এ বছরেও গড়াবে না মাহেশের রথের চাকা

ভ্রমণঅনলাইন ডেস্ক: গত বছরের মতো এ বারেও গড়াবে না মাহেশের রথের চাকা। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জেরে এই সিদ্ধান্ত করেছেন মাহেশের জগন্নাথ জিউ ট্রাস্টি বোর্ড।

২৭ আষাঢ় ১৪২৮ বঙ্গাব্দ, ১২ জুলাই ২০২১ খ্রিস্টাব্দ সোমবার জগন্নাথদেবের রথযাত্রা। গত বছরের মতো এ বছরেও করোনার কারণে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই উৎসব নিয়মমাফিক চেহারায় পালিত হবে। ইতিমধ্যে পুরীর রথযাত্রায় যে শুধুমাত্র টিকার দু’টি ডোজ পাওয়া সেবায়েতরাই যোগ দিতে পারবেন তা জানিয়ে দিয়েছে ওড়িশা সরকার। এ বার পুরীর পথেই হাঁটল মাহেশ। বরং বলা আরও ভালো, পুরীর থেকেও আরও কড়া সিদ্ধান্ত নিল মাহেশ। পশ্চিমবঙ্গের মাহেশের রথযাত্রা এ বছর ৬২৫ বছরে পড়ল।

পুরীর রথ কাঠের হলেও মাহেশের রথ লোহার। লোহার রথটি ১৩৬ বছরের প্রাচীন। পুরীতে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার আলাদা আলাদা রথ থাকলেও মাহেশে একটি রথেই অধিষ্ঠান করেন তিন জন। প্রতি বছর কয়েক লক্ষ মানুষ এই রথযাত্রা উপভোগ করতে ছুটে আসেন মাহেশে। কিন্তু এ বছরও রথ বেরোবে না।

মাহেশের রথযাত্রাকে নব নীলাচলে রথযাত্রা বলেও অভিহিত করা হয়। কারণ মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেব বহু বার এসেছেন এই রথের সময়। তিনিই এই নব নীলাচল নামকরণ করেছিলেন। রথযাত্রায় যোগ দিয়েছিলেন স্বয়ং পরমহংস শ্রীরামকৃষ্ণদেবও। তবে সেই ঐতিহাসিক রথকে এ বছর থামাতেই হচ্ছে করোনা অতিমারির কারণে।

মাহেশের রথে অধিষ্ঠিত জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা।

এই বিষয়ে কথা হল জগন্নাথ মন্দিরের প্রধান সেবায়তের পুত্র তথা ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক পিয়াল অধিকারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, মাহেশের রথযাত্রা এক ঐতিহাসিক রথযাত্রা। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। তার ফলে করোনার সংক্রমণ বাড়তে পারে বলেই মনে করছেন তাঁরা। ইতিমধ্যে রাজ্যে করোনা সংক্রমণের গ্রাফ ক্রমেই নিম্নমুখী হচ্ছে। তাই এই মুহূর্তে মানুষের সমাগম হলে সংক্রমণের সেই নিম্নমুখী ধারা ব্যাহত হতে পারে। তাই এমন কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হল মাহেশের জগন্নাথ মন্দিরের কর্তৃপক্ষকে। তবে রথের পূজা, ভোগরাগ সমস্ত নিয়মই পালিত হবে বলে জানালেন পিয়ালবাবু।

গত বছর মাহেশের জগন্নাথ মন্দিরের পিছনেই এক অস্থায়ী মাসির বাড়ি তৈরি করা হয়। সেখানেই রথের দিন থেকে উল্টোরথ অবধি জগন্নাথদেব, বলভদ্র এবং সুভদ্রাদেবী অবস্থান করেছিলেন। এ বারও এমন অস্থায়ী মাসির বাড়ি তৈরি করা হবে বলে জানা যাচ্ছে।

এ ছাড়া জগন্নাথদেবের প্রতিভূ হিসাবে নারায়ণশিলাকে গত বারের মতো এ বারও পদব্রজে নিয়ে যাওয়া হবে মাসির বাড়িতে। সেখানেই আট দিন অবস্থান করবেন তিনি। হবে পূজা, ভোগরাগ। আবার উল্টোরথের দিন নারায়ণ শিলাকে মূল মন্দিরে ফিরিয়ে আনা হবে।

সূত্র: খবরঅনলাইন

আরও পড়ুন: দার্জিলিং মেল স্পেশাল-সহ আরও কিছু দূরপাল্লার ট্রেন ফের চালু করল পূর্ব রেল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *