ভ্রমণঅনলাইন ডেস্ক: ১৩০৫০ ফুট উচ্চতার রোটাং পাস পেরিয়ে যে পথ পাড়ি দিতে সময় লাগত চার ঘণ্টারও বেশি, সেই পথ এখন এক ঘণ্টার কম সময়ে চলে যাওয়া যাচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, বছরের ছ’ মাস তো সড়কপথে যাওয়াই যেত না। রোটাং তো বরফাচ্ছাদিত। আর এখন? সারা বছরই যাওয়া যাবে এই পথে। সৌজন্যে অটল টানেল।
কুলু জেলার মানালি থেকে লাহুল-স্পিতি জেলার সিসু গ্রাম। রোটাং পাস ঘুরে এর দুরত্ব ছিল ৯৫ কিমি। এখন ৯.০২ অটল টানেল হয়ে এই পথের দূরত্ব দাঁড়িয়েছে ৪০ কিমি। পথ অর্ধেকেরও কম হয়ে গিয়েছে। আর নতুন পথে সময় লাগছে চার ভাগের এক ভাগ। আগেকার পথ ছিল চুলের কাঁটার মতো বাঁকে ভরা, এখন পাহাড়ি অঞ্চল হলেও প্রায় সমতল পথ, গাড়ি চলে দুর্দান্ত গতিতে।
আর এই গতির নেশায় পড়ে ইতিমধ্যেই গোটা তিনেক দুর্ঘটনাও ঘটে গিয়েছে অটল টানেলে।
মানালি থেকে লাহুল-স্পিতির সদর শহর কেলং-এর দূরত্ব ছিল ১২৫ কিমি, এখন তা কমে হল ৭০ কিমি। যে কেলং বছরের ছ’ মাস বিচ্ছিন্ন থাকত, মানালি থেকে সেই কেলং-এ এখন সারা বছর যাওয়া যাবে।

১০০৫০ ফুট উচ্চতায় বিশ্বের দীর্ঘপথ সুড়ঙ্গ-পথ অটল টানেলের উদ্বোধন হল শনিবার, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরে। তার পরেই এই অটল টানেল পর্যটকদের কাছে অন্যতম দর্শনীয় বস্তু হয়ে উঠেছে। শুধু স্থানীয়ই নন, পর্যটকরা আসছেন দিল্লি, চণ্ডীগড় থেকেও। এখন বাইরের রাজ্য থেকে হিমাচল প্রদেশের ঢোকায় কোনো বাধা নেই। লাগছে না কোনো ই-পাস, কোভিড নেগেটিভ সার্টিফিকেট। হিমাচলের সীমানায় কোনো নথিভুক্তিকরণেরও প্রয়োজন পড়ছে না। তাই অটল টানেল দেখতে বাধাহীন ভাবে ছুটে আসছেন না পর্যটকরা।
৯ কিমির মধ্যে দৃশ্যপট পুরোপুরি পালটে যাচ্ছে। বিপাশার উপত্যকায় মানালি, ৬৭২৬ ফুট উঁচু। আশেপাশের পাহাড়গুলো একেবারে সবুজ। পথ চলেছে বিপাশাকে ডান দিকে রেখে, সোলাং ভ্যালির রাস্তা ধরে। একটু একটু করে উচ্চতায় উঠেছে। তার পর ধুন্দিতে বিপাশা পেরিয়ে কিছুটা গিয়ে অটল টানেলে প্রবেশ। টানেল থেকে বেরোলেই, অন্য চিত্র। পথ উঠে এসেছে ১০ হাজার ফুটেরও উপরে। আশেপাশের পাহাড়গুলো একেবারে বৃক্ষশূন্য।
স্বল্প সময়ের মধ্যে দৃশ্যপটের এই পরিবর্তন উপভোগ করতে ছুটে আসছেন পর্যটকরা। তবে দিনে দু’ বার এই টানেল বন্ধ থাকছে সাধারণ মানুষের জন্য – সকাল ৯টা থেকে ১০টা এবং বিকেল ৪টে থেকে ৫টা।
ভ্রমণঅনলাইনে আরও পড়ুন
‘ওয়ার্ক ফ্রম মাউন্টেনস’, পর্যটনকে চাঙ্গা করতে উত্তরাখণ্ড পর্যটনের নতুন পরিকল্পনা