শ্রয়ণ সেন
আবার তারা এসেছে ফিরিয়া!!!
না, করোনার কথা বলছি না। সে তো মাঝেমধ্যেই ফিরবে আবার আপনা থেকেই স্তিমিত হয়ে যাবে। আমি বলছি আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করা খবরগুলোর কথা।
উফ! করোনা বাড়তে শুরু করলেই তারা যেন হামলে পড়ে। ‘ভয়াবহ’, ‘আশংকাজনক’, ‘উদ্বেগ বাড়াচ্ছে’, এই ধরনের শব্দবন্ধ ব্যবহার করে মানুষকে আতংকিত করে তোলে। আবার এ দেশে করোনা নতুন করে বাড়ছেও না, তাতেও এই সব শব্দবন্ধ আবার ব্যবহার করা হচ্ছে সংবাদমাধ্যমে।
এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে কি বুঝি না বাপু। স্কুলগুলো বন্ধ করার কোনো চক্রান্ত! না কি মানুষকে ফের ভয় দেখিয়ে ঘরবন্দি করে তোলা উদ্দেশ্য, কিছুই মাথায় ঢোকে না।
কিন্তু একটা ব্যাপার যেটা মাথায় ঢোকে, তা হল কোভিড এখন সাধারণ রোগে পরিণত হয়েছে। আর তাকে সঙ্গে নিয়েই আমাদের চলতে হবে। তার বিলুপ্তি হবে না। বছরে পাঁচ-ছয় মাস অন্তর একটা স্ফীতি আসতেই পারে। কিন্তু তাতে ভয় পেলে চলবে না।
আমরা অনেকেই ভুলে গেছি গত জুন-জুলাইয়ের কোভিড স্ফীতির কথা। মনে করে দেখুন তো একবার। মনে পড়ছে জুলাই মাসে পশ্চিমবঙ্গে একবার দৈনিক সংক্রমণ তিন হাজার পৌঁছে গিয়েছিল? সংক্রমণের হার ২১ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। তখন কি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কোনো পরিবর্তন এসেছিল?
না আসেনি। কারণ কোভিড সাধারণ রোগ হয়ে যাওয়ার ফলে ঘরে ঘরে জ্বরজ্বালা হয়তো হয়েছিল কিন্তু তার বেশি কিছুই হয়নি। আর এখন যেটা হচ্ছে সেটাও তো চিনে, ভারতে না। বিশেষজ্ঞরা চিকিৎসকরা বলছেন, করোনার যে উপরূপ চিনে বিপদ ডেকে এনেছে (তাও সরকারি কোনো তথ্য নেই এটা প্রমাণ করার জন্য যে চিনে সত্যিই বিপদ হচ্ছে) সেটা ভারতে অনেক দিন আগেই পাওয়া গিয়েছে। ভারতবাসীদের মধ্যে ইতিমধ্যেই হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হওয়ার ফলে এ দেশে নতুন করে কোনো বিপদের আশংকা দেখছেন না তাঁরা।
তবে একটা ব্যাপারে আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে যে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে পারে। কারণ এ বছর জানুয়ারির পর আবার এ বার জুলাইয়ে বেড়েছিল। ফলে ফের জানুয়ারিতে সংক্রমণ বাড়ার আশংকা রয়েছে। তবে তাতে ভয় পেলে চলবে না। কাজ করে যেতে হবে নিজের মতো।
বেড়াতেও বেরোতে হবে। তাই করোনার খবরে ভয় পাবেন না। নিজেদের গুটিতে নেবেন না বাড়িতে। বেড়াতে যান, জগতটা চিনুন। শরীর অনেক ভালো থাকবে আপনার।
আর স্বাস্থ্যবিধি মানা? দোহাই বলছি, শুধু শুধু মাস্ক পরতে যাবেন না। ফাঁকা জায়গায় মাস্ক পরে থাকলে বিপদ আপনার। বিশুদ্ধ অক্সিজেনটা তো নিতে হবে নাকি! মাস্ক পরতে পারেন শুধুমাত্র খুব ভিড়ের জায়গায় গেলে। অন্যান্য রোগভোগ তথা কোমর্বিডিটি যাদের আছে তাদের একটু বাড়তি সাবধানতা নিতে হবে, তবে সেটা কোভিড কেন, যে কোনো রোগের ক্ষেত্রেই নিতে হয়।