন।
(৫) ঘুরে আসুন রানিবাঁধ হয়ে সুতানের জঙ্গল (২৯ কিমি), সুতানের জঙ্গল থেকে রানিবাঁধ ফিরে (১২ কিমি) সেখান থেকে চলুন ঝিলিমিল (২০ কিমি)। এ বার ঝিলিমিল থেকে প্রথমে চলুন তালবেড়িয়া ড্যাম (৬ কিমি), ঝিলিমিলে ফিরে চলুন কুইলাপাল (৩ কিমি)। কুইলাপাল থেকে ঝিলিমিলি হয়ে ফিরে আসুন মুকুটমণিপুরে, ৩৭ কিমি।

কী ভাবে যাবেন
মুকুটমণিপুর যাওয়ার সহজতম পথ হাওড়া থেকে ট্রেনে বাঁকুড়া, সেখান থেকে বাসে বা ভাড়া গাড়িতে খাতড়া হয়ে মুকুটমণিপুর, দূরত্ব ৫৫ কিমি।
কিন্তু এখনও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক নয়। তাই কলকাতা থেকে বাসে বাঁকুড়া চলুন, দূরত্ব আরামবাগ-বিষ্ণুপুর হয়ে ১৭৫ কিমি, দুর্গাপুর হয়ে ২১২ কিমি। বাসের জন্য দেখুন redbus.in। বাঁকুড়া থেকে বাসে বা ভাড়া গাড়িতে মুকুটমণিপুর।
গাড়িতে কলকাতা থেকে সরাসরি মুকুটমণিপুর চলুন, আরামবাগ-বিষ্ণুপুর হয়ে দূরত্ব ২৩০ কিমি, দুর্গাপুর হয়ে গেলে ২৬৭ কিমি।
আরও পড়ুন আনলকে চলুন: ডুয়ার্সের টিলাবাড়ি
কোথায় থাকবেন
বন উন্নয়ন নিগমের সোনাঝুরি প্রকৃতি ভ্রমণ কেন্দ্রের অবস্থানটি মুগ্ধ করে। পাহাড়শীর্ষের বনবাংলোয় পৌঁছোনোর জন্য রয়েছে ঘোরানো পেঁচানো পাহাড়ি পথ। তাতে অবশ্য গাড়ি ওঠে। অনলাইন বুকিং: wbfdc.net।
রয়েছে বিভিন্ন মানের বিভিন্ন দামের বেসরকারি হোটেল। সেগুলোও কিছু কিছু খুলেছে। নেট সার্চ করলে সন্ধান পাবেন।