ভ্রমণ অনলাইনডেস্ক: নাম বটেশ্বর মন্দির। তবে এটা আদৌ মন্দির কি না, সেই নিয়ে অনেক প্রশ্ন থেকেও যায়। পুরাতাত্ত্বিকদের কারও কারও মতে, এটি মন্দির না হয়ে বৌদ্ধস্তূপও হতে পারে। যা-ই হোক না কেন, বটেশ্বর মন্দির নামে খ্যাত এটি যে আদতে ধ্বংসস্তূপ তা এর চত্বরে প্রবেশ করলেই বোঝা যায়।
চত্বরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে পুরাতাত্ত্বিক নানা রকম নিদর্শন। পাথরের মুখে খোদাই করা নানা রকম মুখ, নৃত্যরতা নারীমুখও রয়েছে তার মধ্যে।
বড়ো অযত্নে পড়ে থাকা এই ধ্বংসস্তূপ দেখলে বোঝাই যায় যে এটির সংরক্ষণ নিয়ে কোনো উদ্যোগই সে ভাবে হয়নি। স্থানীয় ইতিহাসবিদদের দাবি, এই এলাকায় পুরাতাত্ত্বিক অনুসন্ধান আরও ব্যাপক ভাবে করা হলে উত্তরবঙ্গের ইতিহাসের অনেক নতুন দিক খুঁজে পাওয়া যেতে পারে।

বছর দশেক আগে, পশ্চিমবঙ্গের একটি জনপ্রিয় দৈনিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী উপেন বিশ্বাস বলেন, আজ থেকে ২৩০০ বছর আগে ময়নাগুড়ি ব্লকের মাধবডাঙা গ্রামে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী কিছু স্থানীয় শিল্পী ওই স্তূপ নির্মাণ করেছিলেন। বৌদ্ধধর্মের স্তূপের গঠনশৈলীর সঙ্গে সাদৃশ্য রয়েছে। পাথরের স্তূপে মিলেছে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর দু’টি খোদাই করা ভাস্কর্য। বেলেপাথরে খোদাই করে পদ্ম, হাতির চিত্র আঁকা রয়েছে। এমনকি, বৌদ্ধস্তূপে ব্যবহৃত মঙ্গলঘটের সন্ধান মিলেছে সেখানে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দীর্ঘ তিন দশক ধরে এই ধ্বংসস্তূপ নিয়ে কাজ করেছেন তিনি।

তবে এই ব্যাপারে ভিন্নমতও রয়েছে। কারও কারও মতে, এখানে লৌকিক দেবদেবীর পুজো করা হত। আবার এমন হতে পারে যে, এই এলাকায় বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেবদেবীর পুজো হয়েছে। তেমন ভাবেই মূর্তিগুলো তৈরি করা হয়েছিল ও দেবালয়টির সংস্কার করা হয়েছিল।
এই প্রত্নবস্তুগুলিকে রক্ষণাবেক্ষণ করার কোনো সরকারি উদ্যোগ না থাকায় এবং দীর্ঘদিন ধরে অবহেলায় পড়ে থাকায় তা হারিয়ে যাচ্ছে। মূর্তি-সহ নানা প্রত্নবস্তু কিন্তু চুরিও হয়ে যাচ্ছে।