দলে দলে অলিভ রিডলে আসছে ওড়িশার উপকূলে

ওড়িশা উপকূলে অলিভ রিডলে।

ভ্রমণ অনলাইন ডেস্ক: মানুষ বিশ্বাস করে, সব কিছুরই ভালো দিক আছে। এখন ঠিক সে রকমটাই ঘটছে। বিশ্ব জুড়ে করোনাভাইরাসজনিত পরিস্থিতিতে প্রকৃতির বাড়বাড়ন্ত। প্রকৃতি স্বমহিমায় প্রকাশিত। পৃথিবীতে দূষণের মাত্রা ব্যাপক হারে কমেছে। প্রাকৃতিক যে সব ঘটনা প্রত্যক্ষ করার জন্য আমরা হাপিত্যেশ করে থাকি, সে সব ঘটছে স্বাভাবিক ভাবে। কেউ বাধা দেওয়ার নেই, কেউ ক্ষতি করার নেই। মানুষ এখন ঘরবন্দি, লকডাউনে।

এ রকমই এক স্বাভাবিক প্রাকৃতিক ঘটনা ঘটছে ওড়িশার উপকূলে, আপাতদৃষ্টিতে যে ঘটনা অস্বাভাবিক মনে হতে পারে। ওড়িশার উপকূলে দলে দলে আসছে বিরল প্রজাতির কচ্ছপ অলিভ রিডলে। তারা ভিড় করছে ওড়িশার গহিরমাথা আর রুষিকুল্যা সৈকতে। অলিভ রিডলের সংখ্যাটা ৮ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে।

অলিভ রিডলে হল বিরল প্রজাতির সামুদ্রিক কচ্ছপ। এই সময়টা হল এদের ‘নেস্টিং সিজন’। এই সময়ে এরা দলে দলে আসে ওড়িশার উপকূলে, বাসা বাঁধে, ডিম পাড়ে, তার পর শাবক সাবালক হলে ভেসে পড়ে গভীর সমুদ্রে। ওড়িশার উপকূল হল অলিভ রিডলের সব চেয়ে বড়ো ‘নেস্টিং সাইট’। আবার বছর ঘোরে। মেয়ে অলিভ রিডলেরা তাদের পুরোনো বাসায় আবার ফিরে আসে নতুন করে ডিম পাড়ার জন্য।

কিন্তু অলিভ রিডলেদের ওড়িশার উপকূলে আসা বছর বছর কমছিল। গত বছর অর্থাৎ ২০১৯-এ একটাও ওলিভ রিডলে দেখা যায়নি। এর মূল কারণ, অসংখ্য মানুষের উপস্থিতি এবং উপকূলের বর্জ্য। এ বছর ২১ দিন লকডাউনে ওড়িশার উপকূলে মানুষের উপস্থিতি নেই। যার ফলে অলিভ রিডলেরা নিশ্চিন্ত, নিরুদ্বিগ্ন।  

ওড়িশা বন দফতরের হিসাব অনুযায়ী, ২৫ মার্চ বুধবার সকাল পর্যন্ত ২,৭৮,৫০২টি মেয়ে অলিভ রিডলে উপকূলে বাসা বেঁধেছে। আর এই সংখ্যাটা শুধুমাত্র রুষিকুল্যাতেই দাঁড়াবে অন্তত পৌনে ৫ লক্ষ। এ বছর অন্তত ছ’ কোটিরও বেশি ডিম পাড়বে অলিভ রিডলে।

ওড়িশা বন্যপ্রাণী সংগঠনের (ওডব্লিউও) তথ্য থেকে জানা যায়, এই বিরল প্রজাতির কচ্ছপের অন্তত ৫০ শতাংশ ডিম পাড়ার জন্য ওড়িশার উপকূলে আসে। তবে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে বেরোতে ৪৫ দিন সময় লাগে। এই বাচ্চা বেরনোটাই একটা বড়ো চ্যালেঞ্জ। অনেক সময়েই এই ডিম কুকুর খেয়ে ফেলে অথবা মাছ ধরার নৌকার ধাক্কায় নষ্ট হয়ে যায়।

কুকুর এবং নৌকা থেকে ডিমের ক্ষতি রোখার জন্য বন দফতর স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করে। তত দিনে কচ্ছপ-শাবকরা দু’ ফুট লম্বা হয় আর ওজন হয় অন্তত ৫০ কেজি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *