পর্ব ৪
বাংলায় তখন মাঘ মাস। ১৭৪৫ সাল। বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার নবাব আলীবর্দী খানের সৈন্যরা হঠাৎ বিদ্রোহ করে বসলেন। সেই সুযোগে চতুর্থবারের মতো বর্গিরা বাংলায় এলো। বাংলার বুকে ত্রাহি ত্রাহি রব। সেই আক্রমণ এসে পড়ল বীরভূম জেলায়। ঘোড়ায় চড়ে বর্গিরা লুঠপাঠ চালালেন বীরভূমে গ্রামের পর গ্রাম। ভাস্কর পন্ডিতের নেতৃত্বে সব গ্রাম তখন বর্গি হানার শিকার। লুঠেরাদের অত্যাচারে বর্ধিষ্ণু গ্রাম উজাড় হয়ে গেছে। অজয় নদের পাড়ে শৈব তীর্থ সুপুর জনপদে বর্গি সৈন্য লুঠ চালাতে এলো। রুখে দাঁড়ালেন এক বৈষ্ণব গোঁসাই। আনন্দ চাঁদ গোস্বামী বর্গিদের বিরূদ্ধে দাঁড়াতেই লুঠেরার দল সুপুর ছেড়ে পালাল। আনন্দ চাঁদ গোস্বামী বর্গি হানা রুখতে গ্রামের চারদিকে খাল কেটে পরিখা গড়েছিলেন। এমনই গৌরবময় ইতিহাস সুপুরের।
মার্কণ্ডেয় পুরাণ মতে রাজা সুরথের রাজধানী ছিল সুপুর। সুরথের নাম অনুসারে এখানকার বিখ্যাত মন্দির সুরথেশ্বর শিব মন্দির।

সুপুর গ্রাম ও সুরথেশ্বর মন্দির:
বোলপুরের নিকটে সুপুরে রাজা সুরথ পূজিত সুরথেশ্বর শিব। বোলপুর ইলামবাজার রাস্তার ওপর মন্দিরটি। সুপুরের জোড়া শিব মন্দিরও খুবই জনপ্রিয়। বাংলার এই সুরথেশ্বর মন্দিরে বহু মানুষের সমাগম হয়। ফাল্গুন মাসে শিবরাত্রি পালিত হয় মহাসমারোহে। বিভিন্ন জেলা থেকে বহু ভক্তের আগমন ঘটে।
কিভাবে যাবেন:
হাওড়া ও শিয়ালদা থেকে ট্রেনে বোলপুর স্টেশন। সেখান থেকে টোটো বুক করে ঘুরে নিন সুপুর গ্রাম ও সুরথেশ্বর মন্দির। শহর থেকে দূরে ঘুরে আসার একেবারে আদর্শ জায়গা।
(চলবে)