চণ্ডীগড় থেকে মানালি যাওয়ার পথে একরাত থাকুন বিলাসপুরে, কেন?

ভ্রমণ অনলাইনডেস্ক: বিলাসপুর বলতে বেশির ভাগ মানুষই ছত্তীসগঢ়ের শহরটার কথাই জানেন। কিন্তু হিমাচল প্রদেশেও এক বিলাসপুর রয়েছে। পর্যটকদের কাছে এখন তার সে ভাবে পরিচিতি না থাকলেও পর্যটন-রসদে এটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ বটে।

মানালি-চণ্ডীগড় রুটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শহর এই বিলাসপুর। বিলাসপুরের খ্যাতি এক সুবিশাল হ্রদকে ঘিরে। শতদ্রু নদীতে বাঁধ দিয়ে তৈরি হওয়া এই জলাধারের নাম গোবিন্দ সাগর হ্রদ।

হ্রদের মধ্যে থেকে কয়েকটি মন্দিরের চুড়ো বেরিয়ে রয়েছে। এই মন্দিরের চুড়োর ইতিবৃত্ত জানার জন্য ফিরে যেতে হবে ইতিহাসের পাতায়। ওটাই হল আদি বিলাসপুর। নব বিলাসপুরের বয়স মেরেকেটে ৭০ বছর। কিন্তু আদি বিলাসপুরের বয়স সাড়ে তিনশোরও বেশি।

১৬৬৫ সালে বিলাসপুর শহরের পত্তন হওয়ার পরে এই সব মন্দির তৈরি হয়েছিল। মূলত নাগর শৈলীর মন্দির। কিন্তু ১৯৫৪ সালে শতদ্রুর ওপরে তৈরি হয় ভাকরা নাঙ্গল জলাধার। তৈরি হয় এই কৃত্রিম হ্রদ গোবিন্দ সাগর। সেই হ্রদের জলেই ডুবে যায় আদি বিলাসপুর শহর।

শহরের বাসিন্দাদের জন্য নতুন বিলাসপুর তৈরি হলেও, মন্দিরগুলোকে তো আর স্থানান্তরিত করা যায়নি। সেগুলি জলের তলাতেই থেকে যায়। ইতিহাসবিদদের মতে, ডুবে যাওয়ার আগে তিরিশটা মন্দির ছিল। এখন পাঁচ-ছ’টা মন্দিরের চুড়ো দেখা যায়।

গরম কালে যখন হ্রদের জল বেশ কমে যায়, তখন মন্দিরগুলি জল থেকে উঠে আসে। তখন হেঁটে হেঁটে ওই মন্দির দর্শন করা যায়। এখন অবশ্য বোটিং-এর মাধ্যমে মন্দির দর্শন করানো হয়।

বিলাসপুরে থেকেই আরও একটা জায়গা ঘুরে নিতে পারেন। অনতিদূরের বান্ডলা হিল টপ। শহর ছাড়ালেই সরু রাস্তা ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। ঘণ্টাখানেকের ঊর্ধ্বমুখী যাত্রার পর পৌঁছোবেন হিলটপে। সমুদ্রতল থেকে আমরা এখন সাড়ে চার হাজার ফুটের কিছু বেশি উচ্চতায়।

এখানে বন দফতরের একটি অতিথি নিবাস রয়েছে। সেটাকে পাশে রেখে আরও রাস্তা উঠেছে হিলটপের দিকে। বেশ কিছুটা চড়াই ভাঙার পর, এল এক অসাধারণ ভিউ পয়েন্ট। এখান থেকে গোটা বিলাসপুর শহর এবং গোবিন্দ সাগর হ্রদকে অসাধারণ দেখায়। দূরে মেঘের আড়াল থেকে উঁকি মারার চেষ্টা করে ধৌলাধারের বরফমাখা চুড়োগুলো। সব মিলিয়ে বিলাসপুরে একটা দিন কাটালে আপনাদের অসাধারণ লাগবেই।

কী ভাবে যাবেন

চণ্ডীগড়-মানালি সড়কে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই বিলাসপুর শহর। মানালি থেকে চণ্ডীগড় বা চণ্ডীগড় থেকে মানালি যাওয়ার পথে এক রাত কাটিয়ে দিন এই শহরে। হাওড়া থেকে কালকা মেলে চণ্ডীগড় পৌঁছোন। চণ্ডীগড় থেকে বিলাসপুরের দূরত্ব ১২৫ কিমি। বাস যাচ্ছে নিয়মিত।

কোথায় থাকবেন

জায়গার অবস্থান অনুযায়ী বিলাসপুরে সব থেকে ভালো থাকার জায়গাটি হল হিমাচল পর্যটনের লেক ভিউ হোটেল। হোটেলটির সব ঘরই হ্রদমুখী। অনলাইনে বুক করার জন্য লগইন করুন www.hptdc.in। এ ছাড়াও শহর জুড়ে রয়েছে বেশ কিছু বেসরকারি হোটেল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *