ভ্রমণ অনলাইনডেস্ক: ফেসবুকে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা ভ্রমণ সংক্রান্ত গ্রুপগুলোতে ক্রমাগত ভ্রান্তিমূলক তথ্য পেশ করা হচ্ছে। এর প্রভাবে পুজোর উত্তরবঙ্গ ভ্রমণের বুকিং বাতিল করার কথা সক্রিয় ভাবে ভাবছেন মানুষজন। বুকিং বাতিল করার কথা উঠতে রীতিমতো ধন্দে পড়ে গিয়েছেন ভ্রমণ ব্যবসায়ীরা।
সিকিমের ভয়াবহ বিপর্যয়ের কারণে দার্জিলিং, কালিম্পং তো বটেই এমনকি ডুয়ার্স ভ্রমণ বাতিল করার অনুরোধ নিয়ে ফোন আসছে ট্যুর অপারেটরদের কাছে। পর্যটকদের ভালো করে বোঝানো হচ্ছে আসল পরিস্থিতির কথা। তবে ভালো করে বুঝিয়ে দেওয়ার পর অধিকাংশ পর্যটকই সঠিক পরিস্থিতিটা বুঝতে পারছেন বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
ভ্রমণ ব্যবসায়ী বিনায়ক আবীর চৌধুরীর কাছে ডুয়ার্স ট্রিপ বাতিল করার আবেদন করে ফোন করেছিলেন তাঁর গেস্টরা। অন্য দিকে, তিস্তা মজুমদার বলেন, “মানুষজন নাকি শুনেছেন যে এ বছরে আর ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক খুলবে না। সে কারণে আমার কাছে শীতের বুকিং বাতিল করার অনুরোধ এসেছে।”
শিলিগুড়ির ভ্রমণ ব্যবসায়ী সুজিত চন্দ তো সাফ বলেই দিয়েছেন, “সকলের উদ্দেশে জানাচ্ছি যে আমার বাড়ি শিলিগুড়িতে। শিলিগুড়ি, ডুয়ার্স দার্জিলিং-এ বন্যা হয়নি। দয়া করে সিকিমের কারণে দার্জিলিং বা ডুয়ার্স বা কালিম্পং লাভা এ সবের প্ল্যান বাতিল করবেন না। পুজোর কটাদিনের জন্য সবাই আশা করে থাকে।। হোটেল, গাড়ি, খাবার হোটেল সাইটসিয়িং স্পটের দোকানদার থেকে শুরু করে সকলে, একটা ট্যুরের উপর প্রত্যক্ষ ভাবে ৯-১০ জন মানুষের পরিবার নির্ভরশীল থাকে।”
এমনই সব ভ্রান্তিমূলক মন্তব্য ভেসে আসছে ফেসবুকের গ্রুপগুলোতে
আসলে এই সমস্যাটা তৈরি হচ্ছে ফেসবুকের ভ্রমণ সংক্রান্ত গ্রুপগুলোর কারণে। সেখানে কেউ একজন কিছু প্রশ্ন করলেই অন্য সদস্যরা কমেন্ট করতে আসছেন। যাঁরা কমেন্ট করছেন তাঁরা বাস্তব পরিস্থিতিটা জানেনই না। বেশির ভাগ কমেন্টেই নেতিবাচক। এতে ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হচ্ছে পর্যটকদের মধ্যে।
অথচ ভ্রমণ গ্রুপগুলোতে করা মন্তব্যের সঙ্গে বাস্তব পরিস্থিতির মিল যে নেই সেটা প্রশাসনিক নির্দেশেই বোঝা যায়। উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে শুধুমাত্র উত্তর সিকিম অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে। এ ছাড়া সিকিমের কোনো প্রান্তেই ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা নেই। সিকিম সরকার সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে দক্ষিণ এবং পশ্চিম সিকিমে যেতে কোনো অসুবিধা নেই পর্যটকদের। তবে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ থাকায় এখনো ঘুরপথে গ্যাংটক এবং পূর্ব সিকিম যেতে হচ্ছে।
তবে সিকিমের লাইফলাইন হিসেবে পরিচিত ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক মেরামতির কাজ খুব দ্রুত চলছে। তিন-চার দিনের মধ্যেই এই রাস্তা খুলে দেওয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে।