পর্ব ২
মনে রাখবেন, ‘সুভাষ ঘরে ফেরে নাই’। দেশের জন্য, বিশ্বমানবের জন্য তিনি প্রেরণা। তরুণদের আদর্শ। স্বদেশের জন্য তাঁর সংগ্রাম, যা আজো দেশবাসীকে অনুপ্রাণিত করে। তিনি বলতেন, ‘স্বাধীনতা কেউ দেয় না, অর্জন করে নিতে হয়’। ১৯৪৩ সালে নেতাজি ভারতে প্রথম আজাদ হিন্দ সরকার গঠন করেন।
২৩ জানুয়ারি, সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তী। এক চিরস্মরণীয় দিন। পালিত হয় পরাক্রম দিবস। এদিন তাঁকে স্মরণ করার মাধ্যমে পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে নিয়ে চলে আসুন কাছেপিঠে গঙ্গা পাড়ে ফরাসি উপনিবেশ চন্দননগর। এখানে নেতাজির স্মৃতিবিজড়িত দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখুন।
চন্দননগরের লক্ষীগঞ্জ বাজারে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নিয়ে নেতাজি গোপন মিটিং করেছিলেন। চন্দননগরে বহু ইতিহাসের সাক্ষী প্রবর্তক সংঘ।

প্রবর্তকের নেপথ্যে কাহিনী কি?
১৯২০ সালে প্রবর্তক সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন মতিলাল রায়। বিপ্লবী অরবিন্দ ঘোষ চন্দননগরে মতিলাল বাবুর এই বাড়িতেই আত্মগোপন করে ছিলেন। একাধিক বিপ্লবীদের আশ্রয়স্থল। রবীন্দ্রনাথ ও গান্ধীজীর পদধূলি ধন্য এই সংঘ।
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম নেতা নেতাজির সঙ্গে মতিলাল বাবুর ছিল বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। প্রবর্তকের স্বাধীনতা সংগ্রামী অরুণ চন্দ্র দত্ত ও নেতাজির মধ্যে ছিল অত্যন্ত সুসম্পর্ক। আজো সেই স্মৃতি বহন করছে। প্রবর্তক সংঘে তৈরি হয় দরিদ্রদের জন্য স্কুল ও আশ্রম। প্রতিবছর এখানে নেতাজির জন্মদিবস পালন করা হয়। সেই উপলক্ষে ছোট ছোট ছাত্রদের শিক্ষা সামগ্রী প্রদান করা হয়। ১৯৩০ সালে নেতাজি প্রবর্তকের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘যে মহতী সৃষ্টি এখানে চলেছে তাহার অন্তর্নিহিত ভাব আদর্শ ও সত্য সকলের উপলব্ধি করা আবশ্যক। উপলব্ধি অর্থে – জাতির প্রাণের সত্তাকে উপলব্ধি করার চেষ্টা।’ নেতাজিকে ঘিরে সকল স্মৃতি এখানে স্বমহিমায় সমুজ্জ্বল।

কিভাবে যাবেন :
হাওড়া থেকে ট্রেনে অল্প ব্যবধানে চন্দনগর স্টেশন। ব্যান্ডেল অথবা বর্ধমান লোকাল ধরে পৌঁছে যান চন্দনগর স্টেশন। সেখান থেকে টোটো নিয়ে ঘুরে নিন প্রবর্তক ছাত্রাবাস, নবরত্ন শ্রীমন্দির ও শ্রীঅরবিন্দ স্মৃতিতীর্থ।