পিন্দারে পলাশের বন
পালাবো পালাবো মন
বসন্তের শুরুতে বছরের প্রথম পলাশ দর্শনে আপনার গন্তব্য হতে পারে পুরুলিয়ার দর্শনীয় স্থান গুলো। বসন্ত এসে গেলো। নতুন সাজে প্রকৃতি সেজে উঠেছে। প্রকৃতি জুড়ে দু হাত ভরে এখন পলাশের সময়। সেই সান্নিধ্যে কাটিয়ে আসুন কয়েকটা দিন।
লাল, হলুদ, কমলা, বিরল শ্বেতপলাশে মন মাতবে আপনার। এখানে প্রকৃতি রঙে রঙে সেজে ওঠে। পুরুলিয়ার আদিবাসী মানুষেরা এই ফুলকে ট্যাশ ফুল বলে। গাছ থেকে টুপ টাপ পরে ফুল। নিচ গুলো রঙিন ক্যানভাসের মত হয়ে থাকে। ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ অবদি পুরুলিয়ায় পলাশ দেখার আদর্শ সময়।

জানেন কি?
পলাশ ফুল ক্যান্সারের ওষুধ তৈরিতেও ব্যবহার করা হয়। শ্বেত পলাশ একমাত্র পুরুলিয়ায় পাওয়া যায়। যা এক কথায় বিরল। শ্বেতপলাশ ক্যান্সারের ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার হয়। পলাশ পাতার রসে ডায়াবেটিস সারে।
কোথায় কোথায় যাবেন:
অযোধ্যা পাহাড়
পর্যটকদের অন্যতম এক আকর্ষণ পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়। অযোধ্যা পাহাড়ের সঙ্গেই এখানকার অন্যান্য আকর্ষণ ছৌ-গ্রাম, বামনি ফলস, ময়ূর পাহাড়, জয়চন্ডী পাহাড়ের মতো জায়গা। পলাশে রঙিন উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। মনে আসে, ‘রাঙিয়ে দিয়ে যাও’।
বান্দা দেউল
পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে এএসআই এর সংরক্ষিত একটি দেউল মন্দির। বান্দা দেউলকে ঘিরে ফুলের আগুন লাগে। চারিদিক গাছের শাখায় শাখায় শুধুই পলাশ।
ঝালদা
শাল, শিমূল, পলাশ নিয়ে রাঙ্গামাটির দেশ। পুরুলিয়া স্টেশন থেকে বেশ কয়েকটি পর ঝালদা স্টেশন। পুরুলিয়া থেকে গাড়িতেও যাওয়া যায়। পথে দু’ধারে শুধুই পলাশের বন। যেন নিপুণ চিত্রকরের এক ছবির মতন।
পঞ্চকোট পাহাড়ে গড় পঞ্চকোট
একদা শেখর রাজবংশের রাজধানী। শিখরভূমের পঞ্চকোট। অতীতে পরিখা দিয়ে ঘেরা দুর্গ গড়ে ওঠে। শেখর বংশে দামোদর শেখর ছিলেন প্রথম রাজা। তোরণদুয়ার, রানী মহল, প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ, টেরাকোটার পঞ্চরত্ন দেউল, জোড়বাংলা, পঞ্চরত্ন রাসমঞ্চ দিয়ে জায়গাটি ঘেরা। জায়গাটিতে প্রচুর পলাশ ফুল ফোটে।

বরন্তি
সূর্যাস্তের সময় এককথায় মনমুগ্ধকর বরন্তির প্রকৃতি। জায়গাটি যেন পলাশ ভূমি। পলাশ এখানকার এক বিশেষ আকর্ষণ। আপনার মনে রাঙা নেশা লেগে যাবে। দুদিকে পাহাড়, জঙ্গল ও লেক নিয়ে বরন্তি।
কোথায় থাকবেন:
কম খরচে থাকতে ইয়ুথ হোস্টেল পাবেন। অযোধ্যা পাহাড়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের। রঘুনাথপুর সংলগ্ন জায়গায় প্রচুর বেসরকারি হোটেল পাওয়া যায়।
কিভাবে যাবেন:
হাওড়া থেকে ট্রেনে চক্রধরপুর, পুরুলিয়া সুপারফাস্ট, রূপসী বাংলা এক্সপ্রেসে চলে আসুন পুরুলিয়া রেলস্টেশন। সেখান থেকে গাড়ি বুকিং করে দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে নিন। এছাড়াও আদ্রা স্টেশনে নেমে সেখান থেকে মুরাডি স্টেশন হয়ে জায়গাগুলো দেখে নিতে পারেন।