সৌরীশ বসু
কলকাতায় রবিবার সমাপ্ত হল কুম্ভমেলা। ঘাবড়ে গেলেন? ভাবলেন যে কলকাতায় আবার কুম্ভমেলা কবে থেকে শুরু হল। আচ্ছা আমি ব্যাপারটা সহজ করে বলি।
এটা পূর্ণকুম্ভ বা অর্ধকুম্ভ নয়, এটা ভ্রমণব্যবসায়ী ও ভ্রমণপিপাসুদের কুম্ভমেলা, যার পোশাকি নাম ট্রাভেল অ্যান্ড টুরিজম ফেয়ার (টিটিএফ কলকাতা)। কলকাতায় যে সব পর্যটনমেলা আয়োজন করা হয়, তার মধ্যে সব চেয়ে বড়ো। এবং এটিই ভারতের সব চেয়ে পুরোনো পর্যটনমেলা।
‘টিটিএফ কলকাতা’ শুরু হয়েছিল গত শুক্রবার অর্থাৎ ১৪ জুলাই আর শেষ হল আজ ১৬ জুলাই, রবিবার। তিন দিনব্যাপী এই মেলার আয়োজন করা হয়েছিল সায়েন্স সিটির মোড়ে বিশ্ব বাংলা মিলন মেলা প্রাঙ্গণে।
মেলার প্রথম দিন সীমাবদ্ধ ছিল শুধু পর্যটন ব্যবসায়ীদের জন্য, যাকে ব্যবসায়িক পরিভাষায় বলা হয় ‘বি টু বি’ অর্থাৎ ‘বিজনেস টু বিজনেস’। পরের দিন মেলা খুলে দেওয়া হয় সর্বসাধারণের জন্য, যাকে ব্যবসায়িক পরিভাষায় বলা হয় ‘বি টু সি’ অর্থাৎ ‘বিজনেস টু কাস্টমার’।
টিটিএফ-এর আয়োজক ফেয়ারফেস্ট মিডিয়া লিমিটেড। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে মেলাটির শুভ সূচনা করেন রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উত্তরপ্রদেশ ও পঞ্জাবের দুই পর্যটন অধিকর্তা, তাইল্যান্ড ও কেনিয়ার দুই কনসাল জেনারেল, টিএএআই এবং টিএএফআই-এর ইস্টার্ন ইন্ডিয়া চ্যাপ্টারের চেয়ারম্যানদ্বয়, ট্যাব (টিএএবি)-এর সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ সরকার, ফেয়ারফেস্ট মিডিয়া লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও সিইও সঞ্জীব আগরওয়াল প্রমুখ।
ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তের হোটেলমালিক এবং পর্যটনব্যবসায়ীদের পাশাপাশি আমাদের রাজ্যের হোটেল ও পর্যটন ব্যবসায়ীরাও এই মেলায় যোগ দেন। এ ছাড়াও মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, গোয়া, কর্নাটক, কেরল, মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড, গুজরাত, ওড়িশা, অসম, ও অরুণাচল প্রদেশের রাজ্য পর্যটন দফতর মেলায় যোগ দিয়েছিল। শুধু দেশ নয়, নেপাল, তাইল্যান্ড, কেনিয়া, আরব আমিরশাহী প্রভৃতি দেশ থেকেও পর্যটন-প্রতিনিধিরা এসেছিলেন মেলায় যোগ দেওয়ার জন্য।
সর্বসাধারণের জন্য মেলা খুলে দেওয়ার পর শেষের দু’ দিন মেলায় বেশ ভালো ভিড় হয়েছিল। ভ্রমণপিপাসু মানুষজন বিভিন্ন স্টলে ভিড় করেন এবং ভ্রমণ বিষয়ে তাঁদের নানা কৌতূহল মেটান। ভ্রমণ সংক্রান্ত নানা কাগজপত্র সংগ্রহ করেন তাঁরা। এই মেলা থেকেই অরেঞ্জ ফেস্টিভ্যালের তারিখ ঘোষণা করেন রাজ বসু ও তাঁর সহকারীরা। ১০ ডিসেম্বর এই উৎসব অনুষ্ঠিত হবে।
ছবি: সৌরীশ বসু ও রাজীব বসু