ভ্রমণঅনলাইন ডেস্ক: করোনা জনিত পরিস্থিতিতে শুধু ভ্রমণই নয়, মার খাচ্ছে উৎসবও। বেড়ানো চলছে টুক টুক করে, আর উৎসব নমো নমো করে। ভ্রমণপিপাসু বাঙালির তো আবার উৎসব-অন্ত প্রাণ। বাঙালির বারো মাসে তেরো নয়, আঠারো পার্বণ। আর যে উৎসবটার জন্য বাঙালি সারা বছর অপেক্ষা করে থাকে তা হল দুর্গাপুজো।
এ বার দুর্গাপুজো একটু দেরিতেই – অক্টোবরের শেষে। এখনও আড়াই মাস মতো বাকি। তত দিনে করোনা দূর হয়ে যাবে, এমন আশা করাটা বোধহয় খুব বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে। তাই কী ভাবে দর্শকদের দুর্গা ঠাকুর দর্শন করানো যায় তা নিয়ে বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবতে শুরু করেছে কলকাতার কিছুন কিছু পুজোউদ্যোক্তা।
যেমন দক্ষিণ কলকাতার তিনটি পুজোকমিটি এক যোগে ঠাকুর দর্শন করানোর জন্য বিকল্প ব্যবস্থার পরিকল্পনা করেছে। তিনটি পুজো এক কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত। এরা হল বাদামতলা আষাঢ় সংঘ, ৬৬ পল্লি এবং নেপাল ভট্টাচার্য স্ট্রিট দুর্গাপূজা। এরা একত্রে ‘ড্রাইভ-ইন দর্শন’ চালু করার পরিকল্পনা করছে। এই ব্যবস্থায় দর্শনার্থীরা তাঁদের গাড়িগুলি মণ্ডপের সামনে নিয়ে ধীরে ধীরে নিয়ে আসবেন, গাড়িতে বসেই মণ্ডপ আর প্রতিমা দর্শন করবেন, চলে যাবেন।
গোটা ব্যবস্থাটি ব্যাখ্যা করে এক পুজোকমিটির এক কর্মকর্তা বললেন, এই কোভিডের সময়ে শারীরিক দূরত্ব মানা বাধ্যতামূলক। তাঁদের এমন একটা ব্যবস্থা চালু করার কথা ভাবতে হয়েছে যাতে মণ্ডপের সামনে ভিড় এড়ানো যায়। এই অবস্থায় ‘ড্রাইভ-ইন দর্শন’ ব্যবস্থাটি সব চেয়ে কার্যকর বলে মনে হচ্ছে।
তিনি আরও জানালেন, প্রতিটি পূজামণ্ডপের আগেই সব গাড়ি স্যানিটাইজ করা হবে। আর ‘ড্রাইভ-ইন দর্শন’-এর মানচিত্রও এ সব মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে। প্রথমে দর্শনার্থীরা বাদামতলার ঠাকুর দেখবেন, তার পর চলে যাবেন ৬৬ পল্লিতে এবং সব শেষে দেখবেন নেপাল ভট্টাচার্য স্ট্রিটের দুর্গাপূজা।
এ বছর বরেণ্য চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষ। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই তিনটি পুজোকমিটি একযোগে তাদের পূজার থিম করেছে ‘অপু ট্রিলজি’ – বাদামতলার থিম ‘পথের পাঁচালী’, ৬৬ পল্লি দেখাবে ‘অপরাজিত’র দৃশ্যাবলি আর নেপাল ভট্টাচার্য স্ট্রিটে দর্শনার্থীরা দেখতে পাবেন ‘অপুর সংসার’-এর দৃশ্য।