ভ্রমণ অনলাইনডেস্ক: পরিবেশবান্ধব পরিবহণ হিসেবে ট্রামের বিকল্প এখনও খুঁজে মেলা ভার। সেই ট্রামকেই এখন কলকাতার রাস্তা থেকে প্রায় তুলে দেওয়ারই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য পরিবহণ দফতর। তবে স্মৃতি বজায় রাখার জন্য মাত্র চারটে রুটে ট্রাম চালানো হবে।
পরিবহণ দফতর ও কলকাতা পুলিশ ইতিমধ্যেই শহরের দুঘর্টনা কমাতে চারটি বাদে সব ট্রাম-পথ পিচ দিয়ে ঢেকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তা-ও এই চারটি রুটে ট্রাম চলবে স্রেফ স্মারক হিসেবে।
উল্লেখ্য, মেট্রো রেলের কাজের জন্য বিবাদী বাগ-কেন্দ্রিক সব ট্রাম রুট বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন বলা হয়েছিল, কাজ শেষ হলে আবার ট্রাম চলবে। শিয়ালদহ ও বেলগাছিয়া ফ্লাইওভারের স্বাস্থ্যের কারণে ট্রাম বন্ধ করার সময়েও সেই প্রতিশ্রুতি ছিল।
এখন অবশ্য পুলিশ প্রশাসন বলেই দিচ্ছে, এই শহর ট্রাম চলাচলের অনুপযুক্ত। পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর কথায়, “পুলিশের মতে ট্রাম শহরে যানজটের কারণ। অব্যবহৃত ট্রামলাইন শহরের পথদুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ক’ দিন আগেই বেলগাছিয়ায় ট্রামের ট্রাকে বাইক নিয়ে পড়ে এক পুলিশকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে ট্রাম-পথ পিচ দিয়ে ঢেকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত।”
মেট্রো যে ভাবে মহানগরে ডালপালা মেলছে, তাতে কি ট্রামের স্মৃতিটুকুও আর থাকবে এই শহরের বুকে? পরিবহণমন্ত্রীর কথায়, “কলকাতার স্মারক হিসেবে চারটি রুটে ট্রাম চালানো হবে। বর্তমানে ধর্মতলা-গড়িয়াহাট এবং বালিগঞ্জ-টালিগঞ্জ রুটে ট্রাম চলছে। আরও দু’টি নতুন রুট যুক্ত হবে — ধর্মতলা-খিদিরপুর এবং ধর্মতলা-শ্যামবাজার।”
এর মধ্যে ধর্মতলা-খিদিরপুর রুটটি হেরিটেজ রুট। এখান দিয়েই ১৯০২ সালের ২৭ মার্চ কলকাতায় প্রথম বিদ্যুৎচালিত ট্রাম পরিষেবার সূচনা হয়। গড়ের মাঠের উপর দিয়ে এই রুটে ট্রামে ঘোরা ছিল এক আলাদা রোম্যান্টিসিজম।
তবে এ ছাড়া সুখবরও কিছু আছে। বিদেশি পর্যটকদের কাছে কলকাতাকে আকর্ষণীয় করতে ধর্মতলা থেকে ভিক্টোরিয়া পর্যন্ত ট্রাম চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভিক্টোরিয়ার সামনে তৈরি হচ্ছে ট্রামের জন্য ট্যুরিস্ট প্ল্যাটফর্ম। এক কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে অর্থ দফতর। পরে খিদিরপুর পর্যন্ত এই ট্রাম যাবে।