বাসে ঘোরা, বাসেই থাকা-খাওয়া, কর্নাটকে চালু হল ‘ক্যারাভ্যান পর্যটন’

ভ্রমণ অনলাইন ডেস্ক: করোনাভাইরাস জনিত পরিস্থিতিতে লকডাউনের জেরে জোর ধাক্কা খেয়েছে অর্থনীতি। আর এর মধ্যে সব চেয়ে দুরবস্থা পর্যটনশিল্পের। মানুষ তো ঘরবন্দি। বেড়াতে যাবে কে? লকডাউনের মধ্যেই আনলক পর্ব শুরু হতেই কড়াকড়ি অনেক শিথিল হয়েছে। এখন বিভিন্ন রাজ্য তাদের মতো করে পর্যটনশিল্পকে চাঙ্গা করার চেষ্টা করছে। এরই অঙ্গ হিসাবে কর্নাটক চালু করল ‘ক্যারাভ্যান পর্যটন’।

পশ্চিমি বিশ্বে ‘ক্যারাভ্যান পর্যটন’ বেশ জনপ্রিয়। তবে আমাদের ভারতে এর বিশেষ চল নেই। এ ব্যাপারে কর্নাটককে পথিকৃৎ বলা যায়। পর্যটকরা পুরোপুরি স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি গাড়ি ভাড়া করে কর্নাটকের দ্রষ্টব্য স্থানগুলি ঘুরতে পারবেন এবং রাতে থাকার ব্যবস্থা থাকবে সেই গাড়িতেই।

বাসের অন্দরসজ্জা।

সম্প্রতি বেঙ্গালুরুতে ‘ক্যারাভান পর্যটন’-এর উদ্বোধন করেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদিউরাপ্পা। ‘ক্যারাভ্যান পর্যটন’-এর অঙ্গ হিসাবে চালু হয় চালু হয় ক্যারাভ্যান বাস।

‘ক্যাম্পারভ্যান ক্যাম্পস’ নামে একটি কোম্পানি এই পরিষেবা দিচ্ছে। ওদের ওয়েবসাইট  https://www.luxecamper.com/  -এ গিয়ে প্যাকেজ বুক করতে হবে। ‘ক্যাম্পারভ্যান ক্যাম্পস’-এর নিজস্ব প্যাকেজ আছে অথবা চাইলে পর্যটকরা নিজেদের মতো করে প্যাকেজ তৈরি করে তা বুক করতে পারেন।

অন্য দিকে সরকার বিভিন্ন পর্যটনস্থল এবং কর্নাটক পর্যটন উন্নয়ন নিগমের (কেএসটিডিসি) হোটেলে ক্যারাভ্যান বাস পার্কিং করার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। সরকার মনে করে, ‘ক্যারাভ্যান পর্যটন’ চালু হলে রাজ্যের পর্যটনশিল্প ঘুরে দাঁড়াবে এবং নতুন নতুন উন্নয়ন কর্মসূচি তৈরি হবে।

বাসের অন্দরসজ্জা।

প্রতিটি ক্যারাভ্যানে সর্বাধিক চার জন করে ভ্রমণ করতে পারবেন। চার জনের বসার ও শোয়ার ব্যবস্থা আছে। তার সঙ্গে রয়েছে শাওয়ার-সহ সব রকমের আধুনিক সুবিধা যুক্ত টয়লেট, টেলিভিশন, মিউজিক সিস্টেম এবং রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার ও মাইক্রোওভেন সহ একটি কিচেনেট (ছোটো রান্নাঘর)।

এই ক্যারাভ্যান বাস। সৌরশক্তি চালিত এবং বাসের ছাদে ১৪০০ ওয়াটের সৌর প্যানেল রয়েছে। বাসকে গরম ও ঠান্ডা করার জন্য সৌরশক্তিই ব্যবহার করা হয়।

কর্নাটক সরকার প্রথম পর্যায়ে হাম্পি, গোকর্ণ, বাদামি, কুদ্রেমুখ, সকলেশপুরা, বেলুর, হালেবিডু, সক্রেবাইলে এবং কোডাগুকে (কুর্গ) ‘ক্যারাভ্যান পর্যটন’-এর আওতায় রেখেছেন।       

ক্যারাভ্যান বাসের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাধীন পর্যটনকে বিকশিত করার ক্ষেত্রে এই নতুন ধরনের উদ্যোগ দিশা দেখাবে। আর এতে শারীরিক দুরত্ব এবং ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যের মতো জরুরি বিষয়গুলি সুনিশ্চিত হবে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কর্নাটকের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিএসডিপি) ১৪ শতাংশ আসে পর্যটন শিল্প থেকে। কোভিড ১৯-এর সংক্রমণ পর্যটন শিল্পে বড়ো আঘাত হেনেছে। পর্যটন ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ ১৫ হাজার কোটি টাকা। এই শিল্পকে চাঙ্গা করার জন্য পদক্ষেপ করছি আমরা। রাজ্যের ২০টি পর্যটন কেন্দ্রকে উন্নত করার পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *