কর্নাটকের গোকর্ণ: প্রকৃতি আর ধর্ম যেখানে মিলেমিশে একাকার

ভ্রমণ অনলাইনডেস্ক: কোলাহল-চেঁচামেচিহীন কোনো জায়গায় আপনাদের যেতে ইচ্ছে হয়? যেখানে মনোরম আবহাওয়া, প্রকৃতির নানা শব্দই হতে পারে একমাত্র সঙ্গী? যেখানে সমুদ্রের ঢেউয়ের গর্জন, পাখির কোলাহল, মন্দিরের ঘণ্টাধ্বনি এবং মন্ত্রের সুর শুনতে শুনতে মনে নেমে আসবে অপার শান্তি?

তা হলে এই জায়গাটি হতে পারে আপনাদের জন্য আদর্শ।

বালুচর ধরে দক্ষিণ দিকে হাঁটা দিলে সমুদ্রতট গিয়ে মেশে পাহাড়ের সঙ্গে। আবার পাহাড় টপকালেই আরেকটা সমুদ্র সৈকত। সেই সৈকত শেষ হবে আবার পাহাড়। তাকে টপকালে আবার সৈকত। এমন অনেক ছোটো ছোটো সমুদ্র সৈকত রয়েছে গোকর্ণ জুড়ে- কুদলে, ওম, হাফ মুন এবং প্যারাডাইস। এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ওম সমুদ্র সৈকত।

ওমের বালিচরও শেষ হয় কোনো এক পাহাড়ের কাছে গিয়ে। পাহাড় বেয়ে যদি উপরে ওঠেন, তা হলে দেখতে পাবেন নীচের আরব সাগর। পাহাড়ের গায় আঁছড়ে পড়ছে ঢেউ। আর পাহাড়ের উপর থেকে ওম সমুদ্র সৈকতকে দেখলে মনে হয়, যেন পাশাপাশি দুটো অর্ধচন্দ্রাকৃতি ‘ওম’।

৭০-৮০-র দশকে গোকর্ণ ছিল হিপিদের প্রিয় জায়গা। গোয়ার থেকে গোকর্ণ অনেকবেশি নির্মল এবং শান্তিপূর্ণ। তাই হয়তো হিপিরা এই স্থানে যাতায়াত শুরু করে।

সমুদ্রসৈকত, গোয়ার ছোঁয়া ছাড়াও গোকর্ণের আরও এক পরিচিতি আছে। এখানে ধর্মীয় স্থলের গুরুত্ব এত অপরিসীম যে দক্ষিণ ভারতের কাশীও বলা হয় গোকর্ণকে। বহু মানুষ তীর্থ করতে গোকর্ণ যান। তবে অন্যান্য তীর্থক্ষেত্রের মতো কোলাহল এখানে নেই।

গোকর্ণে থেকেই আপনি দেখে নিতে পারেন কুদলে সৈকত, ওম সৈকত, হাফ মুন সৈকত, প্যারাডাইস সৈকত, মহাবালেহশ্বর মন্দির, মহাগণপতি মন্দির, বিভূতি ফল্স, ইয়ানা রক্স, কোটি তীর্থ।

তাই দুটো দিন গোকর্ণে যদি কাটান, সেই অভিজ্ঞতা যে অসাধারণ হবে তা বলাই বাহুল্য।

কী ভাবে যাবেন?

কলকাতা থেকে গোকর্ণ যাওয়ার সব থেকে সহজ উপায় হল ট্রেনে বা উড়ানে হুব্বলি পৌঁছানো। ১৮০৪৭ আপ শালিমার-ভাস্কো ডা গামা অমরাবতী এক্সপ্রেস ট্রেনটি সপ্তাহে চার দিন রাত ১১:২০-তে শালিমার থেকে ছেড়ে তৃতীয় দিন সকাল ৮:৫০-এ হুব্বলি পৌঁছে যায়। এ ছাড়াও কলকাতা থেকে হব্বলির মধ্যে উড়ান রয়েছে। হুব্বলি থেকে গোকর্ণ ১৩৩ কিলোমিটার। তিন ঘণ্টার রাস্তা। গাড়ি পেয়ে যাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *