ভ্রমণঅনলাইন ডেস্ক: এ বার ট্রেনে যেতে যেতেই উপভোগ করুন প্রাকৃতিক দৃশ্য। ট্রেনের কোচে বসে কাচের জানলা এবং কাচের সিলিং দিয়ে মন আর চোখ ভোরে ডুয়ার্সের সৌন্দর্যের স্বাদ নিতে নিতে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে পৌঁছে যান আলিপুরদুয়ার।
ডুয়ার্সের পর্যটকদের জন্য রেলের উপহার! শনিবার থেকে চালু হচ্ছে এই অত্যাধুনিক ট্রেন, যার পোশাকি নাম ‘ভিস্টা ডোম’। ইচ্ছে হলে ওই ট্রেনে ওই দিনই ফিরে আসতে পারেন এনজেপিতে।
দার্জিলিং-কালিম্পং আর ভুটানের পাহাড়ের গা ঘেঁষে ডুয়ার্সের দিগন্তব্যাপী চা বাগান। তার অপরূপ সৌন্দর্য হাতছানি দেয় ভ্রমণপিপাসুদের। এ বার ‘ভিস্টা ডোম’ কোচে চেপে সেই হাতছানিতেই সাড়া দেবেন পর্যটকরা। খুলে যাবে ডুয়ার্স ভ্রমণের এক নতুন দিগন্ত।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক গুণীত কৌর জানিয়েছেন, আপাতত সপ্তাহে তিন দিন – শুক্র, শনি ও রবিবার এই ট্রেনটি চলবে। কাচের ভেতরে বড়ো বড়ো জানালা রয়েছে। ট্রেনের যাত্রাপথেই ডুয়ার্সের জঙ্গল-পাহাড়-চা বাগানের সৌন্দর্য আরও ভালো ভাবে উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকরা।”
এ ছাড়া ভিস্টা ডোমে ১৮০ ডিগ্রি রিভলভিং চেয়ার রাখা হয়েছে। যাতে পর্যটকেরা চেয়ার ঘুরিয়ে জানলার মুখোমুখি বসে বাইরের প্রাকৃতিক শোভা উপভোগ করতে পারবেন।
বিক্ষোভের পর মাদারিহাটেও স্টপেজ
উল্লেখ্য, এই ট্রেন চালু হওয়ার কথা ঘোষণা হওয়ার পরেই একটু বিতর্কও তৈরি হয়েছিল। একশৃঙ্গ গন্ডারের জন্য বিশ্বখ্যাত জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান যে স্টেশনের সব থেকে কাছে, টাইমটেবিল অনুযায়ী সেই মাদারিহাটে কোনো স্টপেজ দেওয়া ছিল না ট্রেনটির। বিষয়টি জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন মাদারিহাটের মানুষজন।
রেলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মাদারিহাট স্টেশনে ধরনায় বসেন এলাকাবাসী। তার পরেই অবশ্য মাদারিহাটবাসীদের দাবি মেনে নেয় রেল। ট্রেনটি এখন মাদারিহাটেও দাঁড়াবে।
আপাতত প্রতি শুক্র, শনি এবং রবিবার সকাল ৭:২০-তে এনজেপি ছেড়ে ট্রেন দুপুর ১টায় আলিপুরদুয়ার পৌঁছোবে। পথে দাঁড়াবে শিলিগুড়ি জংশন, সেবক, নিউ মাল জংশন, চালসা, মাদারিহাট, হাসিমারা এবং রাজাভাতখাওয়ায়। ফিরতি পথে ওই ট্রেন দপুর ২টোয় আলিপুরদুয়ার ছেড়ে এনজেপি পৌঁছোবে সন্ধ্যা ৭টায়।
পর্যটনের বিকাশ হবে, বাড়বে রেলের আয়ও
এই ট্রেন চালু হলে ডুয়ার্সের পর্যটন ব্যবসা যেমন জমে উঠবে, তেমনই রেলের আয় বাড়বে বলেও মনে করছে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল। করোনা অতিমারির কারণে একাধিক নিয়মকানুনের জন্য পর্যটন ব্যবসা কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে। এই ট্রেনটি চালু হলে ফের ডুয়ার্সের আকর্ষণ বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই ট্রেনে রয়েছে দু’টি সাধারণ চেয়ার কার, যেখানে ভাড়া জনপ্রতি ৮৫ টাকা। রয়েছে দু’টি এসি চেয়ার কার, যেখানে ভাড়া জনপ্রতি ৩১০ টাকা। একটি ভিস্টা ডোম কোচ রয়েছে যার ভাড়া জনপ্রতি ৭৭০ টাকা। আইআরসিটিসি (IRCTC)-এর ওয়েবসাইট থেকে টিকিট বুক করা যাচ্ছে।
সূত্র: খবর অনলাইন
আরও পড়তে পারেন
১৭ মাস পর টয় ট্রেন ছুটল এনজেপি থেকে দার্জিলিং, খুশির হাওয়া পর্যটন মহলে