ভ্রমণ অনলাইনডেস্ক: রাজস্থানের ছত্রে ছত্রে ছড়িয়ে রয়েছে নানা রকম দুর্গ এবং প্রাসাদ। এমনই এক দুর্গ, অম্বর। জয়পুরের কাছে অবস্থিত এই দুর্গ, আমের নামেও পরিচিত। নিখুঁত কারুকার্য এবং ঐতিহ্যমণ্ডিত এই দুর্গ নানা রকম ইতিহাসের সাক্ষী।
১৫৯২ সালে কাছওয়াহা বংশের রাজা মান সিংহ এই দুর্গ তৈরি করেন। তখন তাদের রাজধানী ছিল অম্বর। তাঁর ছেলে প্রথম জয় সিংহ এই দুর্গ প্রসারিত করেন। ১৭২৭ সালে সোয়াই জয় সিংহ কাছওয়াহাদের রাজধানী অম্বর থেকে জয়পুরে স্থানান্তরিত করেন।
দুর্গের স্থাপত্য চোখে পড়ার মতো। সেখানে রয়েছে নিখুঁত করে সাজানো বাগান। দুর্গের ঠিক পাশেই রয়েছে মাওতা হ্রদ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের টানে ওই হ্রদের ধারে দীর্ঘ সময় কাটাতে দেখা যায় পর্যটকদের। হ্রদের ঠিক মাঝখানে রয়েছে ‘কেশর কিয়ারি বাগ’।

দুর্গের ভিতর রয়েছে শিশমহল। হাজারের বেশি রঙিন কাচ দিয়ে তৈরি এই শিশমহল। তাতে রোদ পড়লে চোখে ধাঁধা লেগে যায়। এই মহলের মধ্যে একটি স্তম্ভে এমন ভাবে নকশা খোদাই করা রয়েছে যে, এক এক দিক থেকে নকশা এক এক রকমের মনে হয়। কখনও দুই প্রজাপতির মাঝে একটি ফুল, কখনও মাছের লেজ, কখনও পদ্ম বা কখনও সিংহের লেজে লুকিয়ে থাকা গোখরো আবার কখনও হাতির শূঁড় বলে ভ্রম হয়।
অম্বর দুর্গের মোট চারটি ভাগ রয়েছে। প্রত্যেক দিকেই বিশাল ফটক রয়েছে। তার মাথায় লেখা রয়েছে দুর্গের ইতিহাস। সূর্যস্তম্ভের দিক হয়ে উদ্যানে যাওয়া যায়। একসময় সৈন্যরা সেখানে কুচকাওয়াজ করতেন।

দুর্গের সর্বত্র দেওয়ালে সূক্ষ্ম নকশা এবং কারুকার্য চোখে পড়ে। মূল ফটকটিও রাজকীয় কারুকার্য সমৃদ্ধ। অম্বর দুর্গের মধ্যে গোপন সুড়ঙ্গও রয়েছে। তার মধ্যে দিয়ে হেঁটে জয়গড় দুর্গে পৌঁছনো যায়। ২ কিলোমিটার লম্বা এই সুড়ঙ্গ। শত্রুপক্ষ হামলা করলে এই সুড়ঙ্গ দিয়েই পালানোর ব্যবস্থা ছিল।
অম্বর দুর্গের বিশালত্বকে মাত্র কয়েকটা লাইনে সীমাবদ্ধ করে রাখা সম্ভব নয়। এমন ঐতিহাসিক দুর্গ জীবনে অন্তত একবার চাক্ষুস করতেই হবে।
কোথায় এই দুর্গ
রাজস্থানের রাজধানী জয়পুর থেকে ১৩ কিমি দূরে এই দুর্গ জয়পুর বেড়াতে গেলে দেখে নেওয়া যায়।