বুলবুলে বিপুল ক্ষতি বকখালির টুরিস্ট লজে, আপাতত বুকিং বন্ধ

বকখালি: ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের জেরে কার্যত তছনছ হয়ে গিয়েছে বকখালিতে অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন নিগমের বালুতট রিসর্ট। আপাতত সব বুকিং বাতিল করা হয়েছে রিসর্টের।

কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, সেই ব্যাপারে কিছু বলতে পারছেন না রিসর্ট কর্তৃপক্ষ। তবে মাস দুয়েকের আগে যে রিসর্টকে আবার আগের অবস্থায় ফেরানো যাবে না, সেটা এক প্রকার নিশ্চিত।

গত শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত দক্ষিণ ২৪ পরগণার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে তাণ্ডব চালিয়েছে বুলবুল। তার অভিঘাত সব থেকে বেশি বকখালি এবং লাগোয়া অঞ্চলে ছিল। তার কারণ বকখালিতেই আছড়ে পড়েছিল এই ভয়াল ঘূর্ণিঝড়।

বুলবুলের জেরে কার্যত বেসামাল অবস্থা নিগমের এই রিসর্টের। উল্লেখ্য, কিছু দিন আগেই এই রিসর্টের নাম বদল করা হয়েছে। বকখালি টুরিস্ট লজের নাম এখন হয়েছে বালুতট ট্যুরিজম রিসর্ট।

রিসর্টের ম্যানেজার তন্ময় হালদারের অনুমান সব মিলিয়ে কোটি খানেক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এই রিসোর্টে।

তন্ময়বাবুর কথায়, রিসর্টের ৩০ কেভিএ-এর জেনারেটর পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, “বিশাল ওই জেনারেটরটা মাঝখান থেকে পুরোপুরি ভেঙে গিয়েছে। ওটাকে আর সারিয়ে তোলা যাবে না।”

এই একটা জেনারেটরের পেছনেই প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার ধাক্কা বলে জানান তন্ময়বাবু। এ ছাড়া রিসর্টের অন্তর্গত বন দফতরের যে কটেজটি ছিল, সেটি এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে কোনো ভাবে তাকে আগের অবস্থায় ফেরানো সম্ভব নয়। ফলে ওই কাঠের বাড়িটিকে পরিত্যক্ত করে দেওয়া হবে।

রিসর্টের রিশেপসন আর রেস্তোরাঁর কোনো কাচই আর আস্ত নেই। একই অবস্থা রিসর্টের নতুন ভবনটিরও।

চার দশকের পুরোনো এই রিসর্টে একটি নতুন তিন তলা বাড়ি তৈরি হয়েছে। ওই বাড়ির ঘরগুলো সমুদ্রমুখী। ফলে ওই বাড়ির ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেশি। জানলার কাচ ভেঙে ঘরগুলিও তছনছ হয়ে গিয়েছে। ভেঙে পড়েছে রিসর্টের জলের ট্যাঙ্কও।

রিসর্টের চৌহদ্দির মধ্যেই অসংখ্য গাছ ছিল যার মধ্যে অধিকাংশই নারকেল। তন্ময়বাবুর কথায়, “সব নারকেল গাছগুলিকেই দেখে মনে হচ্ছে ওপর দিয়ে কেউ কেটে দিয়েছে।” ভেঙে পড়েছে বাকি গাছগুলিও।

তবে এরই মধ্যে কিছুটা স্বস্তির খবর এই যে বুধবার রাতে বিদ্যুৎসংযোগ ফেরানো হয়েছে বকখালিতে। ফলে আতঙ্কের পরিবেশ একটু হলেও কমেছে।

সামনে পর্যটনের ভরা মরশুম। এই মরশুমের মুখে বুলবুলের জন্য মুখ থুবড়ে পড়ল দক্ষিণ ২৪ পরগণার একটা বিস্তীর্ণ অঞ্চলের পর্যটনশিল্প। তবুও ধ্বংসের মধ্যে আবার নতুন করে সংগ্রাম শুরু করতে হবে।

যে লড়াইটা বকখালির সাধারণ মানুষ চালাচ্ছেন, সেই লড়াইটা এখন পর্যটন কর্তৃপক্ষকেও করতে হবে রিসর্টকে আবার আগের চেহারায় ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য।

ছবি: রিসর্ট কর্তৃপক্ষ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *