ভ্রমণঅনলাইন ডেস্ক: বাঙালি তথা পর্যটকদের কাছে কেরল অতি জনপ্রিয় এক ভ্রমণস্থল। দক্ষিণ কেরলের কোচি, মুন্নার, পেরিয়ার, তিরুঅনন্তপুরমের পাশাপাশি পর্যটকদের পা এখন উত্তর কেরলের কোড়িকোড়, কাসারগড়, বেকাল, ওয়েনাড়েও পড়ছে। কিন্তু এ সবের পাশাপাশি কেরলের আরও বেশ কিছু জায়গা আছে যেখানে পর্যটকদের পা খুব একটা পড়ে না। সেই সব কিছু জায়গার সন্ধান দেওয়া হল এখানে। আজ প্রথম অংশ।
১) ভেম্বানাড লেকের ধারে কুমারাকোম
ভারতের দীর্ঘতম হ্রদ ভেম্বানাড়ের সঙ্গে কেরলমুখী পর্যটকদের পরিচয় রয়েছে। কোচি গেলে ভেম্বানাড়ের ধারে একবার সবাই যান। অনেক সময়ে নৌকায় কোচির ঠিক ও পারেই ভাইপিনেও খুরে আসেন অনেকে। কিন্তু এই ভেম্বানাড়ের তীরে কুমারাকোমে পা পড়ে না অনেকের। কোচি থেকে সড়কপথে ৪৮ কিমি কুমারাকোম। তবে হ্রদে নৌকাতেও চলে আসতে পারেন কুমারাকোম। লেকের ধারে অত্যন্ত সুন্দর এই কুমারাকোমে কাটিয়ে দিতে পারেন কয়েকটা দিন। একটি পাখিরালয় রয়েছে এখানে। সময় থাকলে ঘুরে নিতে পারেন।
২) চেম্ব্রা পিক, ওয়েনাড়
সমুদ্রতল থেকে সাত হাজার ফুট উচ্চতার চেম্ব্রা পিক কেরলের দ্বিতীয় উচ্চতম আর ওয়েনাড় জেলার উচ্চতম পাহাড়শীর্ষ। এই পিকে গাড়ি ওঠে না। তিন ঘণ্টার ট্রেকিং করে উঠতে হয় পাহাড় চুড়োয়। তবে রাতে কিন্তু এখানে থাকা যায় না। ওয়েনাড় জেলার সদর কালপেট্টা থেকে ২২ কিলোমিটার গাড়িতে গিয়ে সেখান থেকে হাঁটা শুরু করতে হয় চেম্ব্রার। তবে ট্রেকিং শুরুর আগে মেপাডি থেকে অনুমতি নিতে হয়। কালপেট্টা থেকে মেপাডি দশ কিলোমিটার।
৩) সাইলেন্ট ভ্যালি জাতীয় উদ্যান
পালাক্কাড় জেলায় নীলগিরি পাহাড়ের কোলে এই জাতীয় উদ্যান বন্যপ্রাণীদের স্বর্গরাজ্য। পালাক্কাড় শহর থেকে ৫৫ কিমি দূরে অবস্থিত এই উদ্যান। এই উদ্যানে রয়েছে ১৩০ প্রজাতির পাখি, ৭৩০ প্রজাতির পোকামাকড়। হাতি তো রয়েছেই। এ ছাড়াও প্রায় এক হাজার প্রজাতির ফুলের গাছ রয়েছে এখানে। শাপের মতো দেখতে একটি বিশেষ গাছ পাওয়া যায় এখানে। গাছটির নাম কোবরা প্ল্যান্ট। শান্ত, নিস্তব্ধ পরিবেশের জন্য এই উদ্যানকে সাইলেন্ট ভ্যালি নাম দেওয়া হয়েছে।
৪) নেলিয়ামপতি
পালাক্কাড় শহরে থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে একটি জায়গাটি বিখ্যাত জঙ্গল, পাহাড় এবং জলপ্রপাতের জন্য। এই অঞ্চলে বেশ কিছু ছোটোবড়ো পাহাড় রয়েছে যাদের উচ্চতা ১,৫০০ ফুট থেকে ৫,০০০ ফুট পর্যন্ত বিস্ত্রিত। চা এবং কমলালেবু ফলনের জন্য বিখ্যাত এই নেলিয়ামপতি। এখানে দু’শো প্রজাতির পাখি দেখতে পাওয়া যায়।
৫) তিরুভালাম ব্যাকওয়াটার্স
কেরলের রাজধানী তিরুঅনন্তপুরম শহর থেকে মাত্র ১২ কিমি দূরে এই স্বল্প পরিচিত জায়গাটি। তবে জায়গাটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অতুলনীয়। আরব সাগরে পড়ার আগে এখানেই মিশেছে কিল্লি এবং করমনা নদী। নারকেল গাছের ঘেরাটোপে অত্যন্ত সুন্দর এই ব্যাকওয়াটারটি। কিছুক্ষণ নৌকাবিহার করতে আপনার ভালোই লাগবে।
৬) মুড়াপ্পিলাংগাড় সৈকত, কান্নুর
কান্নুর রেলস্টেশন থেকে দক্ষিণ দিকে ১৬ কিমি। এই সৈকতের বৈশিষ্ট্য হল এখানে গাড়ি চলে। ভারতের দীর্ঘতম গাড়ি চলাচলের সৈকত। গাড়ি চলাচলের জন্য বিবিসি নির্বাচিত বিশ্বের ষষ্ঠ সৈকত। প্রায় চার কিমি দীর্ঘ এই সৈকতে বিভিন্ন জলক্রীড়ারও আয়োজন রয়েছে।
৭) ভালিয়াপারাম্বা ব্যাকওয়াটার্স
কাসারগড়ের কাছেই এই খাঁড়ি এখন ভারতের অন্যতম সুন্দর ব্যাকওয়াটারের তকমা পেয়েছে। এই জায়গায় একসঙ্গে মিশেছে চারটে নদী। এই খাঁড়িতে নৌকা ভ্রমণেই পৌঁছে যান বেকাল দুর্গ, চন্দ্রগিরি দুর্গ এবং কাপ্পিল সৈকতে। (চলবে)