গরম থেকে বাঁচতে চলুন নির্জনতার স্বর্গরাজ্য বুনকুলুং

ভ্রমণঅনলাইন ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গের সমতল এখন তাপপ্রবাহের কবলে। এই পরিস্থিতিতে মানুষ খুঁজছেন তুলনামূলক ঠান্ডার কিছু জায়গা যেখানে দুটো দিন কাটিয়ে আসা যাবে। এমনই একটা জায়গা হল উত্তরবঙ্গের স্বল্পচেনা বুনকুলুং।

‘অফ বিট’ বলতে যা বোঝায় বুনকুলুং সে রকমই একটা জায়গা। উত্তরবঙ্গের পাহাড় বলতেই প্রথম যে ব্যাপারটি আমাদের মাথায় আসে তা হল কাঞ্চনজঙ্ঘা দর্শন। বুনকুলুং-এ কিন্তু সে সব ব্যাপার নেই। কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা মিলবে কী করে, চার দিকেই তো সু-উচ্চ পাহাড়। এক্কেবারে কাছ দিয়েই বয়ে চলেছে ছোট্ট নদী মুর্মাখোলা। আর কিছুটা দূরে রয়েছে বালাসন নদী, মিরিক যাওয়ার পথে দুধিয়ায় যে নদীকে পেরোতে হয়।

কংক্রিটের জঙ্গলে থাকতে থাকতে আপনার জীবন যখন ব্যতিব্যস্ত, তখন বুনকুলুংয়ের অপার সবুজ আপনার চোখকে স্নিগ্ধ করবেই। বুনকুলুং এমনই এক জায়গা, যেখানে চা-বাগান এবং চাষের জমি আপনি এক সঙ্গে দেখতে পাবেন। শীতে কমলালেবুর বাগিচার সুগন্ধ এতে অন্য মাত্রা যোগ করবে৷ রাতের বেলায় দূরের কার্শিয়াং পাহাড়ের ঘর দোকানগুলিতে যখন আলো জ্বলে ওঠে, তখন বুনকুলুং-এর নিস্তব্ধতা থেকে সেই দৃশ্য দেখতে এক চরম রোমাঞ্চের জন্ম দেয়৷ ভোরে ঘুম ভাঙবে পাখির মিষ্টি ডাকে।

বুনকুলুংয়ের কাছেই রয়েছে মুর্মা চা-বাগান। হোমস্টেতে পৌঁছে একটু জিরিয়ে নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন হাঁটাহাঁটি করতে। পিচ রাস্তা ধরে কিছুটা এগিয়ে যান। একটা ক্যান্টিলিভার সেতু আসবে, সেই সেতুর নীচে বয়ে চলেছে মুর্মাখোলা। এগিয়ে চলুন। মুর্মা চা-বাগানের মধ্যে হাঁটতে থাকুন। ১০ মিনিট হাঁটলেই বালাসন নদীর গর্জন আপনার কানে আসবে। থামবেন না, হাঁটতে থাকুন। দেখবেন একটা সময়ে আপনি নদীর ধারে পৌঁছে গিয়েছেন। যদি আপনি একা থাকেন, তা হলে খেয়াল করবেন নদীর ধারে আপনি ছাড়া আর দ্বিতীয় কোনো মানুষই হয়তো নেই।

তা হলে শহুরে কোলাহল থেকে দু’দণ্ড বিশ্রাম নিতে বুনকুলুং এক আদর্শ জায়গা হতেই পারে, তাই তো? এটা জেনে রাখুন যে বুনকুলুং সারা বছরই যাওয়া যায়। উচ্চতা খুব একটা বেশি না হওয়ায় শীতে মাত্রাতিরিক্ত ঠান্ডার প্রকোপ থাকে না। আবার বর্ষায় চারিদিক থাকে সবুজ। তবে হ্যাঁ, বর্ষা উপভোগ করতে হলে, খারাপ রাস্তার দুর্ভোগ তো একটু সহ্য করতে হবে।

কী ভাবে যাবেন

প্রথমে আপনাকে এনজেপি স্টেশন বা বাগডোগরা বিমানবন্দরে পৌঁছোতে হবে। এখান থেকে বুনকুলুং ৪৩ কিমি। গাড়ি ভাড়া করে প্রথমে মিরিকের পথে দুধিয়া পর্যন্ত যান। সেখানে বালাসন নদী পেরিয়েই মিরিকের রাস্তা ছেড়ে ঘুরতে হবে ডান দিকে। সেখানে থেকে ৭-৮ কিমি দূরে বুনকুলুং। মিরিক থেকেও বুনকুলুং আসা যায়। দূরত্ব ১২ কিমি।

কোথায় থাকবেন

বুনকুলুং থাকার জন্য কিছু রিসর্ট তথা হোমস্টে রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বুনকুলুং জঙ্গল ক্যাম্প (০৯৯৩২২৩৪০৭৪), বুনকুলুং রিট্রিট ইকো হাট (০৯০৭৩০২৬১৪৫)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *