বন্যপ্রাণ ও সবুজ বাঁচাতে আগামী রবিবার কলকাতার বুকে বিশেষ মিছিল, আপনারাও হাঁটুন

ভ্রমণ অনলাইনডেস্ক: এ-ও এক যুদ্ধ। কলকাতার বুকে আর এক যুদ্ধ। এ বার যুদ্ধ সবুজ আর বন্যপ্রাণকে রক্ষা করতে। নাম তার ‘ওয়ার ২০২২’ (WAR 2022)। পুরো নাম তার ‘ওয়াইল্ডলাইফ অ্যাওয়ারনেস র‍্যালি ২০২২’, অর্থাৎ বন্যপ্রাণ সচেতনতা মিছিল ২০২২’। মূল উদ্দেশ্য, শহরবাসীর মধ্যে বন্যপ্রাণ নিয়ে সচেতনতা তৈরি করা।

আগামী রবিবার, ১৩ নভেম্বর, আশুতোষ কলেজ থেকে প্রিয়া সিনেমা পর্যন্ত একটি বিশেষ মিছিলের মধ্যে দিয়ে এই সচেতনতা গড়ে তোলার চেষ্টা করা হবে। এই মিছিলের মূল উদ্যোক্তা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘অনুভব’, যাদের মূল উদ্দেশ্যই হল আগামী প্রজন্মের কথা ভেবে পরিবেশ রক্ষার জন্য কাজ করা।

রবিবার আশুতোষ কলেজের সামনে সবাইকে সকাল ৮:২৯-এ চলে আসার জন্য আবেদন জানিয়েছে অনুভব। ১০:২৯ পর্যন্ত চলবে নাম নথিভুক্তকরণ পর্ব। ১০:৫৯-এ শুরু হবে মিছিল। ১২টা নাগাদ মিছিল শেষ হবে প্রিয়া সিনেমায়। তার পর কমবয়সিদের জন্য বিশেষ কিছু প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়েছে।

কলকাতার বিশিষ্ট মানুষেরা এই মিছিলে যোগ দেবেন। থাকবেন বিখ্যাত পর্বতারোহী দেবাশিস বিশ্বাস ও পিয়ালি বসাক। এই মিছিলে যোগ দেবেন কিংবদন্তি ফুটবলার জামশেদ নাসিরিও।

সাহিত্য পরিবার ‘বনপলাশি’ এই মিছিলে যোগ দিতে চলেছে। ‘বনপলাশির’ সম্পাদক ভার্গবী এই মিছিল সম্পর্কে বলেন, “মানুষ অতি স্বার্থপর জীব। আমিও তার ব্যতিক্রম নই। শহরে শ্বাস নিয়ে আজকাল স্বস্তি পাই না। নাক জ্বলে। চোখ জ্বলে। ভাবছিলাম, দেখছিলাম কিছু শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ সচেতন করতে চাইছে। তাই ‘অনুভব’-এর ডাক উপেক্ষা করতে পারিনি। দু’টো লোক যদি ভাবে ।

তিনি আরও বলেন, “এই পৃথিবী আমার ঘর। আমার ঘর আমি সুন্দর করে না রাখলে সে তো আমারই ক্ষতি। প্রতিটা ফ্ল্যাটে যদি ছাদে ছোটো ছোটো টবে গাছ লাগানো-বাঁচানো বাধ্যতামূলক হয়, তা হলে কেমন হয়! এই সব ভাবনা ভাগ করে নিতে চাই আরও দশ জনের সঙ্গে। তাই পথে নামব মানুষকে বলতে, চলো জীবন সবুজ করি সতেজ করি।”

‘বনপলাশি’র উপদেষ্টা সুশান্ত রায় কর্মকার বলেন, “না হয় নিজেদের জন্যই আমরা হাঁটি।” এই মিছিলে অংশ যোগ দিচ্ছেন লেখিকা বীথি কর। তিনি বলেন, “আগামীর বর্তমান অনুভূতির পদক্ষেপ অনুভবের জন্য আমরা হাঁটব।” এ ছাড়াও বনপলাশির তরফে মিছিলে হাঁটবেন সাংবাদিক শম্ভু সেন, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রী নীলাঞ্জন রায়-সহ আরও অনেকেই।

উল্লেখযোগ্য বিষয়, এই মিছিলে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ‘অনুভব’ যে আমন্ত্রণী কার্ডটি তৈরি করেছে, তার মূল আঁকাটা এঁকেছেন দশম শ্রেণির ছাত্র অনমিত্র বসু। এর থেকে বোঝা যায় যে পরিবেশ নিয়ে সচেতনতা ধীরে ধীরে নতুন প্রজন্মের মধ্যেই সঞ্চারিত হচ্ছে।

করোনা অতিমারি এখন নেই। তাই মনে করা হচ্ছে এ বারের মিছিলে অনেক মানুষই অংশ নেবেন। বিশিষ্টদের সঙ্গে পা মেলাবেন সাধারণ নাগরিকরাও। আপনারাও এই মিছিলে আসুন। সবাই মিলে সচেতনতা গড়ে তুলুন। কারণ, পরিবেশ এবং ভ্রমণ অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িয়ে। বন্যপ্রাণ এবং সবুজকে রক্ষা করা গেলে তবেই ভ্রমণকে বাঁচানো সম্ভব হবে।

প্রথম ছবি: আগের বছরের মিছিল

আরও পড়তে পারেন

মাদকতায় ভরা পূর্ব উপকূলের অপরূপা বাগদা সৈকত

শুধুমাত্র পর্যটকদের জন্য কলকাতার বিভিন্ন স্থানে ‘পিক-আপ’ আর ‘ড্রপ পয়েন্ট’ করার ভাবনা

শান্তিপুরে পালিত হচ্ছে রাস উৎসব, অন্যতম আকর্ষণ রাইরাজা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *