চিতাদের বাসস্থান হিসেবে কেন মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যানকেই বেছে নেওয়া হল

নয়াদিল্লি: শনিবার ভারতের কাছে ভীষণ উল্লেখযোগ্য একটা দিন ছিল। আফ্রিকার নামিবিয়া থেকে আটটি চিতা নিয়ে আসা হয়েছে ভারতে। মধ্যপ্রদেশের কুনো পালপুর জাতীয় উদ্যান এখন তাদের নতুন ঠিকানা। শনিবার চিতাগুলিকে খাঁচামুক্ত করেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

এখন অনেকের প্রশ্ন, কেন এই নির্দিষ্ট উদ্যানকেই বেছে নেওয়া হল আফ্রিকান চিতাদের জন্য? এমনিতেও মধ্যপ্রদেশের জনপ্রিয় যে সব জাতীয় উদ্যান রয়েছে —– কানহা, বান্ধবগড়, পেঞ্চ ইত্যাদি, তাদের আড়ালে কুনোর বেশি পরিচিতি নেই। তবুও তাকেই কেন বেছে নেওয়া হল?

ভারতে চিতা আনার পরিকল্পনা শুরু হয়েছিল আগেই। ২০১০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সময়কালে মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান, গুজরাত এবং উত্তরপ্রদেশের মোট ১০টি এলাকা পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল। তবে শেষমেশ মধ্যপ্রদেশের কুনোই চিতাদের ঠিকানা হিসাবে নির্বাচিত হয়।

ওয়াইল্ড লাইফ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া এবং ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া আবহাওয়া, খাদ্য, বন্য পশুর সংখ্যা প্রভৃতি নানা বিষয় এ ক্ষেত্রে বিবেচনা করেছিল। পাশাপাশি আরও তিনটে কারণ ছিল এই কুনোতে চিতাদের বাসস্থান গড়ে তোলার পেছনে। এই কারণগুলি হল:

) কুনো পালপুর জাতীয় উদ্যান ৭৪৮ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। সাত দশক আগে ভারতে শেষ বার চিতা দেখা গিয়েছিল ছত্তীসগঢ়ের কোরিয়া জেলার শাল বনে। সেই স্থান থেকে কুনো পালপুরের দূরত্ব খুব বেশি নয়।

২) চিতা সাধারণত মানুষ মারে না। তবে বিশ্বের দ্রুততম এই প্রাণীর থাকার জন্য অনেকটা জায়গা প্রয়োজন। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় তারা থাকতে পারে না। চিতার চাই নিরিবিলি এবং বিস্তীর্ণ ঘন সবুজ জঙ্গল। ভারতে তেমন জঙ্গলের সংখ্যা কম। মধ্যপ্রদেশের কুনো পালপুর জাতীয় উদ্যান তার মধ্যে অন্যতম। বন্যপশুদের আশ্রয়ের জন্য সেখানকার ২৪টি গ্রামের বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

৩) কুনোতে একই সঙ্গে বাঘ, সিংহ, চিতা এবং চিতাবাঘ— চার প্রকার হিংস্র শিকারি প্রাণীকে রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এদের সহাবস্থান যাতে নির্বিঘ্নে সম্ভব হয়, তার জন্য সরকার একাধিক পদক্ষেপ করেছে। ভারতে এই মুহূর্তে সিংহ রয়েছে শুধু গুজরাতে। কুনোতেও তাদের দ্বিতীয় ঠিকানা হতে পারে।

১৯৮১ সালে অভয়ারণ্য হয় কুনো। ২০০৮ সালে এটি জাতীয় উদ্যানের তকমা পায়। কিন্তু এত দিন পর্যটকদের কাছে খুব একটা জনপ্রিয়তা ছিল না কুনোর। এই চিতার আগমনে এক লহমায় সেই জনপ্রিয়তা যে বাড়ল, তা বলাই বাহুল্য।

রাজস্থান-সীমানা ঘেঁষা মধ্যপ্রদেশের মোরেনা ও শেওপুর জেলা জুড়ে বিস্তৃত কুনো পালপুর জাতীয় উদ্যান। এর প্রবেশফটক রয়েছে টিকটোলি, আহেরা ও পিপল-বাওয়াডিতে। গ্বালিয়র (গোয়ালিয়র) থেকে টিকটোলি প্রবেশফটকের দূরত্ব ৮৪ কিমি এবং শিবপুরী থেকে আহেরার দূরত্ব ৫২ কিমি।

আরও পড়তে পারেন

গ্রামবাংলায় আনন্দময়ীর আগমনবার্তা নিয়ে এল ভাদ্র-সংক্রান্তির ‘অরন্ধন’

২৩ তারিখ থেকে ভারতীয় পর্যটকদের জন্য খুলছে ভূটান, তবে গুণতে হবে প্রচুর টাকা

পুজোয় অদূরে ৫ / দেওঘর-মধুপুর-গিরিডি

অথেনটিক চাইনিজ খাবার চাই? সক্কালেই চলুন কলকাতার লালবাজারের কাছে ছাতাগলিতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *