ভ্রমণ অনলাইন ডেস্ক: বিশ্ব জুড়ে চলছে করোনাভাইরাস সংক্রমণ। মানুষ দিশাহারা। বহু মানুষের প্রাণও গিয়েছে এই সংক্রমণে। সংক্রমণ রুখতে গোটা বিশ্বই কার্যত ঘরবন্দি। মানুষের এই বন্দিদশার সুযোগে আগল খুলে বেরিয়ে আসতে চাইছে অন্য প্রাণীকুল। তাদের দল বেঁধে চলে আসছে জনবিরল সমুদ্রসৈকতে, সাহস করে ঘুরে বেড়াচ্ছে এক সময়ের সদাব্যস্ত শহরের আপাতত নির্জন রাস্তায়। জঙ্গলেও এখন পর্যটকদের পা পড়ছে না। সেই সুযোগে বন্যপ্রাণীরা অবাধে বিচরণ করছে। ট্রেকার আর পর্বতারোহীরাও অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় ঘর ছেড়ে বেরোতে পারছেন না। ফলে হিমালয়ও এখন প্রাণীদের অবাধ বিচরণক্ষেত্র। উত্তরাখণ্ডে নন্দাদেবী ন্যাশনাল পার্কে চারটি বিরল প্রজাতির স্নো লেপার্ডের দেখা মিলেছে।
রাজকীয় স্নো লেপার্ডের ছবি তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেছেন ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিস অফিসার আকাশ কুমার বর্মা। টুইটারে তিনি লিখেছেন, “নন্দাদেবী ন্যাশনাল পার্কে ক্যামেরায় ধরা পড়েছে এক জোড়া স্নো লেপার্ড।…সৌজন্যে ডিরেক্টর, নন্দাদেবী বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ।”
Camera traps in Nanda Devi National Park reveal a pair of Snow Leopards. A smile adorns with such revelations. Good news being nurtured, folks! Courtesy: Director, Nanda Devi Biosphere Reserve. @CentralIfs @RandeepHooda @moefcc @uttarakhandpost pic.twitter.com/OTExWStv0l
— Akash Kumar Verma. (@verma_akash) April 12, 2020
নন্দাদেবী বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের ডিরেক্টর ডি কে সিং জানিয়েছেন, জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে এই ক্যামেরায় ধরা পড়েছে এই স্নো লেপার্ড। বন দফতরের অফিসারেরা ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখার পর এই ঘটনা সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে।
ডিরেক্টর ব্যাখ্যা করে বলেন, বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের যে সব অঞ্চলে স্নো লেপার্ড দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা সব চেয়ে বেশি, সেই সব জায়গাতেই ক্যামেরা লাগানো আছে। এবং ওই সব ক্যামেরার ফুটেজ ২-৩ মাস অন্তর পরীক্ষা করে দেখা হয়।
তিনি আরও জানান, নন্দাদেবী ন্যাশনাল পার্কের মালারি অঞ্চলে লাগানো ক্যামেরার ছবি যখন তাঁরা দিন দশেক আগে পরীক্ষা করছিলেন, তখন তাঁরা চারটে স্নো লেপার্ড দেখতে পান। এর মধ্যে দু’টি এক সঙ্গে ছিল, যা রীতিমতো বিরল ঘটনা।
আরও পড়ুন: ঘরে বসে মানসভ্রমণ: আরাবল্লির পাদদেশে বাঁসওয়াড়া
কুমায়ুন ওয়েস্টার্ন সার্কল-এর চিফ কনজারভেটর ফরেস্টস (সিসিএফ) সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্যামেরায় এই বিরল দৃশ্য ধরা পড়েছে সমুদ্রতল থেকে ৩১০০ মিটার (১০১৭০ ফুট) উচ্চতায়। এই স্নো লেপার্ডের আচার-আচরণ খুবই ছলনাময়ী, সহজে চোখে ধরা দেয় না। এদের বলা হয় ‘ক্রেপাসকুলার অ্যানিমল’। ‘ক্রেপাসকুলার’ প্রাণী হচ্ছে তারা যারা গোধূলিতে সব চেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে। শিকারের সন্ধানে স্নো লেপার্ড সাধারণত উষা, গোধূলি এবং রাতে বেরোয়।
স্নো লেপার্ড এখন বিরল প্রজাতির প্রাণীর তালিকায়। দেহরাদুনের ওয়াইল্ডলাইফ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার (ডবলুআইআই) হিসেব, ভারতে এখন স্নো লেপার্ডের সংখ্যা ৫১৬। এর মধ্যে উত্তরাখণ্ডে ৮৬টি, হিমাচল প্রদেশে ৯০টি, সিকিমে ১৩টি, অরুণাচল প্রদেশে ৪২টি এবং জম্মু-কাশ্মীরে ২৮৫টি স্নো লেপার্ড আছে।
ছবি সৌজন্যে: নন্দাদেবী বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ