বারদীতে জ্যোতি বসুর পৈতৃক ভিটেয় পর্যটনকেন্দ্র চালু করল বাংলাদেশ সরকার

ভ্রমণ অনলাইনডেস্ক: বাংলাদেশের বারদীতে পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর পৈতৃক ভিটেয় পর্যটনকেন্দ্র চালু করল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সে দেশের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার বারদী চৌধুরীপাড়া গ্রামে রবিবার ওই পর্যটনকেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন অসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন।

ওই  পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটকরা প্রয়াত জননেতার জীবনী সম্পর্কে নানা তথ্য জানার সুযোগ পাবেন। তা ছাড়া পাঠাগারও থাকছে। সেই পাঠাগারে থাকছে জ্যোতি বসুর লেখা বিভিন্ন বই। রাত্রিবাসের সুবিধার্থে অতিথিশালাও তৈরি করা হয়েছে। পর্যটনকেন্দ্রটিতে রেস্তোরাঁর পাশাপাশি স্মারক উপহার  বিক্রয়কেন্দ্রও রয়েছে।

রাজধানী ঢাকা থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার বারদীর চৌধুরীপাড়ায় জ্যোতি বসুর যে পৈতৃক বাড়ি রয়েছে তা আসলে তাঁর দাদুর বাড়ি। জ্যোতি বসুর দাদু শর‍ৎ চন্দ্র দাস এলাকায় বর্ধিষ্ণু ও প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাঁর একমাত্র মেয়ে হেমলতার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল প্রখ্যাত হোমিওপ্যাথিক চিকি‍ৎসক নিশিকান্ত বসুর।

বিয়ের সুবাদে বারদীর চৌধুরীপাড়ায় শ্বশুরবাড়ির মালিক হন তিনি। তবে কলকাতাতেই পসার জমিয়েছিলেন নিশিকান্ত। জ্যোতি বসুর জন্মও কলকাতার হ্যারিসন রোডে। তবে ছুটি পেলেই সপরিবার বারদীর চৌধুরীপাড়ায় ছুটি কাটাতে আসতেন চিকি‍ৎসক নিশিকান্ত। সেই সুবাদেই বারদীর লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আশ্রম-সহ চৌধুরীপাড়ায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে জ্যোতি বসুর ছোটোবেলার স্মৃতি।

১৯৯৭ সালের ১১ নভেম্বর শেষ বার বারদীর পৈতৃক ভিটেতে এসেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী। লোকনাথ মন্দিরে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়েছিলেন তিনি।

২০১০-এর ১৭ জানুয়ারি প্রয়াত হন বসু। তার পরের মাসেই পৈতৃক ভিটেয় পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করেছিলেন বাংলাদেশের  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয় নির্মাণকাজ। গত বছরের ডিসেম্বরে নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়।

পর্যটনকেন্দ্রটি গড়ে তুলতে প্রায় ২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। নতুন দোতলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। রাত কাটানোর জন্য শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষ, রেস্তোরাঁ, স্যুভেনির শপ রয়েছে। দলবেঁধে বনভোজন করার জন্য বিশেষ ছাউনিও নির্মাণ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *