ভ্রমণ অনলাইনডেস্ক: সেনার তৎপরতায় উত্তরাংশ বাদে সিকিমের বাকি অংশ দ্রুত স্বাভাবিক হওয়ার পথে। পর্যটকরাও নিরাপদে আছেন বলে পরিষ্কার জানানো হয়েছে প্রশাসন এবং সেনার তরফ থেকে। ঠিক সেই কারণেই রাজ্যের অধিকাংশ এলাকা থেকে ভ্রমণের ওপরে নিষেধাজ্ঞাও তুলে দিয়েছে প্রশাসন।
যে যে জায়গায় যাওয়া যাবে
ভয়াবহ বিপর্যয়ের পর সিকিম সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছিল যে আপাতত কয়েক দিন সিকিমমুখো না হওয়াই বাঞ্ছনীয় পর্যটকদের। কিন্তু পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় শুক্রবার সেই নির্দেশিকায় কিছুটা বদল আনা হয়েছে। তারা জানিয়ে দিয়েছে দক্ষিণ এবং পশ্চিম সিকিম যেতে কোনো বাধা নেই পর্যটকদের।
তবে উত্তর সিকিমের পরিস্থিতি এখনো উদ্বেগজনক। কারণ সড়কপথে যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। তাই কবে উত্তর সিকিম যাওয়া যাবে, সে বিষয় কিছু জানানো হয়নি। অন্য দিকে, পূর্ব সিকিমের ব্যাপারে কোনো নির্দেশিকা না থাকলেও আশা করা যাচ্ছে আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ায় দ্রুত সিল্করুট, নাথু লা এবং ছাঙ্গু অঞ্চলেও যেতে পারবেন পর্যটকরা।
বিকল্প পথ
কথাতেই আছে, একটা দরজা যদি বন্ধ হয়ে যায় তো নতুন পাঁচটা দরজা খুলে যায়। সিকিমের ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে। শিলিগুড়ি-সিকিমের সংযোগকারী মূল রাস্তা অর্থাৎ জাতীয় সড়ক ১০ একাধিক জায়গায় কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। কবে সেই রাস্তা ঠিক হবে কেউ জানে না। এই পরিস্থিতিতে একাধিক বিকল্প পথ ঘোষণা করে দিয়েছে প্রশাসন।
যে সব ভারী গাড়ি শিলিগুড়ি থেকে গ্যাংটকের দিকে যাবে, তাদের জন্য রুট: শিলিগুড়ি-গজোলডোবা-ডামডিম-গোরুবাথান-লাভা-আলগারা-পেডং-রেশি চেকপোস্ট-রোরাথাং-প্যাকিয়ং-গ্যাংটক।
যে সব হালকা গাড়ি শিলিগুড়ি থেকে গ্যাংটকের দিকে যাবে, তাদের জন্য রুট: শিলিগুড়ি-সেবক-করোনেশন ব্রিজ- ডামডিম-গোরুবাথান-লাভা-রামধুরা-মানসং-রোংপো-সিংটাম-গ্যাংটক।
যে সব গাড়ি শিলিগুড়ি থেকে পেলিং এবং রাবাংলা যাবে, তাদের জন্য রুট: শিলিগুড়ি-দার্জিলিং-জোড়থাং-নয়াবাজার-গেজিং-পেলিং
উত্তর সিকিমে সবাই নিরাপদে
ভয়াবহ বিপর্যয়ের পর উত্তর সিকিমের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। লাচুং-লাচেনে কোনো নেটওয়ার্ক নেই। নেই বিদ্যুতও। তাই পর্যটকদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে প্রশাসনের তরফে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে পর্যটকরা সবাই নিরাপদে রয়েছেন এবং তাঁদের কাছে খাবারও পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে সেনার তরফ থেকে।
তবে উত্তর সিকিম থেকে পর্যটকদের উদ্ধার করে আনা সড়কপথে সম্ভব নয়। ভরসা আকাশপথই। প্রশাসন জানিয়েছে, আবহাওয়ার পরিস্থিতি ভালো হয়ে গেলেই এয়ারলিফট করার কাজ শুরু হয়ে যাবে। ধাপে ধাপে পর্যটক, হোটেল ব্যবসায়ী এবং গাড়ির চালকদের উদ্ধার করে গ্যাংটকে নিয়ে আসা হবে।
উল্লেখ্য, সিকিমের পরিস্থিতি খারাপ হলেও সেনা, প্রশাসন, স্থানীয় মানুষদের প্রচেষ্টায় রাজ্যটা দুর্যোগের বিরুদ্ধে লড়ছে। পর্যটকদের দুর্দশা সংক্রান্ত কিছু খবর যে ভাবে বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, বাস্তব পরিস্থিতি ততটাও খারাপ নয়।