উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, গঙ্গাসাগর: সব তীর্থ বার বার, গঙ্গাসাগর এক বার। এ কথা এখন অতীত। যোগাযোগ ব্যবস্থা আগের চেয়ে ভালো হওয়ায় এখন মানুষ বার বার সাগরে পাড়ি দিচ্ছেন। এ বছর গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি একেবারে চূড়ান্ত পর্যায়ে। করোনা আবহের ভেতর এ বার এই মেলা হতে চলেছে। আগামী ৯-১৬ জানুয়ারি অবধি চলবে এ বারের গঙ্গাসাগর মেলা।
এ বারের কঠিন পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ও ভিড়ের কথা ভেবে স্বাস্থ্যসুরক্ষার উপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। করোনা সংক্রমণ মোকাবিলার জন্য একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা প্রশাসন। মেলায় ঢোকার ১০টি পয়েন্টে দিনরাত করোনা টেস্টের ব্যবস্থা থাকছে। প্রত্যেক পয়েন্টে থাকছে কোভিড ম্যানেজমেন্ট টাস্কফোর্স। খোলা হয়েছে ১১টি কোয়ারান্টাইন সেন্টার ও ৩৮টি সেফ হোম। কোয়ারান্টাইন সেন্টারে থাকছে ৬৪৫টি এবং সেফ হোমে ৬১৫টি বেড। এ ছাড়া প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ৩৮টি বুথ। সেখানে ৬৫৮টি বেড থাকছে।
গত বারের তুলনায় এ বার চিকিৎসকের সংখ্যা দ্বিগুণ ও নার্সের সংখ্যা তিন গুণ করেছে প্রশাসন। মেলার অস্থায়ী হাসপাতাল থেকে কোনো রোগীকে বদলি করার দরকার হলে তাদের কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি, ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, এমআর বাঙুর ও বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জরুরিকালীন অবস্থার কথা বিবেচনায় রেখে মৃতদেহ সৎকারের জন্য ৬টি করে কবরস্থান ও চুল্লির ব্যবস্থা থাকছে।
মেলার মাঠ পরিষ্কার রাখতে ২৫০ জন পুরুষ ও মহিলা স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়েছে। আবর্জনা পরিষ্কারের জন্য ২৮টি ই-রিকশা থাকছে। আবর্জনা রাখার জন্য ২ হাজার ভ্যাট থাকছে। মজুত আবর্জনার জন্য ২টি অস্থায়ী কঠিন তরল বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, এ বারে মেলায় স্বাস্থ্যসুরক্ষা ও দূরত্ববিধির উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অস্থায়ী হাসপাতাল ও র্যাপিড টেস্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে সাগরে উন্নয়নের জোয়ার বইছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ বারের গঙ্গাসাগর মেলা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ৭ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাগরে আসার সম্ভাবনাকে মাথায় রেখে প্রস্তুতি শেষ করে ফেলেছে জেলা প্রশাসন।
আরও পড়ুন: কলকাতা দর্শন: দেখে আসুন ‘রাজ-এর তাজ’ ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল