ঢাকা থেকে এ বার ট্রেনেই চলুন কক্সবাজার, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতে

ঋদি হক: ঢাকা

প্রতি বছর পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতে ছুটে আসেন ভ্রমণপিপাসু পর্যটক। ১৫০ কিমি দীর্ঘ কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত ও তার আশেপাশের নিসর্গ উপভোগ করে তাঁরা মুগ্ধ হন। এই কক্সবাজারকে একশো ভাগ পর্যটনবান্ধব করে গড়ে তুলতে বাংলাদেশ সরকারের তরফে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর অন্যতম হল রেল যোগাযোগ।

আগামী বছর থেকেই চালু হতে চলেছে রেল পরিষেবা। রেলপথ চালু হলে ভ্রমণপিপাসুরা তুলনামূলক ভাবে কম খরচে এবং দ্রুত কক্সবাজার পৌঁছোতে পারবেন। সম্প্রতি কক্সবাজারে আইকনিক স্টেশনভবনের শিলান্যাস করে বাংলাদেশের রেলপথ মন্ত্রী মোঃ নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের কাজ শেষ হবে এবং ঢাকা থেকে সরাসরি ট্রেন যাবে কক্সবাজারে।

রেলপথমন্ত্রীর এই ঘোষণায় পর্যটক তথা ভ্রমণপিপাসু মানুষের মধ্যে স্বস্তি এসেছে। এ বার অন্তত কোনো ঝক্কিঝামেলা ছাড়াই ঢাকা থেকে একঘুমে কক্সবাজার পৌঁছে যাওয়া যাবে। আর ট্রেন থেকে নেমে আড়মোড়া ভাঙতে ভাঙতে পর্যটকরা এগিয়ে যাবেন সুদীর্ঘ সমুদ্রসৈকতের দিকে।

রেলপথমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর থেকেই নানা প্রান্তের মানুষ দিন গোনা শুরু করে দিয়েছেন। তবে বাংলাদেশের মানুষ এখন আর এই সব ঘোষণাকে স্বপ্ন মনে করেন না। কারণ শেখ হাসিনার হাত ধরে উত্তাল পদ্মায় যখন সেতু গড়ে উঠেছে, তখন আর বাঙালির আশঙ্কা হাওয়ায় মিলিয়ে গিয়েছে। এখন দৃপ্ত গতিতে সামনে এগিয়ে চলা।

মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বললেন, “প্রকল্পের মেয়াদ ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত ধরা হলেও ছয় মাস হাতে রেখেই ঘোষণা করছি আগামী বছরেই মানুষ ট্রেনে করে কক্সবাজারে পৌঁছোতে পারবেন।”

শহর কক্সবাজার, যার আরেক নাম পানোয়া।

সুজন বলেন, রেলে এখন অনেক প্রকল্প চালু রয়েছে। মূলত ২০১১ সালের পর থেকেই রেলকে পুনর্গঠিত করার কাজ শুরু করেছেন শেখ হাসিনা। সরকারের দশটি মেগা প্রকল্পের মধ্যে দু’টি হল বাংলাদেশ রেলের – যার একটি হল দোহাজারি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প।

প্রকল্প সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে কক্সবাজার থেকে রামু হয়ে মায়ানমারের নিকটবর্তী গুনদুম পর্যন্ত রেলপথ নিয়ে যাওয়া হবে এবং তা চিন পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে। কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন চালু হলে পর্যটনের ব্যাপক প্রসার ঘটবে। দেশের অগ্রগতিতে পর্যটন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সে কথা মনে রেখেই এই প্রকল্পটি পরিকল্পনামাফিক করা হচ্ছে।

২১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কক্সবাজারে ঝিনুকের আদলে আইকনিক স্টেশনভবন নির্মিত হচ্ছে। ৬ তলাবিশিষ্ট এই ভবনে সব সুবিধা থাকবে। আইকনিক স্টেশনভবনটি হবে আন্তর্জাতিক মানের। সে কথা জানিয়ে রেলপথমন্ত্রী বলেন, এখানে দেশি-বিদেশি প্রচুর পর্যটক আসবেন। আগত পর্যটকরা যাতে স্বস্তিবোধ করেন, তার জন্য সকল সুবিধা থাকবে।

আরও পড়ুন: এখন থেকে ‘সিটি ট্রাভেল পাস’-এ কলকাতা দর্শন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *