আসছে ভারতীয় রেলের নতুন এসি থ্রি টায়ার ইকোনমি কোচ, ভ্রমণ করে দেখুন কেমন লাগে

ভ্রমণঅনলাইন ডেস্ক: ভারতীয় রেল এখন থেকে এসি থ্রি টায়ার ইকোনমি কোচ চালাবে। রেল মন্ত্রক এই কোচে ভ্রমণকে ‘বিশ্বে সব চেয়ে কম খরচে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কামরায় সর্ব শ্রেষ্ঠ ভ্রমণ’ অভিহিত করেছে। এই কোচে ভ্রমণ খরচের দিক থেকে সাশ্রয়ী হবে। এটি হল বর্তমানের এসি থ্রি টায়ার কোচ এবং নন-এসি থ্রি টায়ার কোচের মাঝামাঝি।

এই লিঙ্কে হফমান বুশ (Linke Hofmann Busch) কোচ তৈরি হয়েছে কাপুরথালার রেল কোচ ফ্যাক্টরিতে (আরসিএফ, RCF)। এই কোচ পাঠানো হয়েছে লখনউয়ে রেলের রিসার্চ ডিজাইন অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অর্গানাইজেশনে (আরডিএসও, RDSO) পরবর্তী ট্রায়ালের জন্য। কাপুরথালার কারখানায় এর নকশা করা হয় এবং যুদ্ধকালীন তৎপরতায় গত অক্টোবরে তৈরির কাজ শুরু হয়।

নতুন কোচে বেশি যাত্রী ভ্রমণ করতে পারবেন। এখনকার থ্রি টায়ারে যেখানে ৭২ জন যাত্রী ভ্রমণ করেন, সেখানে নতুন কোচে ৮৩ জন যাত্রী ভ্রমণ করতে পারবেন। নতুন কোচে অনেক নতুন ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছে বলে রেল মন্ত্রকের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

নতুন ইকোনমি এসি কোচের বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধরে একটা ৩৮ সেকেন্ডের ভিডিও শেয়ার করেছেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়াল। রেলমন্ত্রী টুইট করে বলেছেন, “ইকোনমি শ্রেণির জন্য ভারতীয় রেল নতুন এসি থ্রি টায়ার কোচ তৈরি করেছে। নতুন ধরনের এই কোচের নকশা এমন ভাবে করা হয়েছে যাতে ঘণ্টায় ১৬০ কিমি গতিতে চলতে পারে। নানা আধুনিক সুবিধা ছাড়াও এই কোচের যাত্রী ধারণক্ষমতা বেশি।”

নতুন ইকোনমি এসি কোচের বৈশিষ্ট্য –

(১) যাত্রীধারণ ক্ষমতা বেশি – বর্তমানের ৭২ জনের পরিবর্তে এই নতুন কোচে ৮৩ জন যাত্রী ভ্রমণ করতে পারবেন।

(২) প্রতিটি বার্থে এসি ভেন্ট – যাত্রীদের ভ্রমণ যাতে আরামপ্রদ হয় তার জন্য সিট ও বার্থ নতুন করে নকশা করা হয়েছে। প্রতিটি বার্থে রয়েছে এসি ভেন্ট তথা ঠান্ডা বায়ু চলাচলের রন্ধ্র।

রিডিং লাইটের ব্যবস্থা।

(৩) প্রতিটি বার্থে ব্যক্তিগত রিডিং লাইট – যাত্রীরা যাতে নিজেদের বার্থে বসে বা শুয়ে পড়তে পারেন, তার জন্য প্রতি বার্থে রিডিং লাইটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

(৪) অগ্নি সুরক্ষার ব্যবস্থা – আগুন থেকে সুরক্ষার জন্য বিশ্ব জুড়ে যে পদার্থ ব্যবহার করা হয়, নতুন বার্থে তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

(৫) ভিন্ন ভাবে সক্ষমদের উপযোগী টয়লেট – প্রবেশ ও প্রস্থানের বিশেষ সুবিধা-সহ ভিন্ন ভাবে সক্ষমদের উপযোগী টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে প্রতি কোচে।

ভিন্ন ভাবে সক্ষমদের উপযোগী টয়লেট।

(৬) বার্থে ওঠার উপযুক্ত সিঁড়ি – ওপর এবং মাঝের বার্থে যাতে সহজেই ওঠা যায়, সে দিকে লক্ষ রেখে সিঁড়ি তৈরি করা হয়েছে। ওপর এবং মাঝের বার্থে বসলে যাতে মাথা না ঠেকে যায়, তার জন্য যথেষ্ট জায়গার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

(৭) প্রতিটি বার্থে মোবাইল চার্জের ব্যবস্থা – নিজের বার্থে থেকেই যাতে মোবাইল চার্জ দেওয়া যায় তার জন্য স্ট্যান্ডার্ড সকেট ছাড়াও প্রতিটি বার্থে চার্জিং পয়েন্ট ও ইউএসবি পয়েন্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

(৮) সাইড বার্থেও স্ন্যাক টেবিল – সাইড বার্থের জন্যও থাকছে ভাঁজ করা স্ন্যাক টেবিল। এ ছাড়াও জলের বোতল, মোবাইল ফোন, ম্যাগজিন ইত্যাদি রাখারও এমন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যাতে তা থেকে কেউ যেন আহত না হয়।

সাইড বার্থেও স্ন্যাক টেবিল।

(৯) উপযুক্ত আলোর ব্যবস্থা – সিট নম্বর, আইল মার্কার যাতে ভালো ভাবে দেখা যায় তার জন্য উপযুক্ত আলো সহ বার্থ ইন্ডিকেটরের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। থাকছে উপযুক্ত নৈশালোক।

রেল মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই মাস থেকেই ওই কোচ তৈরি করা ব্যাপক ভাবে শুরু হয়ে যাবে। দেশের আরও বেশি মানুষের সামনে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ভ্রমণের সুযোগ এবং এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীক্ষমতা আরও বাড়ানোর প্রতীক হল নতুন এসি থ্রি টায়ার ইকোনমি কোচ। নিঃসন্দেহে, এখন থেকে প্রতিটি রেলভ্রমণ আনন্দদায়ক যাত্রার স্মৃতি হয়ে থাকবে।”

ছবি ভারতীয় রেলের ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া।

আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞা উঠে গেল, তারকেশ্বর মন্দিরের গর্ভগৃহে ঢুকতে পারছেন পুণ্যার্থীরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *