ভ্রমণঅনলাইন ডেস্ক: ‘ডর কে আগে জিত হ্যায়।’ একটি ঠান্ডা পানীয়ের বিজ্ঞাপনে এই বার্তা দেওয়া হত, আমাদের সকলেরই জানা। কিন্তু কোভিডের বাড়বাড়ন্ত শুরু হওয়ার পরে ওই বিজ্ঞাপনটা খুব একটা দেখা যায় না। অথচ এখনই এই বিজ্ঞাপনটির সব থেকে বেশি প্রয়োজন। কোভিডে আতঙ্কে ভোগা মানুষকে সাহস জোগানোর জন্য।
তবে এই বারো জন মহিলা কিন্তু প্রকৃত অর্থেই ভয়কে জয় করেছেন। কোভিডের আবহে গোটা রাজ্য, গোটা দেশ যখন সন্ত্রস্ত, তখন তাঁরা সাহসটা দেখিয়েছেন।
কোভিডের আবহে বেড়াতে যাওয়ার কথা উঠলে এক শ্রেণির মানুষ অসম্ভব বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন। ফেসবুকের ভ্রমণ বিষয়ক বিভিন্ন গ্রুপের দিকে তাকালেই তা বোঝা যায়। ভ্রমণের বিষয়ে কেউ কিছু জানতে চাইলেই সেই অংশের মানুষ এমন প্রতিক্রিয়া দেন, যা খুবই অপমানজনক।
কিন্তু এত ভয় কেন! বেড়ানোটা এখন আর কোনো বিলাসিতা নয়, সেটা প্রয়োজনীয়তা। বিশেষ করে চার মাস ঘরবন্দি জীবন কাটানোর পর এখন বেড়ানোর প্রয়োজনীয়তা আরও অনেক বেশি। কিন্তু পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি যা, তাতে তো বললেই হুট করে বেরিয়ে পড়া যায় না। এখন বেরোতে গেলে তার প্রস্তুতি আগের থেকে অনেক বেশি।
কিন্তু এই ১২ জন সাহসিনীর কাছে কোনো কিছুই বাধা ছিল না। তাঁরা এক রাত, দু’ দিনের ছোট্ট একটা সফরে বেরিয়ে পড়লেন। হোক না সে কাছের ঝাড়গ্রাম, এই পরিস্থিতিতে ঘরের কাছে আরশিনগরের সৌন্দর্যটাও তো উপভোগ করাই যাই। কেমন ছিল সেই সফরের অভিজ্ঞতা, শুনে নিন তাঁদের মুখেই। এর পর আপনিও বেরিয়ে পড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলুন।
স্যানিটাইজার-মাস্ক সঙ্গে আছে, ভয়টা আমার কী
লিখছেন বন্দনা মিত্র
লকডাউনে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাচ্ছি, মানে রকমারি ভ্রমণ বৃত্তান্ত পড়ে এবং ছবি দেখে “মোর ডানা নাই, আছি এক ঠাঁই/এ কথা যে যাই পাসরি।”
সেই ফেব্রুয়ারিতে শেষ বেড়োনো। তার পর ঘরবন্দি, খাঁচায় ঢোকা জীবন, জানলার গ্রিলে আটকে থাকা মাঠঘাট, আর ভয়ে আতঙ্কে সারা দিন চমকে চমকে ওঠা। গলা খুস খুস করছে না তো!? গা-টা কি ছ্যাঁক ছ্যাঁক করছে? হাঁচি পাচ্ছে কেন?
এর মধ্যেই এক দিন দেখলাম মৌমিতা তার বয়স্কা মা ও ছেলেকে নিয়ে আনন্দে ঝাড়গ্রাম ঘুরে বেড়াচ্ছে, রাজ্যের ছবি পোস্ট করেছে ফেসবুকে। বুকের ভেতর চিনচিন জ্বলন শুরু হল। মনটা গেয়ে বেড়াতে লাগল – “সমাজ সংসার মিছে সব”।
কয়েক দিনের মধ্যেই মৌমিতা মেসেজ পাঠাল, আগস্টের এক তারিখ ঝাড়গ্রাম গিয়ে দু’ তারিখ ফেরা। শুধুমাত্র কয়েক জন সাহসী মহিলার ছোট্ট দল। আমি পুরোটা না পড়েই জানালাম – যাবই, আমি যাবই। আমার কন্যারত্নও যাবেন।
এর পর চলল নাগরদোলার ঘুর্ণি। যাওয়া হবে কি হবে না! ওই দু’ দিন লকডাউন থাকবে না তো! রোজ নতুন নতুন কনটেনমেন্ট জোন, নতুন নতুন নিয়ম, টেনশন আর কাকে বলে! মৌমিতা অবশ্য বলে দিয়েছে লকডাউন না থাকলে যাওয়া হচ্ছে। সুরক্ষা নিয়ে ও খুব সতর্ক।
এই সময়ের কথা মনে রেখে, বার বার জানিয়ে দিচ্ছিল কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, আমাদের কী কী সতর্কতা নিতে হবে। তবে আমার একটাই ভরসা ছিল যে মৌমিতা ওর বয়স্কা মা ও কিশোর পুত্রকে নিয়ে কিছু দিন আগেই স্বচ্ছন্দে ঘুরে গিয়েছে, এর থেকে বড়ো সুরক্ষার গ্যারান্টি আর কী চাই!
অনেক অনিশ্চয়তায় দুলে, অনেক সাবধানবাণী উপেক্ষা করে, অবশেষে ভ্রমণের সব চেয়ে আকর্ষণীয় কাজে হাত লাগালাম, প্যাকিং।
এবং ‘উপপত্তি হইল কত মুষ্টি ধান্যে কটি দানা অন্ন’! প্যাকিং-এর পুরো ব্যাকরণই বদলে গেছে। প্রথমেই স্যুটকেশে ঢুকল বেশ কয়েক প্রস্থ মুখাবরণী বা মাস্ক। এই গরমেও কয়েক জোড়া মোজা। মাথা ঢাকা পলকা টুপি – শাওয়ার ক্যাপের মতো। একটা রুম স্যানিটাইজার, দু’ জনের দু’টো হ্যান্ড স্যানিটাইজার, যার যার বিছানার চাদর, গায়ের চাদর, বালিশের ঢাকা, তোয়ালে, প্লেট, চামচ, গ্লাস।
সাজগোজের জিনিসের কোনো দরকার নেই, মুখোশে নাক, মুখ ঢাকা থাকবে, ঘামে চশমার কাচ ঝাপসা থাকবে। তাই লিপস্টিক, কমপ্যাক্ট, আই লাইনার, ইত্যাদি প্রভৃতি, যা অন্য বার অনেকটা জায়গা নেয়, একেবারে বাদ।
অতিমারির চোখরাঙানিতে আংটি, দুল, ঘড়ি পরা ছেড়ে দিয়েছি, তাই সে সবেরও বালাই নেই। স্যানিটাইজার ও সাবান ব্যবহার করে করে সারা গায়ে সারাক্ষণ এমন একটা দুর্ভেদ্য স্বাস্থ্যকর গন্ধ লেগে আছে যে পারফিউম লাগানো বৃথাই। সে-ও বাদ।
ভুলে যাচ্ছিলাম, মেয়ে মনে করিয়ে দিল, – “মা, ওখানে পরার জামা কাপড় নিলে না!” দেখি তাই তো, সারা দিন শুধু মুখোশ পরে বেড়ালেই হবে নাকি, গাত্রাবরণও তো নিতে হবে! যেটুকু জায়গা ফাঁকা ছিল দুয়েকটা গুঁজে নিলাম ফাঁকেফোকরে।
প্যাকিং শেষ করে বেশ একটু নার্ভাস লাগছিল। একটা বাড়তি হ্যান্ড স্যানিটাইজার টোটো ব্যাগে ঢুকিয়ে মনে মনে জপ করতে লাগলাম –
কোভিড আমার পুত,/করোনা আমার ঝি,/স্যানিটাইজার-মাস্ক সঙ্গে আছে,/ভয়টা আমার কী!
সক্কালেই উল্টোডাঙা। আমাদের লাক্সারি বাস আসবে। মৌমিতা ওর ট্রেডমার্ক এক গাল হাসি নিয়ে অপেক্ষা করছে, এক হাতে উত্তাপ মাপার বন্দুক, অন্য হাতে একটা হ্যাম্পার যেখানে আছে দু’টো মাস্ক, একটা হ্যান্ড স্যানিটাইজার। বাস পুরো স্যানিটাইজড করা।
ঠিক সাতটায় বাস ছাড়ল। বিদ্যাসাগর সেতুতে ওঠার পর শেষমেশ বিশ্বাস হল, যাক কলকাতা থেকে বেরোচ্ছি। শান্তি! প্রভাতী জলখাবার বাসেই, প্যাকেটবন্দি, পিকনিকের মুডে।
ঝাড়গ্রামে পৌঁছে গেলাম সাড়ে দশটার মধ্যে। আমাদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ পর্যটনের রাজবাড়ি টুরিস্ট কমপ্লেক্সে। ঘরে নিয়মমতো তোয়ালে সাবান টুথব্রাশের সঙ্গে স্যানিটাইজার, মাস্ক, গ্লাভস দেওয়া ছিল।
খাবারের ব্যবস্থা ঘরোয়া ও পরিপাটি। সব রকম সতর্কতা মেনে পরিবেশন। চাইলেই বোতল বন্ধ জল কেনা যায় ক্যান্টিন থেকে। খেয়েদেয়ে রওনা হলাম ঝাড়গ্রাম দর্শনে। চিলকিগড়ের ধ্বংসস্তূপ দেখে দুঃখ হল, চারশো বছরেরও বেশি পুরোনো রাজবাড়ি। অনেকটা জায়গা জুড়ে ধ্বংসস্তূপ।
বাংলার দেশি রাজাদের সম্বন্ধে আমাদের স্কুলের পাঠ্যবই একেবারেই নীরব, ইতিহাসের মনোযোগী ছাত্র ছাড়া এ বিষয়ে সাধারণ লোকের কিছুই জানা নেই। গুগল জ্যাঠাও তেমন আত্মবিশ্বাস নিয়ে জোর গলায় কিছু বলতে পারে না।
এখানে ওখানে ছাড়া ছাড়া, ভাসা ভাসা, আবছা গলায় যে গল্প পেলাম তা বলছে আনুমানিক ১২৮৩ খ্রিস্টাব্দে ধার বংশের রাজা জগতদেব রাজপুতানার ঢোলপুর থেকে ধলভূমগড়ে নতুন রাজ্যের খোঁজে। এই অঞ্চলের স্থানীয় নাম ছিল সুপুর রাজ। তখন সেখানে রাজা ছিলেন রজক বংশীয় চিন্তামণি ধোপা।
তাঁকে যুদ্ধে হারিয়ে জগতদেব তাঁদের ধার বংশের ইষ্টদেবতা মহাদেব শিবের নামে তাঁর পত্তনি বংশের কূলনাম রাখেন ধবলদেব এবং নিজে রাজা জগন্নাথ ধবলদেব প্রথম নামে রাজত্ব শুরু করেন। কালক্রমে ধলভূম রাজ্য ছড়িয়ে পড়ে বাঁকুড়া, মেদিনীপুর, ঘাটশিলা, সিংভূম নিয়ে এক বিশাল এলাকা জুড়ে। আরও পরে রাজ্যের মালিকানা ইত্যাদি ঝগড়া বিবাদে বিভিন্ন শাখায় ভাগ হয়ে ছড়িয়ে পড়ে ধবলদেব বংশ, চিলকিগড় এমনই এক প্রধান শাখা।
ধলভূমগড়ের রাজাদের কুলদেবী ছিলেন দেবী কনকদুর্গা। সেই সময় ঘন জঙ্গলের ভেতর এক পুরোনো বটগাছের তলায় এক মন্দিরে প্রথম দেবীমূর্তি প্রতিষ্ঠা হয়। নীচে বয়ে যেত ডুলুং নদী। পুরোনো মন্দিরে ছিল ওড়িশা ভাস্কর্য চিহ্ণ। এখন সেই আদি মন্দিরটি একেবারেই ধ্বংস। নতুন মন্দিরে কনকদুর্গার সোনার প্রতিমার পূজা হয়। এ সবের অবশ্য কোনো প্রামাণ্য ইতিহাস নেই, লোককথা নির্ভর তথ্য।
ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি কিন্তু বেশ সাজানোগোছানো ঐতিহ্যময় বিলাসবহুল যাত্রী নিবাস। অনেক অ্যান্টিক জিনিসে সাজানো।
এটা আমি ঝাড়গ্রাম বেড়ানোর গল্প লিখছি না, কারণ যাঁরা পড়ছেন তাঁরা নিশ্চয় বহু বার ঝাড়গ্রাম ঘুরে এসেছেন। আমি লিখছি এই বিপন্ন সময়ে ঘর ছেড়ে বেড়াতে বেরোনোর অনুভূতি। আনন্দ ও আতঙ্ক মেশামিশি।
তবে আমরা সব সতর্কতা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেছিলাম, তাই সবাই সুস্থই আছি। এ বিষয়ে পুরো কৃতিত্ব দাবি করতে পারে মৌমিতা ও তার পতিদেব সুভাষবাবু। কিছু দিনের মতো অক্সিজেন জোগাড় করে এনেছি। ফুরোলে আবার যাব।
মানসিক সুস্থতা ফিরে পেতে ছোট্ট ট্রিপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
লিখছেন শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়
দীর্ঘ চার মাস ধরে ঘরবন্দি ও শঙ্কাভরা জীবন কাটানোর পর মনটা বড়োই ছটফট করতে শুরু করেছিল একটু খোলা হাওয়া, একটু নীল আকাশ আর সবুজ বনানীর মাঝে দাঁড়িয়ে নিজেকে আবার খুঁজে পাওয়ার জন্য।
সেই সুযোগটা করে দিল মৌমিতার ব্রিদ ফ্রেশ। ছোট্ট এক দিনের ঝাড়গ্রাম সফর।
মনে একটু আধটু দ্বিধা ছিল। কিন্তু রাজি হয়ে গেলাম। সব রকম সুরক্ষা বিধি মেনে চলে এ রকম ট্রিপ মনটাকে চাঙ্গা করে দেওয়ার জন্য খুবই দরকার।
১লা আগস্ট কলকাতা থেকে বেরিয়ে একদিন ঝাড়গ্রাম থেকে আবার ২রা আগস্ট বিকেলের দিকে কলকাতায় ফিরে আসা – এই ছিল একটি দিনের ভ্রমণসূচি। আমরা বারোটি অকুতোভয় রমণী এ বার যাত্রাসঙ্গী, যে হেতু এটা এক্সক্লুসিভলি লেডিস ট্রিপ।
তবে এ রাজ্যে লকডাউন কবে হবে সেই দোলাচলে পড়ে আমাদের প্ল্যানও একটু ওলটপালট হয়ে যাচ্ছিল। শেষ অবধি প্রশাসনিক ঘোষণায় সবাই একটু স্বস্তি পেয়েছিলাম…যাক এ যাত্রায় আর ভ্রমণের তারিখ বদলাতে হল না।
কলকাতা থেকে সক্কাল সক্কাল বেরিয়ে পথে লোধাশুলির জঙ্গল আর প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র দেখে সাড়ে দশটার মধ্যেই আমরা ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি ট্যুরিস্ট কমপ্লেক্সে পৌঁছে গেলাম। আমাদের রাত্রিবাসের ঠিকানা।
কলকাতা ও হাওড়ার শহরাঞ্চল পেরোতেই কালো বিস্তৃত মসৃণ সড়ক, তার পাশে সবুজ ধানের খেত, সেচের নালা আর দূরের গ্রামের ঘরবাড়ি দেখে হৃদয়ে যেন নতুন প্রাণের সঞ্চার হল। কত দিন পর এমন দৃশ্য চাক্ষুষ করছি আমি।
বর্ষায় গ্রামবাংলার প্রকৃতি যেন সদ্য স্নান সেরে এলো চুলে বাড়ির পথ ধরেছে। বিগত চার মাস ধরে বাড়ি, বাজার আর কর্মক্ষেত্রর বাইরে কিছু দেখতে না পাওয়া মনটা যেন মুক্তির আলো পেল।
এই চার মাসে আমার তিনটি পূর্ব পরিকল্পিত ট্রিপ বাতিল হয়েছে। জানি না আদৌ কোনো দিন আবার সেখানে যেতে পারব কি না।
সব সময় একটা ভয়ের বাতাবরণ এবং বাড়তে থাকা পরিসংখ্যানের বাইরেও যে সুস্থ স্বাভাবিক মুক্ত পৃথিবী আছে সেটাই ট্রিপে নতুন করে খুঁজে পেলাম। দেশ-বিদেশে অনেক জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছি কিন্তু ঘরের কাছেই একটা ছোট্ট ট্রিপ যে আমার জীবনে এতটা প্রভাব ফেলতে পারে তা ভাবতেই পারিনি।
কোভিড-পূর্ববর্তী জীবন, কোভিড-পরবর্তী জীবন, টিকার বাজারে আসা, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা, কাজের জগতে তৈরি হওয়া চরম অনিশ্চয়তা – এই বিষয়গুলো রোজ একটু একটু করে ঘাড়ের ওপর চেপে বসেছে। তখন মানসিক সুস্থতা – যে বিষয়টি আমাদের দেশে সব থেকে অবহেলিত, সেটি ফিরে পেতে, জীবনের ভারসাম্য ফিরে পেতে, এই ধরনের ছোট্ট ট্রিপ বড়ো ছোটো সব্বার জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তাই সময় ও সুযোগ হলে নিজের দু’ চাকা হোক বা চার চাকা হোক কিংবা আমাদের মতো ছোটো দল বেঁধে সব রকম স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাছে-পিঠে কোথাও ঘুরে এসে বেঁচে থাকার অক্সিজেন নিয়ে মনকে পুনরুজ্জীবিত করে আসুন।