ভ্রমণঅনলাইন ডেস্ক: তাওয়াং থেকে ৩৬ কিমি দূরে সাঙ্গেস্তার সো তথা বা মাধুরী লেক। তিব্বতী ভাষায় ‘সো’ মানে লেক। এখানে গেলে এক অসাধারণ সৌন্দর্যের সাক্ষী থাকবেন আপনি।
তাওয়াং থেকে চিন সীমান্তে বুম লার পথে এই লেক। গাড়িতে তাওয়াং থেকে যেতে লাগে দু’ থেকে তিন ঘণ্টা। কত সময় লাগবে তা নির্ভর করে রাস্তার অবস্থার উপরে।
১৯৭৩ সালে ভূমিকম্পের ফলে এই লেকের সৃষ্টি হয়েছে। লেকের মাঝে রয়েছে অনেক মৃত গাছ যা দেখতে ভারী অদ্ভূত। শীতকালে এই সাঙ্গেস্তার লেকের জল জমে যায় এবং সেই জমা জলের ওপর সূর্যরশ্মি পড়ে এক অপরূপ রঙের খেলা হয়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এই লেকের অবস্থান ৩৭০৮ মিটার উচ্চতায়।
ইচ্ছে করলে সাঙ্গেস্তার লেককে বেষ্টন করে আপনি হাঁটতে পারেন। কাঠের সেতুর উপর দিয়ে, পাইন বনের মধ্য দিয়ে এই হাঁটা। কনকনে ঠান্ডা বাতাসে পত পত করে উড়বে প্রার্থনা-পতাকাগুলো। ঘণ্টা খানেকের এই লেক ভ্রমণ আপনার জীবনে অক্ষয় স্মৃতি হয়ে থাকবে।আপনার শরীর ও মন হয়ে উঠবে তরতাজা।
কী ভাবে নাম হল মাধুরী লেক
এই লেকের আসল নাম সাঙ্গেস্তার লেক হলেও এক সময় এই লেকের নাম হয়েছিল মাধুরী লেক। নব্বইয়ের দশকের শাহরুখ-মাধুরী অভিনীত একটি বিখ্যাত সিনেমা ‘কোয়েলা’-এর একটি গানের শুটিং এখানে হয়েছিল। তার পর থেকেই এই লেকের নাম মাধুরী লেক হয়ে যায়। নামের দৌলতেই প্রত্যেক বছর কিছু পর্যটক এখানে আসেন এবং বলিউডের বহু কলাকুশলীও এই লেক ভ্রমণ করেছেন।
কী ভাবে যাবেন
তাওয়াং-এর ডিস্ট্রিক্ট কমিশনার অফিস থেকে অনুমতিপত্র নিয়ে,গাড়ি ভাড়া করে তাওয়াং থেকে চলুন মাধুরী লেক। লেকের রাস্তা খুবই অমসৃণ। এবং একটা জায়গার পর রাস্তা বলে কিছু নেই। পথে পড়বে ৫২টি বাঁক। স্পোর্টস ইউলিটি ভেহিকল ছাড়া এই রাস্তায় অন্য কোনো গাড়ি নিয়ে যাওয়া উচিত নয়। বরফের পাহাড়, অনেক ছোটো ছোটো লেক এবং সবুজের সমারোহে এই রাস্তাটির সৌন্দর্যই মন কেড়ে নেবে আপনার। কোনো বিদেশি পর্যটককে এই পথে যেতে অনুমতি দেওয়া হয় না।
আরও পড়ুন: কালিম্পং যাবেন? নকদারার লেকে নৌবিহার অবশ্যই করবেন
কখন যাবেন
সাঙ্গেস্তার লেক যাওয়ার সব চেয়ে ভালো মরশুম অক্টোবর থেকে এপ্রিলে। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত জমে যায়। বর্ষার ঝুঁকি নিয়ে আপনি যদি যেতে রাজি থাকেন, তা হলে জুলাই মাসে যেতে পারেন। এই সময় এই লেক থাকে কার্যত পর্যটক-শূন্য।
মনে রাখবেন
এই লেকে গেলে সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল রাখবেন। এখানে একটি ভারতীয় সেনাবাহিনীর ক্যাম্প আছে যেখানে অনেক কম দামে শীতপোশাক পাওয়া যায়। এ ছাড়া ভারতীয় সেনাবাহিনী পরিচালিত একটি ছোট্ট খাবারের স্টল আছে যেখানে গরম চা, ম্যাগি পাওয়া যায়।
কাছেই বুমলা পাস। ইচ্ছা করলে ঘুরে আসতে পারেন।