শিলিগুড়ি: মাসতিনেক পর আবার চালু হল টয় ট্রেন। দার্জিলিং পাহাড়ে গড়াতে শুরু করল টয় ট্রেনের চাকা। পর্যটকরা আবার উপভোগ করতে পারবেন হিলকার্ট রোডের ধার দিয়ে ক্রমান্বয়ে পাহাড়ের শীর্ষে উঠে যাওয়া টয় ট্রেনের যাত্রা।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন পর গত বছর দুর্গাপুজোর আগে শিলিগুড়ি থেকে ফের টয় ট্রেন পরিষেবা চালু করেছিল দার্জিলিং-হিমালয়ান রেলওয়ে। কিন্তু পুজোর পরে অক্টোবরেই লাগাতার বৃষ্টির ফলে কার্শিয়াঙের কাছে ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়ক তথা হিলকার্ট রোড ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতি হয় টয় ট্রেনের লাইনেরও। বন্ধ করে দেওয়া হয় নিউ জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত টয় ট্রেন চলাচল।
দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২১ জানুয়ারি থেকে পরীক্ষামূলক ভাবে আবার টয় ট্রেন চালানো শুরু হয়। পরীক্ষা সফল হওয়ায় সোমবার ২৪ জানুয়ারি থেকে পাকাপাকি ভাবে শুরু হয়েছে পাহাড়ি পথে টয় ট্রেনের যাত্রা।
দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের মুখ্য আধিকারিক একে মিশ্র সোমবার বলেন, ‘‘কার্শিয়ংয়ে মহানদীর কাছে ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়কে ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল টয় ট্রেনের লাইন। তখন টয় ট্রেন পরিষেবার ব্রেক জার্নি শুরু হয়। টয় ট্রনের যাত্রীদের বাসে করে কার্শিয়ং স্টেশন পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে টয় ট্রেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল দার্জিলিঙ। ২১ জানুয়ারি থেকে আবার এনজেপি-দার্জিলিং পরিষেবা চালু হল।’’
শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত পুরো পথে টয় ট্রেন চালু হলেও যাত্রী সংখ্যা খুব কম। গতকাল সোমবার একেবারে হাতে গোনা যাত্রী ছিলেন টয় ট্রেনে। এখনই এই সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করা যায় না। আর এই সময়ে এটা হওয়া অস্বাভাবিক নয়। করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের জেরে দার্জিলিং এখন প্রায় পর্যটক-শূন্য। করোনার বিধিনিষেধের জেরে পাহাড়ের পর্যটনস্থলগুলোও বন্ধ। সুতরাং টয় ট্রেনে যাত্রীসংখ্যা স্বাভাবিক ভাবেই কম।
তবে আশার আলোও দেখা যাচ্ছে। অন্তত এই পশ্চিমবঙ্গে তৃতীয় ঢেউ চূড়ায় উঠে আবার নামতে শুরু করেছে। অচিরেই পর্যটন ক্ষেত্রে এই মেঘ কাটবে। করোনার প্রকোপ ও পর্যটন কেন্দ্রগুলি বন্ধ থাকার ফলেই যাত্রীসংখ্যা কম বলে জানিয়েছেন একে মিশ্র। করোনার প্রকোপ কমলেই পর্যটনকেন্দ্রগুলি খুলবে এবং তখন ভালো সংখ্যায় টয় ট্রেনের বুকিং শুরু হবে বলে আশাবাদী তিনি। শুধু তিনি কেন, পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত সকলেই এ ব্যাপারে আশাবাদী।
এক দিকে মহানন্দা অভয়ারণ্যের অপরূপ গা ঝমঝমে পরিবেশ, অন্য দিকে চা বাগানের অপরূপ সৌন্দর্য – এ সব ভালো ভাবে উপভোগ করতে হলে টয় ট্রেনের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু এর চাকা থমকে যাওয়ায় পাহাড়-ভ্রমণের আকর্ষণ নিঃসন্দেহে কিছুটা ম্লান হয়ে গিয়েছিল। টয় ট্রেনের চাকা গড়াতে শুরু করায় আবার ঔজ্জ্বল্য ফিরবে দার্জিলিং-ভ্রমণের।
আরও পড়তে পারেন