নিজস্ব সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি: আছে সুন্দর পাঁচটি কটেজ। যেখানে এসে পর্যটকরা থাকতে পারেন। কিন্তু বোদাগঞ্জ ইকো ট্যুরিজমের মধ্যে অবস্থিত এই কটেজগুলি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। রাজ্য বনোন্নয়ন নিগমের ওয়েবসাইটে কটেজগুলির উল্লেখ আছে। কিন্তু পর্যটকদের বুক করার ব্যবস্থা নেই। ফলে পর্যটকরা ইচ্ছে থাকলেও সেখানে এসে থাকতে পারছেন না। উপভোগ করতে পারছেন না বোদাগঞ্জ ইকো ট্যুরিজম এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য। ট্যুর আপারেটরদের দাবি অবিলম্বে এই কটেজগুলি চালু করতে হবে।

বোদাগঞ্জ ইকো ট্যুরিজমের মধ্যে মোট পাঁচটি কটেজ চালু হয় তৃণমূল কংগ্রেসের আমলেই। তখন রাজ্য বনোন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান ছিলেন খগেশ্বর রায়। চারটি চার শয্যার এবং একটি দ্বি শয্যার কটেজ তৈরি হয়। এ ছাড়াও একটি রান্নাঘর এবং নজরমিনারও তৈরি হয়। চালুও হয়। কিন্তু গত দেড় বছর হল কটেজগুলির বুকিং বন্ধ হয়ে আছে।
আরও পড়ুন দিঘা-মন্দারমণির পর এবার সেজে উঠতে চলেছে বকখালি-ফ্রেজারগঞ্জ-হেনরি আইল্যান্ড
জলপাইগুড়ি ট্যুর আপারেটর ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের সাধারণ সম্পাদক সব্যসাচী রায় বলেন, “বোদাগঞ্জ ইকো ট্যুরিজম এলাকার আশেপাশে প্রচুর দ্রষ্টব্য স্থান ছড়িয়ে আছে। জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে নেমে সহজেই পর্যটকরা এখানে আসতে পারেন। আমাদের কাছে অনেকে বুকিং-এর জন্য আসেন। কিন্তু তাঁরা বিফল মনোরথ হয়েই ফিরে যান। কটেজগুলোর বুকিং অবিলম্বে চালু করা দরকার।”

রাজ্য বনোন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান উদয়ন গুহ বলেন, “কেন কটেজগুলি বন্ধ হয়ে আছে সে বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি। যাতে দ্রুত চালু করা যায় সেই ব্যবস্থা করছি।”
আরও পড়ুন উত্তরবঙ্গের পর্যটকদের জন্য সুখবর, বিশেষ প্যাকেজে গ্যাংটক নিয়ে যাচ্ছে এনবিএসটিসি
তিস্তা নদীর পারে অবস্থিত এই কটেজগুলি প্রাকৃতিক শোভায় ভরপুর। বড়ো বড়ো শাল গাছ দিয়ে ঘেরা। ট্যুর অপারেটরদের সংগঠন সুত্রে জানা যায় যে এখান থেকে বৈকুন্ঠপুর বনাঞ্চলের বেলাকোবা রেঞ্জের মধ্যে অরণ্যের মধ্যে জিপ সফারি হতে পারে। যার ফলে পর্যটকদের বিনোদনের পাশাপাশি স্থানীয় ভাবে যুবকদের কর্মসংস্থান হতে পারে। এই কটেজগুলোর কাছেই আছে ভ্রামরী দেবীর মন্দির। এ ছাড়াও আছে আরও চারটি প্রাচীন মন্দির – আদ্রা মন্দির, গৌরীকোন মন্দির, ভবানী পাঠকের মন্দির এবং দেবী চৌধুরানীর মন্দির। এখান থেকে গজলডোবার দূরত্ব ১২.৫ কিলোমিটার। পর্যটকরা এখানে থেকে গজলডোবায় ঘুরে আসতে পারেন। এই কটেজ সংলগ্ন এলাকার নিরাপদ শালবনের মধ্যে পর্যটকদের থাকার জন্য তাঁবুর ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এখানকার নজরমিনারে উঠে পর্যটকরা অরণ্য এবং তিস্তা নদীর প্রাকৃতিক শোভা উপভোগ করতে পারেন।

বোদাগঞ্জের এই জায়গা থেকে জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনের দূরত্ব ১৪ কিলোমিটার। পর্যটকরা জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে নেমে সহজেই এখান আসতে পারেন। জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনে নেমেও এখানে আসা যেতে পারে। এ ছাড়া শিলিগুড়ি থেকে বেলাকোবা হয়েও এখানে আসা যায়।
ট্যুর অপারেটরদের সংগঠনের সদস্যরা দাবি করেন যে এই কটেজগুলি চালু হলে রাজ্য সরকারের রাজস্ব আদায়ের পাশাপাশি লাটাগুড়ির মতো স্থানীয় বাসিন্দারাও উপকৃত হবেন। তাঁদের নানা ধরনের কর্মসংস্থানের সুযোগ আসবে।