জি-২০: পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে থাকুক পর্যটকবান্ধব পুলিশ, রাজ্যগুলিকে আবেদন কেন্দ্রের

ভ্রমণ অনলাইনডেস্ক: এ বছর ভারতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির সম্মেলন। আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে শুরু হয়ে ২০২৪-এর নভেম্বর পর্যন্ত চলবে এই গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির কূটনৈতিক পর্যায়ের নানান বৈঠক।

এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে পর্যটনেও জোয়ার আসতে চলেছে দেশে। কারণ দেশবিদেশের অনেক পর্যটক ভারতে আসবেন। কেন্দ্রীয় সরকার তাই চাইছে পর্যটকেরা যাতে নির্বিঘ্নে ভ্রমণ করতে পারেন সে জন্য গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে আলাদা করে পর্যটক-পুলিশের ব্যবস্থা করা হোক।

এই ব্যাপারে কেন্দ্রের পর্যটন মন্ত্রক একটি পরিকল্পনা তৈরি করেছে। গত সপ্তাহে তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে সেই পরিকল্পনা জমা দিয়ে বলেছে, অবিলম্বে রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে এই বিষয়ে আলাপ আলোচনা সেরে নিতে।

প্রসঙ্গত, গত ১ ডিসেম্বর থেকে জি-২০ দেশগুলির সভাপতিত্বের ভার পেয়েছে ভারত। এই পর্বে ভারতে অনুষ্ঠিত হবে এই আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মঞ্চের একাধিক অনুষ্ঠান।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, গ্রেট ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, রাশিয়া চিন সহ জি-২০ দেশের রাষ্ট্রনায়কেরা তো বটেই, সেই সব দেশের বহু নাগরিক আগামী এক বছর ভারত ভ্রমণ করবেন। এ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ইচ্ছায় জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত নয় এমন কয়েকটি রাষ্ট্রকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, কলকাতার মতো বড়ো শহর তো বটেই, দার্জিলিং, শিলং, সিমলা, শিলিগুড়ির মতো ছোটো শহর মিলিয়ে দেশের ৫৫টি শহরে অনুষ্ঠিত হবে জি-২০ সংক্রান্ত নানা অনুষ্ঠান। তার মধ্যে যেমন কূটনৈতিক পর্যায়ে আলাপ আলোচনা আছে, তেমনি অনুষ্ঠিত হবে অসংখ্য সাংস্কৃতিক এবং বাণিজ্যিক সম্মেলন। ওই সব দেশ থেকে পর্যটকদের আনাগোনা তখন বেড়ে যাবে। বিদেশি পর্যটকদের দেশের দ্রষ্টব্য স্থানগুলিতে নিয়ে যাওয়া হবে।

পর্যটন মন্ত্রক মনে করছে, এই জি -২০ সম্মেলন ভারতের পর্যটনস্থানগুলির মর্যাদা, গুরুত্ব, ভাবমূর্তি বৃদ্ধির একটা বড়ো সুযোগ এনে দিয়েছে। তারা মনে করছে এখন হোটেল এবং অন্যান্য পরিষেবার মান যথেষ্ট উন্নত। কিন্তু এখনও পর্যটকদের নানা ভাবে প্রতারণার শিকার হতে হয়।

এ ছাড়াও পরিষেবামূলক নানান সুবিধা পেতেও সমস্যায় পড়তে হয় তাদের। বিমানবন্দর, রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ডে প্রতারকরা খুবই সক্রিয়। থানা পুলিশ করেও রেহাই মেলে না। গত বছর বিদেশি পর্যটকদের উপর ৭৩টি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে।

পর্যটন মন্ত্রক তাই মনে করছে, গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনকেন্দ্রগুলির জন্য পৃথক পুলিশবাহিনী থাকুক। তাদের আলাদা ইউনিফর্ম থাকবে, যাতে কোনো পর্যটক সমস্যায় পড়লে দ্রুত তাদের সহায়তা পেতে পারেন। সঙ্গে সঙ্গে সুরাহা হয় সমস্যার।

এখন দেশে বেশ কয়েকটি রাজ্যে পর্যটক পুলিশ আছে। তার মধ্যে অন্যতম হল কেরল, কর্ণাটক, অন্ধপ্রদেশ, পাঞ্জাব, মহারাষ্ট্র ইত্যাদি। কেন্দ্র এখন চাইছে গোটা দেশেই পর্যটন পুলিশকে আলাদা একটা বাহিনী হিসাবে তৈরি করা হোক। সেজন্যই অবিলম্বে রাজ্যগুলির সঙ্গে কথা বলে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে বলেছে পর্যটন মন্ত্রক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *